খেজুরের রস খাবেন না, আহ্বান স্বাস্থ্যমন্ত্রীর

নিপাহ ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক
ছবি: আরিফুর রহমান

নিপাহ ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে কাঁচা খেজুরের রস না খেতে সাধারণ মানুষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেছেন, নিপাহ ভাইরাসের প্রতিষেধক হিসেবে এখন পর্যন্ত কোনো টিকা আবিষ্কৃত হয়নি। কোনো ওষুধও বের হয়নি। এই ভাইরাস প্রতিরোধে জরুরি হচ্ছে কাঁচা খেজুরের রস না খাওয়া।

আজ রোববার দুপুরে সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে নিপাহ ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী এসব তথ্য জানান। এ সময় স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব আনোয়ার হোসেন হাওলাদার উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, চলতি বছর এখন পর্যন্ত নিপাহ ভাইরাসে আটজন আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে পাঁচজনই মারা গেছেন। নিপাহ ভাইরাসে ৭০ শতাংশের বেশি মৃত্যু হয়। নিপাহ ভাইরাস কীভাবে দ্রুত ছড়াচ্ছে, সংবাদ সম্মেলনে তাঁর একটি ধারণা দেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, কাঁচা খেজুরের রস থেকে এই ভাইরাস ছড়াচ্ছে। প্রথমে বাদুড় খেজুরের রস খাচ্ছে। একই রস মানুষ যখন পান করছেন, তখন ওই ব্যক্তি নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছেন। আক্রান্ত ব্যক্তি যদি সুস্থ মানুষের সংস্পর্শে আসেন, সুস্থ মানুষও তখন ভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, এই ভাইরাস দ্রুত ছড়াচ্ছে। এ বিষয়ে সাধারণ মানুষকে সচেতন করে তুলতে সরকার বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছে।

গত বছরের তুলনায় এ বছর নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার হার বেড়েছে জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, যাঁরা আক্রান্ত হচ্ছেন, তাঁদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে, যাতে এই ভাইরাস ছড়িয়ে না পড়ে। গত বছরের চেয়ে এবার নিপাহ ভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার কারণ হিসেবে মন্ত্রী বলেন, এ বছর খেজুরের উৎপাদন বেড়েছে। খেজুরগাছের সংখ্যাও বেড়েছে।

হাসপাতালের ক্যাটাগরি করতে কমিটি

সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, দেশের সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালের মান অনুযায়ী ক্যাটাগরি করতে একটি কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিবকে (হাসপাতাল) প্রধান করে এই কমিটি গঠন করা হয়েছে। কীসের ভিত্তিতে হাসপাতালের ক্যাটাগরি ঠিক হবে, তা এই কমিটি নির্ধারণ করবে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সরকারি-বেসরকারি মিলে দেশে পর্যাপ্ত হাসপাতাল আছে। এখন আমরা হাসপাতালের সেবার মানে উন্নতি করতে চাই। সে জন্য হাসপাতালের ক্যাটাগরি করা হচ্ছে। যাতে মানুষ হাসপাতালের ক্যাটাগরি দেখে সেখানে সেবা নিতে যাবে।’

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের মানুষ দেশের হাসপাতালে সেবা নেবেন, আমরা সেটা নিশ্চিত করতে চাই। বাংলাদেশের মানুষ বিদেশে গিয়ে সেবা নিক, সেটা আমরা চাই না। তবে মানুষের আস্থা অর্জন করতে হবে আমাদের। সে জন্য হাসপাতালের ক্যাটাগরি করা হচ্ছে। কমিটি আগামী এক মাসের মধ্যে আরেকটি বৈঠক করবে। এই কমিটি ঠিক করবে কীভাবে হাসপাতালের ক্যাটাগরি নির্ধারণ করা হবে।’

আগামী মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে সরকারি হাসপাতালেই চিকিৎসকেরা চেম্বার শুরু করবেন বলে সংবাদ সম্মেলনে জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, কোন প্রক্রিয়ায় চিকিৎসকেরা হাসপাতালে চেম্বারে বসবেন, সেখানে চিকিৎসকের ফি কত হবে, তা নির্ধারণে কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়েছে। তারা কাজ করছে।