ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাঁচটি মৃত বিড়াল উদ্ধার, শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের পুকুরপাড় থেকে গলাকাটা চারটি বিড়ালছানা উদ্ধার হয়েছে
ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস এলাকা থেকে পাঁচটি মৃত বিড়াল উদ্ধার হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, বিড়ালগুলোকে হত্যা করা হয়েছে। দুটি আবাসিক হল থেকে বৃহস্পতিবার বিড়ালগুলো উদ্ধার করা হয়। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ক্ষোভ জানাচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অনেকে।

বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের পুকুরপাড় থেকে চারটি ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল থেকে একটি বিড়ালের মরদেহ উদ্ধার হয়।

শুক্রবার মৃত বিড়ালের ছবি দিয়ে ফেসবুকে পোস্ট দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী। এভাবে বিড়াল হত্যার ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের মানবিকতাবোধ নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন শিক্ষার্থীরা। তবে এ ঘটনায় কে বা কারা জড়িত, সে বিষয়ে শিক্ষার্থী বা হল কর্তৃপক্ষ কেউই কিছু জানেন না বলছেন।

এদিকে বিড়াল ধরা নিয়ে একটি কাগজ ছড়িয়ে পড়েছে অনলাইনে। তাতে লেখা, ‘হলের সব আবাসিক ছাত্রীদের জানানো যাচ্ছে যে আগামী রোববার বিড়াল ধরা হবে। ছাত্রীদের সব ধরনের সাহায্য ও সহযোগিতা করার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। নির্দেশক্রমে—হল কর্তৃপক্ষ।’

বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল কর্তৃপক্ষ এই নোটিশ দিয়েছিল দাবি করে একাধিক ফেসবুক পোস্টে তার সমালোচনা করা হয়েছে। তবে হল প্রাধ্যক্ষ নিলুফার পারভীন বলেছেন, এমন কোনো নোটিশ দেওয়া হয়নি। এটি ভুয়া।

বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল থেকে উদ্ধার বিড়ালছানা
ছবি: সংগৃহীত

প্রাণী নিয়ে কাজ করা অ্যানিমেল ওয়েলফেয়ার টিম অব ঢাকা ইউনিভার্সিটি নামের এক ফেসবুক পেজে শুক্রবার দেওয়া এক পোস্ট বঙ্গমাতা হল থেকে উদ্ধার একটি বিড়ালের ছবি প্রকাশ করা হয়।

পোস্টে লেখা হয়, ‘বঙ্গমাতা হলের বিড়ালটি গতকালও (বৃহস্পতিবার) সুস্থ–সবল ছিল। বিড়ালটি হলের কেউ মেরে ফেলেছে বলে হলেরই এক আপু (ছাত্রী) জানিয়েছেন। কী নোংরা মানসিকতা!’

বিড়াল হত্যার প্রতিবাদে সরব হতে আহ্বান জানানো হয় ওই ফেসবুক পোস্টে।
বিশ্ববিদ্যালয়ভিত্তিক একটি ফেসবুক গ্রুপে চারটি মৃত বিড়ালছানার ছবি দিয়ে কবি জসীমউদ্‌দীন হলের ছাত্র জাহিদ হাসান লিখেছেন, ‘জসীমউদ্‌দীন হল মাঠের উত্তর পাশে (বঙ্গবন্ধু হলের পুকুরপাড়) বিড়ালের বাচ্চাগুলোকে কে যেন মেরে রেখে গেছে।

গতকাল (বৃহস্পতিবার) সন্ধ্যায়ও হলের বাগানে বাচ্চাগুলোকে দেখে সেগুলোর ছবি তুলে রাখি। আজ দেখছি, বাচ্চাগুলোকে মেরে ফেলা হয়েছে। নিজেকে অপরাধী মনে হচ্ছে। সঙ্গে সঙ্গে পোস্ট দিয়ে নিরাপদ জায়গায় রেখে দিলে হয়তো এমনটা হতো না। মনে হয় জসীমউদ্‌দীন হলের যেকোনো কর্মচারীই এই কাজটা করেছে।’

একই ছবি দিয়ে আমিরুল ইসলাম নামের এক ছাত্র লিখেছেন, ‘চারটি বিড়ালছানাকে জবাই করে পুকুরপাড়ে রেখে গেল! মা বিড়ালটি রাত চারটায়ও বারবার এসে তার মৃত ছানাদের পাশে অঝোরে কান্না করছে! এ কেমন সাইকো (মানসিক রোগী)? কী অপরাধ ছিল এ নিষ্পাপ প্রাণীর?’

বিড়াল মেরে ফেলার এ ঘটনাকে ন্যক্কারজনক বলেছেন জসীমউদ্‌দীন হলের প্রাধ্যক্ষ মোহাম্মদ শাহিন খান। এ ঘটনায় হলের কেউ জড়িত থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।