মাসিক নিয়ে কুসংস্কার ভাঙতে চাই সামাজিক সচেতনতা

মাসিক স্বাস্থ্যবিধি দিবস দিবস উপলক্ষে এমএইচএম প্ল্যাটফর্ম অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছবি: ওয়াটারএইডের সৌজন্যে

মাসিক বা ঋতুস্রাব প্রজনন চক্রের সবচেয়ে প্রাকৃতিক এবং অপরিহার্য অংশগুলোর একটি। কিন্তু এখনো এটি সমাজে একটি নিষিদ্ধ বা ট্যাবু বিষয়। মাসিক নিয়ে সমাজে কুসংস্কারের জন্য দৈনন্দিন কাজে নারীদের তৎপরতা বাধাগ্রস্ত হয়। এই ট্যাবু ভাঙতে সচেতনতা বাড়াতে হবে।

মাসিক স্বাস্থ্যবিধি দিবস দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশের মাসিক স্বাস্থ্য এবং স্বাস্থ্যবিধি (এমএইচএম) প্ল্যাটফর্ম আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন। রাজধানীর একটি হোটেলে আজ মঙ্গলবার এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

প্রতিবছর ২৮ মে বিশ্বব্যাপী মাসিক স্বাস্থ্যবিধি দিবস পালন করা হয়। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য ‘আসুন, সবাই মিলে গড়ি#মাসিক-বান্ধব পৃথিবী।’

বাংলাদেশে নারী ও কিশোরীদের জন্য মাসিক স্বাস্থ্য উন্নয়ন এবং প্রচারে অবদান রেখেছেন এমন বিভিন্ন খাতের ব্যক্তিরা আজকের অনুষ্ঠানে অংশ নেন। এ আয়োজনে পরিবর্তনের গল্প, সরকারি অঙ্গীকার এবং উদ্ভাবনী সমাধান নিয়ে আলোচনা করা হয়।

অনুষ্ঠানটি শুরু হয় এমএইচএম প্ল্যাটফর্মের চেয়ারপারসন হাসিন জাহানের উদ্বোধনী ভাষণ দিয়ে। তিনি বাংলাদেশে মাসিক স্বাস্থ্য ও স্বাস্থ্যবিধি ব্যবস্থাপনার কার্যক্রমকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য সম্মিলিত প্রয়াসের ওপর গুরুত্ব দেন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (রোগনিয়ন্ত্রণ) শেখ দাউদ আদনান বলেন, কুসংস্কারের কারণে নারীরা মাসিকের সময় অস্বাস্থ্যকরভাবে মাসিক ব্যবস্থাপনা করেন। ফলে তাঁরা বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হন।

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) এ কিউ এম শফিউল আজম বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে এক হাজার স্কুলে শুরু হওয়া “জেনারেশন ব্রেকথ্রু” প্রোগ্রামটি ২০২২ সালে প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন পেয়েছে। যা কিশোর-কিশোরীদের স্বাস্থ্য ও উন্নয়নের প্রতি আমাদের অঙ্গীকারের কথা বলে।’

অনুষ্ঠানের একটি বিশেষ পর্ব ছিল যুব ও কিশোর সম্মিলন। এখানে তরুণ অংশগ্রহণকারীরা মাসিক স্বাস্থ্যের বিষয়ে তাদের মতামত ও অভিজ্ঞতা প্রকাশ করার সুযোগ পায়।

এমএইচএম প্ল্যাটফর্মের চলমান উদ্যোগগুলো নিয়েও এ অনুষ্ঠানে আলোচনা হয়। এই উদ্যোগগুলোর মধ্যে রয়েছে একটি ব্যাপক মোবাইলভিত্তিক এমএইচএম অ্যাপ্লিকেশন। সফল অ্যাডভোকেসি যা স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত স্যানিটারি প্যাডের ওপর থেকে ভ্যাট মওকুফের ব্যবস্থা করতে পেরেছে।

অনুষ্ঠানে পরিবর্তনমূলক গল্প তুলে ধরেন নেদারল্যান্ডস দূতাবাসের সিনিয়র পলিসি অ্যাডভাইজার মুশফিকা জামান এবং সিমাভির কান্ট্রি কোঅর্ডিনেটর অলক কুমার মজুমদার।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন স্থানীয় সরকার বিভাগের যুগ্ম সচিব মোহাম্মদ শামীম আলমসহ অনেকে। উল্লেখ্য, নারীদের নিরাপত্তা এবং মর্যাদার সাথে মাসিক ব্যবস্থাপনার জন্য নীতিগত ও পদ্ধতিগত সমাধানের পাশাপাশি মাসিকের প্রয়োজনীয় উপকরণের সহজলভ্যতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ২০১৭ সালে এমএইচএম প্ল্যাটফর্ম গঠিত হয়।