বেলা ১১টায় অফিস খুলল, চলবে বেলা ৩টা পর্যন্ত

বাংলাদেশ সচিবালয়ফাইল ছবি

সরকারি-বেসরকারি অফিস আজ বুধবার খুলেছে। রপ্তানিমুখী পোশাক কারখানাগুলোও খুলেছে আজ।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় গতকাল মঙ্গলবার প্রজ্ঞাপন জারি করে জানায়, আজ বুধবার ও আগামীকাল বৃহস্পতিবার সব সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি অফিসের জন্য বেলা ১১টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত অফিস সময় নির্ধারণ করা হয়েছে।

আজ সকাল ১০টার পর থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় দেখা যায়, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবীরা কর্মক্ষেত্রে যাচ্ছেন।

বিভিন্ন সরকারি অফিসের চাকরিজীবীদের স্টাফ বাসে করে নিজ নিজ কর্মক্ষেত্রে যেতে দেখা গেছে।

বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মজীবীরা বাস, মোটরসাইকেল, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, রিকশায় করে অফিসে গেছেন। ঢাকার বাইরে থেকেও লোকজনকে অফিস করতে আসতে দেখা গেছে।

মো. ইয়াকুব আলী মোল্লা রাজধানীর মতিঝিলে অবস্থিত একটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। কর্মস্থলে যাওয়ার পথে রাজধানীর সায়েদাবাদ এলাকায় তাঁর সঙ্গে প্রথম আলোর কথা হয়।

ইয়াকুব আলী বলে, গত বৃহস্পতিবার তিনি তাঁর গ্রামের বাড়ি রাজবাড়ীতে চলে গিয়েছিলেন। কারফিউ থাকায় তিনি আর ঢাকায় ফেরেননি। গতকাল জানতে পারেন, আজ অফিস খোলা। তাই আজ সকালে রাজবাড়ী থেকে ঢাকায় এসেছেন।

সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সায়েদাবাদ এলাকায় দেখা যায়, সড়কে বাস, মোটরসাইকেল, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, রিকশা চলছে। লোকজন এসব যানবাহনে করে অফিসে যাচ্ছেন। বাসে যাত্রীদের গাদাগাদি করে যেতে দেখা যায়।

গত সপ্তাহে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সারা দেশে বিক্ষোভ, সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। বিভিন্ন স্থানে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় গতকাল পর্যন্ত ১৯৭ জনের প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি বিজিবি নামানো হয়। একপর্যায়ে সরকার গত শুক্রবার রাত ১২টা থেকে সারা দেশে কারফিউ জারি করে। একই দিনে বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা করার জন্য সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েনের সিদ্ধান্ত হয়। এখনো বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা করে যাচ্ছে সেনাবাহিনী।

প্রথম দিন দুই ঘণ্টা বিরতি দিয়ে কারফিউ চলে। পরদিন তিন ঘণ্টা বিরতি দেওয়া হয়। গতকাল ঢাকা, গাজীপুর, নরসিংদী ও নারায়ণগঞ্জে চার ঘণ্টা বিরতি দেওয়া হয়। যদিও সারা দেশে জেলাভেদে এই বিরতি কমবেশি আছে।

গতকাল দেশের কোথাও সংঘাত, সহিংসতার খবর পাওয়া যায়নি। এমন অবস্থায় ঢাকা মহানগর ও ঢাকা জেলা, গাজীপুর মহানগর ও গাজীপুর জেলা, নরসিংদী ও নারায়ণগঞ্জে কারফিউ আরও শিথিল করা হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরীফ মাহমুদ প্রথম আলোকে জানান, এই এলাকাগুলোয় কারফিউ বলবৎ থাকবে। তবে আজ ও আগামীকাল সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত কারফিউ শিথিল থাকবে। অর্থাৎ দিনের বেলায় সাত ঘণ্টা কারফিউ শিথিল থাকবে। অন্যান্য জেলার ক্ষেত্রে নিজ নিজ কর্তৃপক্ষ (জেলা প্রশাসক) এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।

কারফিউ জারি হওয়ায় গত রোববার থেকে গতকাল পর্যন্ত সাধারণ ছুটি দিয়েছিল সরকার। কিন্তু কারফিউ শিথিল হওয়ার পর আজ থেকে সরকারি-বেসরকারি অফিসগুলো খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। তবে আজ-কাল স্বাভাবিক সময়ের মতো অফিস চলবে না।