বাড়ছে গরম, বাড়ছে লোডশেডিং, ভোগান্তিতে মানুষ

গরম থেকে স্বস্তি পেতে পানি পান করছে এক শিশু শিক্ষার্থী। চট্টগ্রামের জামালখান মোড় থেকে গতকাল ছবিটি তোলা
ছবি: প্রথম আলো

রাজধানীতে আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই বিভিন্ন এলাকায় এক ঘণ্টা পরপর লোডশেডিং চলছে। গতকাল বুধবার মধ্যরাত থেকে আজ ভোর পর্যন্ত বারবার বিদ্যুৎ চলে যাওয়ায় গরমে ভোগান্তিতে পড়েছেন মানুষ। বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থায় ফোন করে অভিযোগ জানাচ্ছেন অনেকে।

শুধু রাজধানী নয়, ময়মনসিংহ, খুলনা, রাজশাহীর বিভিন্ন গ্রামে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লোডশেডিং হচ্ছে। ঢাকার আশপাশের এলাকাতেও তিন থেকে চার ঘণ্টার লোডশেডিংয়ে ভুগছে মানুষ।

গরম থেকে বাঁচতে মাথাল পড়ে রিকশা চালাচ্ছেন এক চালক। পান্থপথ, ঢাকা, ১ জুন।
ছবি: জাহিদুল করিম

আজ সকাল ১০টায় বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থা ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি (ডেসকো) ১৮৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কম সরবরাহ পেয়েছে। একই সময়ে ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ডিপিডিসি) কম সরবরাহ পেয়েছে ৩৫০ মেগাওয়াটের মতো।

দুই বিতরণ সংস্থা বলছে, চাহিদা ও সরবরাহের ঘাটতি সমন্বয় করতে নিয়মিত লোডশেডিং করতে হচ্ছে। ঢাকা শহরে গতকাল গড়ে তিন ঘণ্টার বেশি লোডশেডিং করেছে দুই বিতরণ সংস্থা।

টানা তিন দিন ধরে বয়ে চলা তাপপ্রবাহের কারণে গরমে জনজীবন অতিষ্ঠ। এতে বিদ্যুতের চাহিদা বেড়ে গেছে। কিন্তু জ্বালানির অভাবে পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যাচ্ছে না। তাই গরমের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে লোডশেডিং।  ভোগান্তিতে পড়েছে মানুষ।

আরও পড়ুন
তালের শাঁস ঠান্ডা রাখতে ছাতা দিয়ে ঢেকে রেখেছেন এক ফল বিক্রেতা। পান্থপথ, ঢাকা, ১ জুন
ছবি: জাহিদুল করিম

আবহাওয়াবিদেরা বলছেন, ৮ বা ৯ জুন বিচ্ছিন্নভাবে বৃষ্টি হতে পারে। অর্থাৎ ৭ জুন পর্যন্ত দেশের তাপমাত্রা বেশি থাকার আশঙ্কা রয়েছে। এর মধ্যে ৩ জুন পুরোপুরি উৎপাদন বন্ধ করে দিতে পারে দেশের সবচেয়ে বড় বিদ্যুৎকেন্দ্র পটুয়াখালীর পায়রা।

এতে লোডশেডিং আরও বাড়তে পারে। কয়লার অভাবে এখন উৎপাদন হচ্ছে সক্ষমতার অর্ধেকের চেয়ে কম। ৬০০ মেগাওয়াট করে উৎপাদন করছে কেন্দ্রটি।

বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, গরম না কমায় বিদ্যুৎ পরিস্থিতিরও আরও অবনতি হয়েছে। চাহিদা যত বাড়ছে, ঘাটতিও তত বাড়ছে।

বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ সঞ্চালনের একমাত্র রাষ্ট্রীয় সংস্থা পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ (পিজিসিবি) বলছে, গতকাল বুধবার মধ্যরাতে লোডশেডিং আড়াই হাজার মেগাওয়াট ছাড়িয়ে গেছে। রাতভর প্রতি ঘণ্টায় দুই হাজার মেগাওয়াটের বেশি করে লোডশেডিং হয়েছে।

আরও পড়ুন

তবে গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুৎ সরবরাহকারী দেশের ছয়টি বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থার তথ্য বলছে, গতকাল রাতে লোডশেডিং হয়েছে তিন হাজার মেগাওয়াটের কাছাকাছি। দেশের সবচেয়ে বড় বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থা পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি) গতকাল দুপুর ১২টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত দেড় হাজার মেগাওয়াট করে লোডশেডিং করেছে প্রতি ঘণ্টায়। সন্ধ্যার পর এটি আরও কিছুটা বেড়েছে। আজ সকাল ১০টায় তারা সরবরাহ কম পেয়েছে ১ হাজার ৭০০ মেগাওয়াট।

গতকাল বিকেল চারটায় ডিপিডিসির বিদ্যুৎ চাহিদা ছিল ১ হাজার ৯০৫ মেগাওয়াট। চাহিদার চেয়ে ৩২৪ মেগাওয়াট কম সরবরাহ পেয়েছে তারা। আর একই সময়ে ডেসকোর চাহিদা ছিল ১ হাজার ২৭৯ মেগাওয়াট। তারা সরবরাহ কম পেয়েছে ১৭৯ মেগাওয়াট। মঙ্গলবারের চেয়ে বুধবার লোডশেডিং বেড়েছে চাহিদা বাড়ায়। আজ এটি আরও বাড়তে পারে।