নীতিমালা থাকলেও ঘাটতি আছে প্রয়োগে

জেন্ডার বাজেট নিয়ে অনলাইন আলোচনায় বক্তব্য দেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম।

বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের উদ্যোগে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কমিশন অন দ্য স্ট্যাটাস অব উইমেনের (সিএসডব্লিউ) ৬৮তম অধিবেশনে ‘জেন্ডার সমতার জন্য অর্থায়ন: জেন্ডার বাজেট’ শিরোনামে অনলাইনে আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। মহিলা পরিষদের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এতে সঞ্চালক ছিলেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম। স্বাগত বক্তব্য দেন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক  মালেকা বানু। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ও সানেমের গবেষণা পরিচালক সায়মা হক। মডারেটরের বক্তব্যে ডা. ফওজিয়া মোসলেম ‘জেন্ডার গ্যাপ’ কমানোর জন্য আর্থিক নীতিমালা থাকা এবং এর বাস্তবায়নের জন্য প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থাপনার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

আলোচনায় অংশ নেন ছিলেন বাংলাদেশ উইমেন চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ড্রাস্ট্রির সভাপতি এবং নিটল-নিলয় গ্রুপের ভাইস চেয়ারপারসন সেলিমা আহমাদ, সিপিডির জ্যেষ্ঠ গবেষক তৌফিকুল ইসলাম খান, ঠেঙ্গামারা মহিলা সবুজ সংঘের প্রতিষ্ঠাতা হোসনে আরা বেগম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ও সানেমের নির্বাহী পরিচালক সেলিম রায়হান এবং নিউইয়র্কে জাতিসংঘের উন্নয়ন কর্মসূচির এশিয়া প্যাসিফিকের আঞ্চলিক ব্যুরোর পলিসি অ্যাডভাইজার নাজনীন আহমেদ।

স্বাগত বক্তব্যে মালেকা বানু বলেন, বাংলাদেশের সংবিধানের প্রেক্ষাপটে জেন্ডার রেসপনসিভ  নীতিমালা ও আইনগুলো প্রণয়ন করা হলেও উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় তা প্রয়োগে এখনো বেশ ঘাটতি রয়েছে। এটা বাংলাদেশের নারী আন্দোলনের জন্য উদ্বেগের কারণ। নারীর অগ্রগতিকে ত্বরান্বিত করতে জেন্ডার রেসপনসিভ বাজেট অত্যন্ত কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। এ জন্য জেন্ডার রেসপনসিভ বাজেটের সুনির্দিষ্ট বরাদ্দ, বাস্তবায়ন ও তদারকির জন্য সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে উদ্যোগ গ্রহণ করা দরকার। এটা বাস্তবায়নে নারী আন্দোলনের পক্ষ থেকে সরকারের সঙ্গে নিয়মিত পরামর্শ প্রক্রিয়া চালিয়ে যাওয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।

মূল প্রবন্ধে সায়মা হক বলেন, বিদ্যমান পিতৃতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গি এবং বিভিন্ন আর্থ-সামাজিক সূচকের পরিপ্রেক্ষিতে নারীদের পিছিয়ে থাকা অবস্থানের বিপরীতে ‘একটি জেন্ডার রেসপনসিভ বাজেট জেন্ডার গ্যাপ কমাতে সাহায্য করতে পারে।’

উপস্থিত অন্য বক্তারা বলেন, জেন্ডার সমতা প্রতিষ্ঠার জন্য জেন্ডার বাজেটকে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপায় হিসেবে বিবেচনা করতে হবে। এ ক্ষেত্রে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানও কাজ করছে। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য, কেয়ার অর্থনীতির জন্য, পোশাকশিল্পে কর্মরত নারীদের জন্য, কর্মস্থলে নিরাপত্তার ওপর জোর দিয়ে জেন্ডার লেন্সকে ব্যবহার করে বাজেট বরাদ্দের ক্ষেত্র বৃদ্ধি করতে হবে এবং প্রাতিষ্ঠানিকীকরণের ওপর জোর দিতে হবে। কর পরিশোধের ক্ষেত্র পরিমার্জন করতে হবে।

অনলাইন এই আলোচনায় কাউন্সিল অব উইমেনের উপদেষ্টা, আইডব্লিউপিজির প্রতিনিধিসহ বৈশ্বিক নারী আন্দোলনের প্রতিনিধি, উন্নয়ন সংস্থার প্রতিনিধি, সামাজিক প্রতিরোধ কমিটির সদস্য সংগঠনের প্রতিনিধি, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের কর্মকর্তারা অংশ নেন।