চক্ষুবিজ্ঞান হাসপাতালে কেউ নিচ্ছেন চিকিৎসা, কেউ করাচ্ছেন পরীক্ষা
রাজধানীর জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের চিকিৎসাসেবা নির্বিঘ্নে চলছে। টানা সতেরো দিন অচলাবস্থার পর গতকাল শনিবার থেকে নির্বিঘ্নে সেবা চালু হয়েছে।
আজ রোববার সকালে হাসপাতাল গিয়ে দেখা যায়, বিভিন্ন জেলা থেকে কয়েক হাজার রোগী চিকিৎসার জন্য এসেছেন। কেউ ফলোআপ, কেউ নতুন করে সেবা নিতে হাসপাতালে অপেক্ষা করছিলেন। বিভিন্ন পরীক্ষাগারে একই রকম রোগীদের ভিড় দেখা গেছে।
এর আগে গত ২৮ মে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আহতদের সঙ্গে হাসপাতালের চিকিৎসক-নার্স-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সংঘর্ষ ও মারামারি হয়। এর জেরে দেশের সবচেয়ে বড় বিশেষায়িত চক্ষু হাসপাতালের সব চিকিৎসাসেবা বন্ধ হয়ে যায়। ভর্তি রোগীদের বেশির ভাগ হাসপাতাল ছেড়ে চলে যান।
পরে ৪ জুন হাসপাতালটির জরুরি বিভাগে সীমিত পরিসরে চিকিৎসাসেবা (জরুরি সেবা) চালু হয়। আর গতকাল শনিবার চিকিৎসাসেবা পুরোদমে চালু হয়।
আজ বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত হাসপাতালের বহির্বিভাগে চারটি কম্পিউটার থেকে ১ হাজার ৫০০ রোগীকে টিকিট দেওয়া হয়। টিকিট প্রদান করা হবে বেলা ১টা পর্যন্ত।
এর আগে গতকাল বহির্বিভাগ থেকে ১ হাজার ৫০০ রোগীকে টিকিট দেওয়া হয়। শনিবার চোখের বিভিন্ন পরীক্ষা করান তিন শতাধিক রোগী। প্রয়োজন অনুপাতে ৫০ রোগীকে ভর্তি করা হয়। অস্ত্রোপচার হয় তিনজনের। এ সময়ে শিশু বিভাগ থেকে ২৫০ শিশুরও চিকিৎসা দেওয়া হয়।
তবে গতকাল অস্ত্রোপচারের হার কম ছিল। এর কারণ উল্লেখ করে ডাক্তার ও নার্সরা জানান, হাসপাতালে ভর্তি রোগী কম থাকায় গতকাল তেমন অস্ত্রোপচার হয়নি। আজ থেকে অস্ত্রোপচারের হার বাড়বে।
কিশোরগঞ্জ থেকে চিকিৎসা নিতে আসা আছিয়া বেগম জানান, গত ২০ মে তিনি হাসপাতাল থেকে বেশ কিছু পরীক্ষা করানোর পর ডাক্তার দেখিয়েছিলেন। পরে ডাক্তার তাঁকে অস্ত্রোপচারের জন্য ভর্তির পরামর্শ দেন। আজ ভর্তির জন্য হাসপাতালে এসেছেন।
চক্ষুবিজ্ঞান হাসপাতালে জুলাই আহতদের মধ্যে ৫৪ জন চিকিৎসাধীন ছিলেন। ঈদের ছুটিতে চারজন ছাড়া বাকি সবাই বাড়ি গিয়েছিলেন। গতকাল বিকেল পর্যন্ত তাঁদের ১৭ জন হাসপাতালে পুনরায় আসেন। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাঁদের কাউকে ভেতরে প্রবেশ করতে দেয়নি। আজ তাঁদের আর কেউ হাসপাতালে আসেননি।
হাসপাতালে দায়িত্বরত আনসার ও পুলিশ সদস্যরা জানান, জুলাই আহতদের কাউকে হাসপাতালে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। তাঁরা সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন।
হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জানে আলম বলেন, এ মুহূর্তে হাসপাতালের কোনো কার্যক্রম বিঘ্নিত হচ্ছে না। জুলাই আহতদের চারজন হাসপাতালে অবস্থান করছেন। মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাঁদের বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
জুলাই আহতদের বেশ কয়েকজন চিকিৎসা শেষ না হওয়ার কথা বলেছেন। তাঁদের বিষয়ে জানে আলম বলেন, চিকিৎসা চলমান বিষয়। এখানে থেকে চিকিৎসা গ্রহণের কোনো প্রয়োজন নেই।