সিদ্দিকবাজারে বিস্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্ত ভবন ব্যবহার উপযোগী করতে ৫ সুপারিশ

ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের ধস ঠেকাতে রাজউকের নির্দেশনায় অস্থায়ী লোহার কাঠামো স্থাপন করছেন কর্মচারীরা
ছবি: দীপু মালাকার

রাজধানীর সিদ্দিকবাজারে বিস্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনটিকে ব্যবহার উপযোগী করতে পাঁচটি সুপারিশ করেছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) কারিগরি কমিটি। এ–সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন আজ সোমবার রাজউক চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান মিঞার কাছে জমা দেওয়া হয়েছে। কারিগরি কমিটির আহ্বায়ক ও রাজউকের সদস্য মেজর (অব.) সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

গত মঙ্গলবার বিকেলে সিদ্দিকবাজারে একটি সাততলা ভবনে ভয়াবহ বিস্ফোরণ হয়। বিস্ফোরণে ২৪ জন মারা যান ও অনেকেই আহত হন। ক্ষতিগ্রস্ত ভবনটি আর ব্যবহার করা যাবে কি না, জানতে মেজর (অব.) সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরীকে আহ্বায়ক ও রাজউকের ওই এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত অথরাইজড অফিসার রংগন মণ্ডলকে সদস্যসচিব করে ছয় সদস্যের একটি কারিগরি কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিতে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের দুজন অধ্যাপক মেহেদী আহমেদ আনসারী ও রাকিব আহসানও ছিলেন। ভবনটি কয়েক দফা পরিদর্শন করে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে কমিটি।

কারিগরি কমিটির প্রতিবেদনের একটি অনুলিপি সংগ্রহ করেছে প্রথম আলো। এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভবনমালিককে তৃতীয় পক্ষের সঙ্গে চুক্তি করে ভবনটির ‘ডিটেইলড ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যাসেসমেন্ট’ করতে হবে। এটি আগামী ৪৫ দিনের মধ্যে শেষ করতে হবে। এই কার্যক্রমের পর একটি প্রতিবেদন পাওয়া যাবে, যার মাধ্যমে নিশ্চিতভাবে জানা যাবে, ওই ভবন ঠিক কী পরিমাণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আর কী উপায়ে সেটিকে ব্যবহার উপযোগী করা যাবে।

এরপর ‘ডিটেইলড ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যাসেসমেন্ট’ অনুযায়ী ভবনটিকে মজবুতকরণ (রেক্টোফিটিং) করতে বলেছে কমিটি। ভবনটির মালিকপক্ষকে তৃতীয় কোনো পক্ষের সঙ্গে চুক্তি করে এ কাজ করতে হবে। আর এ কাজের জন্য ১৮০ দিন সময় বেঁধে দিয়েছে কারিগরি কমিটি। কমিটির সুপারিশে বলা হয়েছে, ‘ডিটেইলড ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যাসেসমেন্ট’ ও মজবুতকরণ ছাড়া ভবনটি ব্যবহার করা যাবে না।

ভবনটি ব্যবহারের জন্য কমিটির সুপারিশে বলা হয়েছে, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে মজবুতকরণের কাজ শেষ করে বিশেষজ্ঞ তৃতীয় কোনো পক্ষের কাছ থেকে মজবুতকরণ–সংক্রান্ত সনদ নিতে হবে। এই সনদ নেওয়ার পরই ভবনটি ব্যবহার করা যাবে। এ ছাড়া কমিটির সুপারিশে ক্ষতিগ্রস্ত ওই ভবনের সামনের ফুটপাত থেকে ২৬ ফুট পর্যন্ত রাস্তা ‘কর্ডন’ করে রাখতে হবে। সাধারণ মানুষের জানমালের নিরাপত্তার স্বার্থে এ কাজ করতে হবে।

জানতে চাইলে সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত ভবনটির ‘ডিটেইলড ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যাসেসমেন্ট’ করে সে অনুযায়ী মজবুতকরণ (রেক্টোফিটিং) করতে হবে। এরপর ভবনটি ব্যবহার করা যাবে। এসব না করলে ভবনটি ব্যবহার করা যাবে না।

এর আগে কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে ভবনটির ক্ষতিগ্রস্ত ৯টি কলামে ১৯টি স্টিলের পাইপ বসানো হয়, যাতে ভবনটিতে উদ্ধার কার্যক্রম চালানো যায় এবং ভবনটি যাতে ধসে না পড়ে।