মেয়র তাপসের বক্তব্যের নিন্দা জানিয়ে ৪২ নাগরিকের বিবৃতি

ডিএসসিসি মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস
ছবি: বাসস

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসের দেওয়া বক্তব্যের প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়ে মানবাধিকার সংগঠনের প্রতিনিধিসহ দেশের ৪২ জন বিশিষ্ট নাগরিক আজ শনিবার যৌথ বিবৃতি দিয়েছেন। একইসঙ্গে বিষয়টিতে দেশের সর্বোচ্চ আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন তাঁরা।

২১ মে বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের সভায় মেয়র তাপসের দেওয়া বক্তব্য ‘একজন চিফ জাস্টিসকেও নামিয়ে দিয়েছিলাম’ নিয়ে একটি পত্রিকায় প্রতিবেদন ছাপা হয়।

বিবৃতিতে বিশিষ্ট নাগরিকেরা বলেছেন, তাঁরা পত্রিকায় প্রকাশিত ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসের ২১ মে দেওয়া বক্তব্য পাঠ করেছেন। তিনি সুশীল সমাজের ব্যক্তিদের ‘বস্তায় ভরে বুড়িগঙ্গা নদীর কালো পানিতে ছেড়ে দেওয়ার’ হুমকি দিয়েছেন। তিনি একজন ‘চিফ জাস্টিসকেও নামিয়ে দিয়েছিলেন’ বলে অত্যন্ত আপত্তিকর দম্ভোক্তি করেছেন। দেশের জ্যেষ্ঠ আইনজীবীদের সম্পর্কেও অশালীন ভাষায় কটূক্তি করেছেন।

বিবৃতিতে বিশিষ্ট নাগরিকেরা বলেছেন, ঢাকা মহানগরের মেয়রের মতো একটি উচ্চ সম্মানীয় পদে আসীন একজন রাজনীতিবিদ এবং পেশাদার আইনজীবীর মুখ থেকে এমন লাগামহীন, অশালীন, অসম্মানজনক ভাষার ব্যবহারে তাঁরা ব্যথিত, ক্ষুব্ধ এবং হতবাক।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, মেয়র একজন প্রধান বিচারপতিকে নামিয়ে দিয়েছিলেন বলে যে দম্ভোক্তি করেছেন, তা সর্বোচ্চ আদালতকে নিঃসন্দেহে অসম্মান ও অপমান করার সমার্থক। এই উক্তির মধ্য দিয়ে তিনি কার্যত এমন বার্তাই দিলেন যে তার রাজনৈতিক দল অন্য সব প্রতিষ্ঠানের মতো বিচার বিভাগকেও নিয়ন্ত্রণ করতে বেপরোয়া।

বিবৃতিতে বলা হয়, তিনি (তাপস) শুধু বিচার বিভাগ, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ও নাগরিক সমাজের সম্মানিত ব্যক্তিদের প্রতি কটাক্ষ করেছেন তা নয়—তিনি নিজের পেশাগত অবস্থান ও যে শিক্ষা-দীক্ষার মধ্য দিয়ে বেড়ে উঠেছেন তাকেও অসম্মানিত ও হেয় করেছেন। এটা তার দম্ভ এবং অপব্যবহারের নিকৃষ্ট উদাহরণ।

অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (এএলআরডি) নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদার সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। সেখানে বিবৃতিদাতা হিসেবে ৪২ জনের নাম রয়েছে। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন মানবাধিকার কর্মী হামিদা হোসেন, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের  উপদেষ্টা সুলতানা কামাল ও রাশেদা কে চৌধূরী, সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার, নিজেরা করির সমন্বয়কারী খুশী কবির, সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত, আইনজীবী শাহদীন মালিক, টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান, আলোকচিত্রী শহিদুল আলম, সেন্ট্রাল উইম্যান ইউনিভার্সিটির ভাইস চ্যান্সেলর ড. পারভীন হাসান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আনু মোহাম্মদ, যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনিয়স স্টেট ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক আলী রিয়াজ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যলয়ের অধ্যাপক আসিফ নজরুল ও গীতি আরা নাসরিন, আইন ও সালিশ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক মো. নুর খান, ব্ল্যাস্টের অনারারি নির্বাহী পরিচালক সারা হোসেন, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং ও নারীপক্ষের শিরিন হক।

আরও পড়ুন