গেন্ডারিয়ায় ‘ডিআইটি পুকুর’ রক্ষায় বেলার আইনি নোটিশ

রাজধানীর গেন্ডারিয়ায় ডিআইটি প্লট পুকুর রক্ষায় দাবিতে চারিপাশ ঘেরাও করে মানববন্ধন আয়োজন করে এলাকাবাসীর একাংশ। একই সময় কাউন্সিলর সমর্থক এলাকাবাসীরাও কর্মসূচী দেন। তবে পুলিশের বাধায় ইভয়পক্ষের কর্মসূচী পন্ড হয়। গত শুক্রবার
ছবি: দীপু মালাকার

পুরান ঢাকার গেন্ডারিয়ায় ‘ডিআইটি পুকুর’ রক্ষায় আইনি নোটিশ পাঠিয়েছে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা)। সরকারের সংশ্লিষ্ট সব সংস্থা ও পুকুর ভরাটকারীদের এ নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আজ মঙ্গলবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে এ নোটিশ পাঠানোর বিষয়টি জানিয়েছে বেলা।

নোটিশে পুকুর ভরাটের সব কার্যক্রম বন্ধের দাবি জানিয়েছে বেলা। একই সঙ্গে ভরাট হওয়া অংশ পুনরুদ্ধার করে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ এবং শ্রেণি অপরিবর্তিত রেখে প্রয়োজনীয় সংস্কার করে ‘পুকুর’ হিসেবে এটি সংরক্ষণের জোরালো দাবি জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পুকুরটির পানি স্থানীয় বাসিন্দারা নানা কাজে ব্যবহার করত। দেশের বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকায় সম্প্রতি প্রকাশিত হওয়া সংবাদে জানা যায়, পুকুরের চারপাশে ছড়িয়ে আছে ময়লা-আবর্জনা। মাটি ফেলে ভরাট করে গড়ে উঠেছে ক্লাব ঘর; কথিত খানকা শরিফ; আসবাব, ডেকোরেটর, রেস্তোরাঁ, চা-বিস্কুটের প্রায় শতাধিক দোকানসহ রিকশা রাখার স্থান। স্থানীয় ব্যক্তিদের ভাষ্য, পুকুরটি ভরাটসহ নানা স্থাপনা নির্মাণে যুক্ত আছেন ৪৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সাহানা আক্তার এবং মালিকানা দাবিকারী নৌশাদ আহমেদ গং ও তাঁদের আমমোক্তার জাকির হোসেন।

আইনি নোটিশে বেলা বলছে, জলাবদ্ধতা নিয়ে চরম সংকটে থাকা এই নগরীর পানিনিষ্কাশনের গুরুত্বপূর্ণ আধার এ জলাশয় (ডিআইটি পুকুর)। পুকুরটি ভরাট হলে এর আশপাশের এলাকার পানি নিষ্কাশনে সমস্যা হবে এবং এলাকাবাসীর দুর্ভোগ চরমে পৌঁছাবে। অগ্নিকাণ্ড মোকাবিলায়ও এমন জলাধার গুরুত্বপূর্ণ। পুরান ঢাকায় অগ্নিকাণ্ডের ঝুঁকি রাজধানীর অন্য এলাকার চেয়ে বেশি। প্রায়ই পানির অভাবে অগ্নিকাণ্ড মোকাবিলা কার্যক্রম ব্যাহত হয়। এতে জানমালের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়।

নোটিশে আরও বলা হয়, এ ছাড়া আইনত, পুকুর ব্যক্তিমালিকানাধীন বা সরকারি যা–ই হোক না কেন, অপরিহার্য জাতীয় প্রয়োজন ছাড়া এবং যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়া তা ভরাট করা যাবে না। পুকুর ভরাট ও শ্রেণি পরিবর্তনের এ ধরনের কার্যক্রম দেশে প্রচলিত আইনের পরিপন্থী এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

ঢাকা দক্ষিণ সিটির ৪৭ নম্বর ওয়ার্ডের গেন্ডারিয়ার এলাকায় প্রায় ৪ একর আয়তনের পুকুর রয়েছে, যা ‘ডিআইটি পুকুর’ নামে পরিচিত। এ পুকুরসহ মোট ১৩ দশমিক ৫৯ একর ভূমি রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের অনুকূলে অধিগ্রহণ করা হয়েছিল। পরে নৌশাদ আহমেদ গং এই ভূমি অবমুক্তির জন্য সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে একটি রিট পিটিশন করেন।

পরে এ মামলায় আদালত আবেদনকারীর অনুকূলে সম্পত্তি অবমুক্ত করার নির্দেশ প্রদান করেন। এ আদেশের বিরুদ্ধে রাজউক সিভিল পিটিশন ফর লিভ টু আপিল দায়ের করে, যা আদালত কর্তৃক খারিজ হয়। পরবর্তীতে রাজউক আপিল বিভাগে সিভিল রিভিউ করে, যা আপিল বিভাগ কর্তৃক খারিজ হয়।