পল্লবীতে বাসচাপায় কোলে থাকা ভাতিজাসহ ফুফু নিহত

সড়ক দুর্ঘটনাপ্রতীকী ছবি

পোশাকশ্রমিক খায়রুন বেগম (৩৫) তাঁর ভাতিজা ইয়াসিনকে (৪) কোলে নিয়ে রাস্তা পার হচ্ছিলেন। শিশুটির মা ঝরনা বেগম সঙ্গে ছিলেন। বেপরোয়া গতির একটি বাস চাপা দিলে ভাতিজাসহ খায়রুন নিহত হন।

ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল মঙ্গলবার রাতে, রাজধানীর পল্লবীর পূরবী সিনেমা হলের সামনের সড়কে। পল্লবী থানার পুলিশ আজ বুধবার প্রথম আলোকে এ তথ্য জানিয়েছে।

পল্লবী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সদানন্দ বৈদ্য আজ সকালে প্রথম আলোকে বলেন, তিনি জানতে পেরেছেন, খায়রুন ও ঝরনা দুজনই পোশাকশ্রমিক। প্রতিদিনের মতো তাঁরা গতকাল শিশু ইয়াসিনকে সঙ্গে নিয়ে কর্মস্থলে গিয়েছিলেন। রাত সোয়া নয়টার দিকে তাঁদের কারখানা ছুটি হয়। তাঁরা বাসায় ফিরছিলেন। ফেরার পথে ঝরনার কাছ থেকে ইয়াসিনকে নিয়ে কোলে নেন খায়রুন।

পূরবী সিনেমা হলের সামনের রাস্তা পার হচ্ছিলেন তাঁরা। এ সময় বসুমতী পরিবহনের বেপরোয়া গতির একটি বাস খায়রুনকে চাপা দেয়। এতে শিশুটিসহ তিনি নিহত হন। শিশুটির মা ঝরনা অল্পের জন্য বেঁচে যান। বিক্ষুব্ধ জনতা চালকসহ বাসটি আটক করে। খবর পেয়ে পল্লবী থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। তারা বাসচালককে আটক করে থানায় নিয়ে আসে।

এসআই সদানন্দ বলেন, ঘটনার পর খায়রুন ও শিশু ইয়াসিনকে রক্তাক্ত অবস্থায় পল্লবীর স্থানীয় একটি হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল। সেখান থেকে শেরেবাংলা নগরের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে দুজনকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।

স্বজন মিজানুর রহমান আজ সকালে প্রথম আলোকে বলেন, ইয়াসিনের মা-বাবার সঙ্গে মিরপুর ১২ নম্বর সেকশনের একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন খায়রুন। খায়রুন ও ঝরনা একই পোশাক কারখানার শ্রমিক। তাঁদের কাজের সময় একই। পথচারী পারাপারের জেব্রা ক্রসিং দিয়েই গতকাল রাতে খায়রুন-ঝরনারা রাস্তা পার হচ্ছিলেন। এ সময় বাসচাপার ঘটনাটি ঘটে।

মিজানুর রহমান জানান, খায়রুনের চার বছরের একটি ছেলে আছে। সে গ্রামের বাড়ি ভোলায় খায়রুনের মা-বাবার সঙ্গে থাকে। ভাতিজা ইয়াসিনকে খায়রুন সন্তানের মতো আদর করতেন। শিশু ইয়াসিনকে তার মা সঙ্গে নিয়ে পোশাক কারখানায় যেতেন। শিশুটিকে পোশাক কারখানার দিবাযত্নকেন্দ্র রাখা হতো।

মিজানুর রহমান বলেন, ইয়াসিনকে হারিয়ে তার মা পাগলপ্রায়। বাবাও অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।

শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে খায়রুন ও ইয়াসিনের লাশ ভোলা সদর উপজেলার রতনপুর গ্রামে দাফন করা হবে বলে জানান মিজানুর রহমান।