কথা, গান, কবিতায় ফজিলাতুন্নেছা মুজিবকে স্মরণ

বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের জন্মদিনে তাঁকে নিয়ে আলোচনা করেন বাংলা একাডেমির সভাপতি ও কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন
ছবি: সংগৃহীত

বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের ৯২তম জন্মবার্ষিকী ছিল সোমবার। এ উপলক্ষে এদিন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে ‘শিল্পের আলোয় শ্রদ্ধাঞ্জলি: বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে গান, কবিতায় তাঁকে স্মরণ করা হয়।

সোমবার সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির সংগীত ও নৃত্যকলা ভবন মিলনায়তনে আলোচনা সভায় অংশ নেন কথাসাহিত্যিক ও বাংলা একাডেমির সভাপতি সেলিনা হোসেন। তিনি বলেন, ১৯৬৭ সালে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে আত্মজীবনী লিখতে শুরু করেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। কারাগারে দেখতে গিয়ে তাঁকে খাতা-কলম দিয়ে এসেছিলেন তাঁর স্ত্রী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব। তিনি বলেন, ‘এই ঘটনা জেন্ডার আলোকে বিশ্লেষিত হওয়ার দাবি রাখে। কারণ, তাঁর এই উদ্যোগ ছাড়া “কারাগারের রোজনামচা” বা “অসমাপ্ত আত্মজীবনী” লেখা সম্ভব হতো না। বঙ্গবন্ধু পুরুষতন্ত্রের আধিপত্যের চিন্তা থেকে রেণুকে (বঙ্গমাতা) স্বীকৃতি দেওয়াকে আড়াল করতে পারতেন। কিন্তু তিনি সেটা করেননি; বরং পারিবারিক জীবনের সমতা অকপটে তুলে ধরেছেন।’

সেলিনা হোসেন বলেন, বঙ্গবন্ধু তাঁর বইয়ের বিভিন্ন জায়গায় স্ত্রীর সহযোগিতার কথা উল্লেখ করেছেন। কলকাতায় পড়াশোনা চলাকালে খরচের কথা বলতে গিয়ে তিনি লিখেছিলেন, ‘আব্বা ছাড়াও মায়ের কাছ থেকেও আমি টাকা নিতে পারতাম। আর সময়-সময় রেণুও আমাকে কিছু টাকা দিতে পারত। যা কিছু দরকার হতো বাড়ি গেলে আমাকে দিতে আপত্তি করেনি। নিজে মোটেও খরচ করত না।’

অনুষ্ঠান শুরু হয় কামরুল আহমেদের বাঁশি বাদনের মধ্য দিয়ে। ‘বঙ্গমাতা’ শিরোনামে কবিতা পাঠ করেন কবি তারিক সুজাত। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির শিশুদের দল গেয়ে শোনায় ‘ধন্য মুজিব ধন্য’ ও ‘আরেকটিবার শেখ মুজিবের জনম দে না মা’ গান দুটি। এ ছাড়াও ছিল শিল্পকলা একাডেমির শিল্পীদের সমবেত নৃত্য; পরিচালনা করেন ওয়ার্দা রিহাব।

অনুষ্ঠানে হুমায়রা বশির গেয়ে শোনান ‘জাতির পিতা সব সংগ্রাম তুমি হে বঙ্গমাতা’, অনিমা মুক্তি গোমেজ ‘বঙ্গমাতা তুমি, ওগো তোমারে সেলাম’, আবু বকর সিদ্দিক ‘তোমার স্মৃতি ভাসে, মাগো তোমার স্মৃতি ভাসে’, দেলোয়ার হোসেন বয়াতি ‘জাতির জনক বঙ্গবন্ধু তুমি যে মহান’।

এ ছাড়া গান পরিবেশন করেন মৃদুলা সমাদ্দার, রিনা আমিন, রওশন আলম, আঞ্জুমান আরা শিমুল, অরুণ চৌধুরী, মহুয়া লিপি, সাজ্জাদ হোসেন, অনন্যা চৌধুরী ও শাহনাজ আক্তার। আবৃত্তি করেন মীর বরকত ও জিনাত জাহান। শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন জাহীদ রেজা নূর।