‘এক গ্রাহকের কাছে দুবার পানি বিক্রি করছে ওয়াসা’

বাংলাদেশ ওয়াটার ওয়ার্কস অ্যাসোসিয়েশনের আয়োজনে তিন দিনব্যাপী নিরাপদ পানি ব্যবস্থাপনার ওপর সেমিনারের প্রথম দিনে বক্তারাছবি: প্রথম আলো

এক গ্রাহকের কাছে দুবার পানি বিক্রি করছে ঢাকা ওয়াসা। একবার পাইপলাইনে। আরেকবার জারে (প্লাস্টিকের বড় বোতল) করে। রাজধানীতে নিরাপদ পানি ব্যবস্থাপনা নিয়ে এক সেমিনারে এমন মন্তব্য করেন বক্তারা।

রাজধানীর কুড়িলে আন্তর্জাতিক কনভেনশন সেন্টার বসুন্ধরায় আজ সোমবার দুপুরে এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাংলাদেশ ওয়াটার ওয়ার্কস অ্যাসোসিয়েশনের আয়োজনে তিন দিনব্যাপী নিরাপদ পানি ব্যবস্থাপনার ওপর সেমিনারের প্রথম দিন ছিল আজ। আজকের একটি সেশনে সমতাভিত্তিক ও নিরাপদ পানি নিশ্চিতে ঢাকা সিটির জন্য এলাকাভিত্তিক পানির মূল্য নির্ধারণের ওপর আলোচনা করা হয়।

আলোচনায় স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এম ফিরোজ আহমেদ বলেন, পানির দাম দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে। সবার জন্য একই হারে পানির দাম বাড়ানো ঠিক নয়। কারণ, তাতে নিম্ন আয়ের মানুষের ওপর চাপ তৈরি করে। ওয়াসা এলাকাভিত্তিক পানির দাম নির্ধারণ করতে পারে। যে এলাকার মানুষের জীবনযাপনের ব্যয় যে রকম, সেভাবে দাম নির্ধারণ করতে হবে। তবে মাথায় রাখতে হবে, যাতে নিম্ন আয়ের মানুষ কষ্টে না পড়েন।

বেসরকারি সংগঠন পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টারের (পিপিআরসি) সিনিয়র ফেলো মোহাম্মদ আবদুল ওয়াজেদ বলেন, ‘একসময় আমরা বলতাম, এমন একটা দেশে আছি, পানি আর পানি। কিন্তু ৩০ বছর পর পানি কিনে খেতে হবে, আগেও ভাবিনি। এখন সবাই বোতলের পানি খায়। ওয়াসাও এক গ্রাহকের কাছে দুবার পানি বিক্রি করছে।’

আলোচনায় অংশ নিয়ে ঢাকা ওয়াসার বাণিজ্যিক ব্যবস্থাপক উত্তম কুমার রায়ও এলাকাভিত্তিক পানির দাম নির্ধারণের পক্ষে মত দেন। তিনি বলেন, ওয়াসার পানির দাম নির্ধারণব্যবস্থা বদলাতে হবে। গুলশান, বনানী, বারিধারা, ধানমন্ডিতে যাঁরা বসবাস করেন, তাঁদের জীবনযাপন একরকম। অন্যদিকে যাত্রাবাড়ী, শনির আখড়া, কড়াইল বস্তিতে যাঁরা বাস করেন, তাঁদের জীবনযাপান অন্য রকম। ধনীদের পানির ব্যয় বেশি। তাঁদের জন্য দাম বাড়ানো দরকার।’

তবে এ এ বিষয়ে মোহাম্মদ আবদুল ওয়াজেদ বলেন, গুলশান বললে কি সেখানে সবাই ধনী বাস করেন? সবার কি এক রাস্তার মধ্যে একই রকম বাড়ি। তাই এগুলো খেয়াল করতে হবে। এ জন্য একটি কর্মপরিধি দরকার।

সভাপতির বক্তব্যে ওয়াটারএইড বাংলাদেশের পরিচালক (প্রোগ্রাম) হোসাইন ইশরাত বলেন, সবার জন্য নিরাপদ পানি ও পয়োনিষ্কাশন নিশ্চিত করা জরুরি। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার ৬ নম্বর লক্ষ্যে এটা গুরুত্বের সঙ্গে বলা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে সবার সচেতনতা প্রয়োজন।