রাষ্ট্র পুনর্গঠনের সুযোগ কোনোভাবেই যেন হারিয়ে না যায়: জবি উপাচার্য
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) উপাচার্য অধ্যাপক মো. রেজাউল করিম বলেছেন, ‘জুলাই বিপ্লবের মাধ্যমে আমরা আবারও রাষ্ট্র পুনর্গঠনের সুযোগ পেয়েছি। এ সুযোগ যেন কোনোভাবেই হারিয়ে না যায়। আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত একটি সুষ্ঠু, ন্যায়ভিত্তিক ও বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ে তোলা। এ জন্য প্রয়োজন সুশাসন, যোগ্য নেতৃত্ব এবং নাগরিক অধিকারের সুরক্ষা।’
আজ বৃহস্পতিবার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সাজিদ ভবনের ৭১২ নম্বর কক্ষে ‘জুলাই বিপ্লব ও আগামীর বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক আলোচনায় সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এ কথাগুলো বলেন। জুলাই বিপ্লবের প্রথম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারডিসিপ্লিনারি রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট কনসোর্টিয়াম (আইআরডিসি) এ আলোচনা সভার আয়োজন করে।
আলোচনা সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের ডিন মোহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান খান বলেন, বাংলাদেশের জনগণ স্বভাবতই ন্যায়নিষ্ঠ ও গণতান্ত্রিক চেতনার পক্ষপাতী। জুলাই বিপ্লব কোনো একক নেতৃত্বের সৃষ্টি নয়, বরং এটি ছিল ফ্যাসিবাদী শাসনের বিরুদ্ধে গণমানুষের সম্মিলিত জাগরণ।
সংস্কার নিয়ে রাজনৈতিক বিভাজনকে বিপ্লবের স্থায়িত্বের জন্য প্রধান চ্যালেঞ্জ হিসেবে উল্লেখ করে ছিদ্দিকুর রহমান বলেন, একটি টেকসই গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গির আমূল পরিবর্তন প্রয়োজন। সব স্তরের মানুষের মধ্যে সমন্বিত দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তোলা আগামী দিনের বড় চ্যালেঞ্জ।
আলোচনা সভায় যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়ার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক মীর্যা গালিব বলেন, জুলাই বিপ্লব ছিল দীর্ঘদিনের জমে থাকা গণ-অসন্তোষের এক প্রলম্বিত বিস্ফোরণ। এর পেছনে ছিল রাজনৈতিক অবক্ষয়, গণতন্ত্রের সংকোচন ও অর্থনৈতিক দুর্নীতির মতো নানা কারণ।
জুলাই বিপ্লবকে রাষ্ট্র পুনর্গঠনের সুযোগ হিসেবে উল্লেখ করে মীর্যা গালিব বলেন, ভবিষ্যতে একটি স্থিতিশীল গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠনের জন্য একটি সুস্পষ্ট জুলাই ঘোষণাপত্র প্রণয়ন, দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ গঠন, স্বচ্ছ ভোট গ্রহণ পদ্ধতির প্রচলন, বৈষম্যহীন সমাজব্যবস্থা এবং দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসনিক কাঠামো গড়ে তোলা অপরিহার্য।
আইআরডিসির সভাপতি ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ বিলাল হোসাইনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ সাবিনা শরমীন, শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো. মোশাররফ হোসেন উপস্থিত ছিলেন। আলোচনা সভা সঞ্চালনা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও আইআরডিসির সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক।
আলোচনা সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক, গবেষক ও শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। প্রশ্নোত্তর পর্বের মাধ্যমে অনুষ্ঠানটি শেষ হয়।