জর্ডান থেকে ফিরে একে একে ছয় স্বজনের মৃত্যু দেখলেন তিনি

মা সূর্য বানু (বাঁয়ে) ও বোন লামিয়ার সঙ্গে লিজা আক্তার। আজ লিজা আক্তারের মৃত্যু হয়ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর ভাষানটেকে বাসায় আগুনে দগ্ধ আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। তার নাম লিজা আক্তার। শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ শনিবার সন্ধ্যায় লিজার মৃত্যু হয়। এ নিয়ে আগুনে দগ্ধ হয়ে লিজাসহ ছয় স্বজন মারা গেলেন।

শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক চিকিৎসক তরিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে লিজার মৃত্যুর কথা নিশ্চিত করেন। উচ্চমাধ্যমিকের ছাত্রী লিজার আগে তার একমাত্র ভাই সুজনের (৯) মৃত্যু হয় গত ২৪ এপ্রিল।  

এর আগে লিজার বাবা লিটন চৌধুরী (৫২), মা সূর্য বানু (৪০), বোন লামিয়া (৭) ও নানি মহিরুন্নেছা (৭০) এই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

লিটন চৌধুরীর তিন মেয়ে, এক ছেলে। বড় মেয়ে আকলিমা খাতুন জর্ডানে ছিলেন। বাবা-মা, ভাই ও বোনের অগ্নিদগ্ধ হওয়ার খবর শুনে তিনি দেশে ফেরেন। আজ বোন লিজার মৃত্যুর সময় তিনি হাসপাতালেই ছিলেন।

লিটন চৌধুরীর ভাই সোহাগ মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘বাবা-মা, ভাই-বোনকে হারিয়ে আমার ভাতিজি পাগলপ্রায়। কোনো কথাবার্তা বলছে না সে।’

ভাষানটেকের একটি বাসায় ১২ এপ্রিল ভোরে কয়েল জ্বালাতে গেলে ঘরে জমে থাকা গ্যাসে আগুন ধরে যায়। পুলিশের ধারণা, গ্যাস সিলিন্ডারের লাইনের ছিদ্র থেকে গ্যাস বের হয়ে ঘরের মধ্যে জমে ছিল। মশার কয়েল জ্বালাতে গেলে সেই গ্যাসে আগুন লাগে।

সোহাগ মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর ভাই (লিটন) নামাজ পড়ার জন্য ঘুম থেকে ওঠেন। ছেলেমেয়েদের মশায় কামড়াতে দেখে তিনি কয়েল জ্বালানোর উদ্যোগ নেন। লাইটার জ্বালানোর সঙ্গে সঙ্গে কক্ষে আগুন ধরে যায়। আগুনে দগ্ধ হয়ে একে একে সবাই মারা গেল।

লিটন চৌধুরীর বাড়ি ময়মনসিংহের নান্দাইলে। তিনি পরিবার নিয়ে পশ্চিম ভাষানটেকের একটি বাসায় ভাড়া থাকতেন। লিটন চৌধুরী ওই এলাকায় আসবাবপত্রের ব্যবসা করতেন।