বিএনপি মাঠে নামিয়েছে বিবৃতিজীবী, কূটনীতিকদের: ওবায়দুল কাদের

রাজধানীর শ্যামলী স্কয়ার শপিং মলের সামনে আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের
ছবি: সংগৃহীত

বিএনপি তাদের পক্ষে কূটনীতিক, বিবৃতিদাতাদের মাঠে নামিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, ‘বিবৃতিদাতারা হত্যাকাণ্ড, নির্যাতন, লুণ্ঠন, অর্থপাচার ও তারেক জিয়ার নষ্ট রাজনীতিকে সমর্থন করছেন। দূতাবাসে নালিশ করছে, কিন্তু জনগণ ছাড়া কেউ ক্ষমতায় বসাতে পারবে না।’

আজ শুক্রবার রাজধানীর শ্যামলী স্কয়ার শপিং মলের সামনে আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন। ঢাকায় বিএনপির গণমিছিল সামনে রেখে এই সমাবেশের আয়োজন করে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, কূটনীতিকদের মাঠে নামিয়েছে বিএনপি। তারা মির্জা ফখরুলের মুক্তি চায়, তিনি নাকি অসুস্থ। তাঁর জন্য বিবৃতিজীবী, বুদ্ধিজীবীরা উদ্বিগ্ন। ১৫ আগস্ট, জাতীয় চার নেতা হত্যা, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা, শাহ এ এম এস কিবরিয়া ও আহসানউল্লাহ মাস্টার হত্যার সময় কী আপনারা বিবৃতি দিয়েছিলেন, উদ্বেগ জানিয়েছিলেন? আগুন–সন্ত্রাসের পক্ষে বিবৃতি দিচ্ছেন।

বিএনপির রাষ্ট্র মেরামতের রূপরেখা প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি রাষ্ট্রকে ধ্বংস করেছে। গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও স্বাধীনতার আদর্শকে হত্যা করেছে। বিএনপি নষ্ট রাজনীতি করে। তারা রাষ্ট্রকে মেরামত নয়, ধ্বংস করতে পারে।

বিষোদ্‌গার ও মিথ্যাচার ছাড়া বিএনপির আর কিছু নেই মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপি জীবনেও মেগা প্রকল্প করতে পারেনি। পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল হয়ে গেল, লজ্জায় বিএনপির মাথা হেঁট হয়ে যায়। পদ্মা সেতু দিয়ে তিন ঘণ্টায় খুলনায় যান সমাবেশ করতে, লজ্জা করে না? বিএনপির বুকে ব্যথা, আমরা পারলাম না, শেখ হাসিনা করে ফেলল।’  

ভোটের রাজনীতিতে হেরে বিএনপির নেতারা রেগে যাচ্ছেন মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, গোসসা করবেন না। আগামী জাতীয় নির্বাচনে জনগণ চতুর্থবারের মতো শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় আনবে। বিএনপি চেয়ে চেয়ে দেখবে, আর দীর্ঘশ্বাস ফেলবে। হতাশা ও দীর্ঘশ্বাস ছাড়া বিএনপির করার কিছু থাকবে না।

আগামী জাতীয় নির্বাচনকে ফাইনাল খেলা উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এই খেলা মানে মারামারি না, রাজনীতির খেলা। ফাইনাল খেলায় জনগণ বিএনপিকে লাল কার্ড দেখিয়ে বলবে, না, না, না, বিএনপিকে চাই না। দূতাবাসে নালিশ করে, কিন্তু জনগণ ছাড়া কেউ ক্ষমতায় বসাতে পারবে না। অনেক লাফালাফি, বাড়াবাড়ি করছে, ছেড়ে দেব না। আক্রান্ত হলে সমুচিত জবাব দেওয়া হবে।’

বিএনপির গণমিছিলের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ সাতটি স্থানে এবং দক্ষিণ আওয়ামী লীগ দুই স্থানসহ মোট ৯টি স্থানে সমাবেশ ও অবস্থান নেওয়ার ঘোষণা দেয়। জুমার নামাজের পর বিভিন্ন এলাকা থেকে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা মিছিল নিয়ে শ্যামলী শপিং মলের সামনে জড়ো হন। জমায়েত মিরপুর সড়কে চলে যায়। বিকেল পৌনে চারটায় ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের আগে নেতা-কর্মীদের ভিড়ে কিছুক্ষণের জন্য  সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ঢাকা আজ মিছিলের নগরী। ঢাকা আওয়ামী লীগের দখলে। হাওয়া ভবনের দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমরা প্রস্তুত। জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে আমরা প্রস্তুত। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে প্রস্তুত। স্বাধীনতাবিরোধী, লুটেরাদের রুখতে হবে।’

মোহাম্মদপুর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুস সাত্তারের সভাপতিত্বে সমাবেশে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ও মহানগরের নেতারা বক্তব্য দেন।