ডেঙ্গুর চিকিৎসায় অস্থায়ী মেডিকেল ক্যাম্প স্থাপনের দাবি জুরাইনের বাসিন্দাদের

রাজধানীর জুরাইন এলাকায় ডেঙ্গু পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় সমাবেশ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। শুক্রবার বিকেলে জুরাইন এলাকায়
ছবি: প্রথম আলো

রাজধানী পূর্ব জুরাইনে ডেঙ্গু ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে বলে জানিয়েছেন এলাকাটির বাসিন্দারা। তাঁরা বলেছেন, পূর্ব জুরাইনে প্রতিটি ঘরে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগী রয়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে সেখানে অস্থায়ী মেডিকেল ক্যাম্প স্থাপনের দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।

শুক্রবার বিকেলে পূর্ব জুরাইনের মিষ্টির দোকান এলাকায় স্থানীয় বাসিন্দারা এক সমাবেশে এ দাবি জানান। ‘আমরা জুরাইনবাসী ডেঙ্গু থেকে বাঁচতে চাই’ শিরোনামে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়। শতাধিক মানুষ সেখানে অংশ নেন।

সমাবেশে এলাকার বাসিন্দারা বলেন, প্রতিটি ঘরেই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগী রয়েছেন। রক্ত দিতে দিতে এলাকার তরুণেরা ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন। সিটি করপোরেশনের দায়িত্বহীনতার কারণে জুরাইনে ডেঙ্গু মহামারির আকার ধারণ করেছে।

ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের মধ্যে পূর্ব জুরাইনে দরিদ্র মানুষের বেশি বসবাস উল্লেখ করে জনসভায় বলা হয়, এ এলাকার দরিদ্র মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ঘরে শুয়ে আছেন। তাঁদের চিকিৎসা করার সামর্থ্য নেই। এ এলাকায় অস্থায়ী মেডিকেল ক্যাম্প স্থাপন করে বিনা মূল্যে চিকিৎসাসেবা দিতে হবে।

আবুল বাসার নামের স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, প্রতিদিন এ এলাকায় এক–দুজন মানুষ মারা যাচ্ছেন। পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে যে রক্ত দেওয়ার জন্য মানুষ পাওয়া যাচ্ছে না। তাই দ্রুত সিটি করপোরেশনকে ব্যবস্থা নিতে হবে। অন্যথায় তাঁরা কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবেন।

পবিত্র ঈদুল আজহার পরদিন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে জুরাইনে এক নারী মারা যান। তাঁর স্বামী সাড়ে তিন বছরের সন্তানকে কোলে নিয়ে সমাবেশে অংশ নেন। তিনি বলেন, ‘আমার বাচ্চার মা যেভাবে মারা গেছে, অন্য বাচ্চার মা যাতে না মারা যান, সে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করছি।’ আরেক বাসিন্দা হারুনুর রশীদ বলেন, রাজধানীতে ডেঙ্গুর যে পরিস্থিতি, তাতে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা উচিত।

সমাবেশে কর্মসূচির ঘোষণাও দেওয়া হয়। স্থানীয় বাসিন্দা ফেরদৌস রহমান বলেন, তাঁরা দুটি দাবি নিয়ে দাঁড়িয়েছেন। প্রথমটি, পূর্ব জুরাইনে অস্থায়ী হাসপাতাল করতে হবে। দ্বিতীয় দাবি, ওষুধ ছিটানোর কার্যক্রম বাড়িয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে। এক সপ্তাহের মধ্যে পরিস্থিতির উন্নতি না হলে জুরাইনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হবে। প্রয়োজনে নগর ভবনের সামনে গিয়ে অবস্থান কর্মসূচি করা হবে।