মেট্রোরেল ছিল না, ওঠা যাচ্ছিল না বাসে; আগারগাঁও থেকে হেঁটে, ভ্যানে, পিকআপ ভ্যানে দুর্ভোগের যাত্রা

মেট্রোরেল না চলায় পিকআপ ভ্যানে চেপে গন্তব্যে। আজ সোমবার সকাল সাড়ে ১০টায় ঢাকার আগারগাঁওয়েছবি: সাজিদ হোসেন

ব্যাংক কর্মকর্তা আতিকুর রহমান মিরপুরের শেওড়াপাড়া থেকে মেট্রোরেলে করে আগারগাঁও স্টেশনে নেমেছেন। যাবেন মতিঝিলে। প্রায় ৪০ মিনিট ধরে আগারগাঁও বাসস্টেশনে অপেক্ষা করেও কোনো গাড়ি পাচ্ছিলেন না।

আতিকুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘পাবলিক ট্রান্সপোর্ট নেই। অতিরিক্ত ভাড়া দিতে চাইলাম, তার পরও সিএনজি যেতে রাজি হলো না। ইতিমধ্যে অফিসে ঢোকার সময় পেরিয়ে গেছে। আর কিছু সময় গেলে হয়তো আজ অফিসেই যাওয়া হবে না। ছুটি নিতে হবে। কিছুই পাচ্ছি না, কী করব?’

মেট্রোরেল না চলায় রোদের মধ্যে হেঁটেই চলা। আজ সোমবার সকাল সাড়ে ১০টায় ঢাকার আগারগাঁওয়ে
ছবি: সাজিদ হোসেন

আজ সোমবার সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে আতিকুর রহমানের মতো অসংখ্য অসহায় মুখ দেখা গেল। গতকালের দুর্ঘটনার পর শাহবাগ থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ থাকায় এই পথে চলাচলরত মানুষদের ভোগান্তি চরমে ওঠে। বেলা ১১টার পর অবশ্য মেট্রোরেল পুরোপুরি চালু হয়। তবে তার আগ পর্যন্ত চলে ভোগান্তি।

১১টার আগ পর্যন্ত উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত চলছিল মেট্রোরেল। এরপর আর যাচ্ছিল না বলে যাত্রীদের আগারগাঁও স্টেশনে নেমে যেতে হয়। এরপর চলে বাসে ওঠার লড়াই। কিন্তু যাত্রীর তুলনায় বাস অনেক কম থাকায় বেশির ভাগ মানুষই উঠতে পারছিলেন না।

মেট্রোরেল না চলায় রোদের মধ্যে হেঁটেই পথ চলতে হয় অসংখ্য মানুষকে। আজ সোমবার সকাল সাড়ে ১০টায় ঢাকার আগারগাঁওয়ে
ছবি: সাজিদ হোসেন

ফলে দীর্ঘ সময় অপেক্ষার পর বাধ্য হয়ে অনেকে হেঁটেই রওনা হন গন্তব্যে। কেউ কেউ ভ্যানে চেপে বসেন। মালবাহী পিকআপ ভ্যান পেয়ে তাতেও চড়ে বসেন অনেকে।

সাভার থেকে উত্তরায় গিয়ে সেখান থেকে মেট্রোরেলে আগারগাঁও পর্যন্ত আসা সাইদুল ইসলাম আধা ঘণ্টা ধরে অপেক্ষা করেও বাস বা অটোরিকশা কিছুই পাচ্ছিলেন না। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘হাইকোর্টে যাব। রাস্তায় জ্যাম হবে ভেবে উত্তরা থেকে মেট্রোরেলে উঠেছিলাম। আগারগাঁও থেকে মেট্রোরেলে প্রেস ক্লাবে যাব ভেবেছিলাম। এখন তো কিছুই পাচ্ছি না।’

মেট্রোরেল না চলায় ভ্যানে চেপে গন্তব্যে। আজ সোমবার সকাল সাড়ে ১০টায় ঢাকার আগারগাঁওয়ে
ছবি: সাজিদ হোসেন

আরেক যাত্রী সাহিদা খাতুন (ছদ্মনাম) আগারগাঁও থেকে ফার্মগেট যাবেন। এক ঘণ্টার বেশি সময় ধরে অপেক্ষা করেও কিছু পাচ্ছিলেন না তিনি। তিনি বেলা পৌনে ১১টার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, ‘ফার্মগেট যাব। এক ঘণ্টা ধরে অপেক্ষা করছি, কিছুই পাচ্ছি না। মিরপুর থেকে ফার্মগেটমুখী যেসব বাস আসছে, অতিরিক্ত যাত্রীর কারণে তাতেও উঠতে পারছি না। ভাড়ায়চালিত অ্যাপে বাইক ডাকার চেষ্টা করছি সেটিও পারছি না।’

সকাল থেকে এই দুর্ভোগ চলছিল, তার অবসান ঘটিয়ে ১১টার পর মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত পুরো পথে ট্রেন চালানোর ঘোষণা দেয়।