যুবলীগ নেতার কবজি বিচ্ছিন্নের মামলার আসামি গ্রেপ্তার

যুবলীগ নেতা আলমগীর হোসেনের কবজি বিচ্ছিন্ন হওয়ার ঘটনায় ওমর আশরাফ ফারুক নামের একজনকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব
ছবি: র‌্যাবের সৌজন্যে

রাজধানীর ওয়ারীতে দুর্বৃত্তের হামলায় আলমগীর হোসেন নামের এক যুবলীগ নেতার হাতের কবজি বিচ্ছিন্ন হওয়ার ঘটনার মামলায় এক আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। গ্রেপ্তার হওয়া মামলার ৭ নম্বর আসামির নাম ওমর আশরাফ ফারুক। গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুরের সাতমাথা এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। র‌্যাব বলেছে, গ্রেপ্তার ওমর আশরাফ ফারুক এ ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। তবে তাঁর কী ভূমিকা ছিল, এ বিষয়ে নিশ্চিত কোনো তথ্য র‌্যাবের পক্ষ থেকে জানানো হয়নি।

গত শনিবার রাত পৌনে আটটার দিকে ওয়ারীর গোপীবাগের সপ্তম গলিতে দুর্বৃত্তরা আলমগীরের ওপর অতর্কিত হামলা করে হাতের কবজি বিচ্ছিন্ন করে। ঘটনার দুই দিন পর সোমবার ওয়ারী থানায় মামলা করেন আলমগীরের মা বেদেনা খাতুন। মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ওয়ারীর আর কে মিশন রোডসংলগ্ন রেললাইনের অস্থায়ী বাজার নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে দুর্বৃত্তরা আলমগীরের ওপর হামলা চালিয়েছে। তিনি ঢাকার ৩৯ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের প্রস্তাবিত কমিটির সহসভাপতি।

র‌্যাব-১০–এর সহকারী পরিচালক এনায়েত কবীর শোয়েব প্রথম আলোকে বলেন, এজাহারে নাম থাকা আসামি হিসেবে ওমর আশরাফকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি এ ঘটনায় সম্পৃক্ত থাকার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। ঘটনায় তাঁর কী ভূমিকা ছিল, এ বিষয়ে তদন্তকারী কর্মকর্তারা বলতে পারবেন।

মামলার এজাহারের তথ্য বলছে, আলমগীরের বাড়ি আর কে মিশন রোডে। বাসার পাশেই রেললাইন। রেললাইনের দুই পাশে অস্থায়ী দোকানপাট ও বাজার বসা নিয়ে প্রবাসী নাসির উদ্দিনের সহযোগীদের সঙ্গে তাঁর বিরোধ চলছিল। এই বিরোধের জের ধরে নাসিরের লোকজন আলমগীরের ওপর অতর্কিত হামলা করেছেন। এজাহারে নাসির এবং তাঁর আট সহযোগীর নাম উল্লেখ করে মামলা হয়েছে। এ ছাড়া ওই মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও দুই–তিনজনকে আসামি করা হয়েছে।

আলমগীর হোসেনের মেয়ে আঁখি আলমগীর প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা এ ঘটনায় কোনো মামলা করেননি। পুলিশ তাঁর ৮০ বছর বয়সী দাদির (আলমগীরের মা) কাছ থেকে টিপ সই নিয়েছে। বলেছে, টিপ সই না দিলে সমস্যা হবে। এ কারণে তাঁর দাদি টিপ সই দিয়েছেন। তিনি তো এই ঘটনা সম্পর্কে কিছু জানেন না।

ওয়ারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কবীর হোসেন হাওলাদার প্রথম আলোকে বলেন, র‌্যাবের হাতে গ্রেপ্তার ওমর ফারুক আশরাফের দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। এ বিষয়ে তাঁকে বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। আর আলমগীরের পরিবার থানায় এজাহার পাঠিয়ে মামলা করেছে। তাঁরা নিজেরাই মামলাটি করেছেন।

আলমগীরের কবজি জোড়া লেগেছে কি না, জানতে চাইলে আঁখি আলমগীর বলেন, অস্ত্রোপচার করে কবজি জোড়া লাগানো হয়েছে। তবে সেটি কাজ করছে কি না, তা বুঝতে আরও সময় লাগবে। আলমগীর হোসেন এখন একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বলে জানান তাঁর মেয়ে।

কবজি বিচ্ছিন্নের ঘটনার দিন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আলমগীর হোসেন প্রথম আলোকে বলেছিলেন, তিনি স্থানীয় একটি মসজিদে যাচ্ছিলেন। এ সময় দুজন চাপাতি নিয়ে হামলা চালান। তাঁর কবজি বিচ্ছিন্ন হওয়ার পাশাপাশি ডান পায়ে কোপ লাগে। হামলাকারী দুজনকে আগে কখনো দেখেননি। তবে এখন দেখলে তাঁদের চিনতে পারবেন।