নতুন সংগঠন গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তির ঘোষণা দিয়ে ফেরার পথে হামলার শিকার নেতা–কর্মীরা

হামলার শিকার ছাত্রশক্তির আহ্বায়ক ও ডাকসুর সাবেক সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেন
ছবি: প্রথম আলো

নতুন ছাত্রসংগঠন গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তির আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠান শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ছাড়ার সময় হামলার শিকার হয়েছেন সংগঠনটির নেতা-কর্মীরা৷ এতে নবগঠিত ছাত্রশক্তির আহ্বায়ক ও ডাকসুর সাবেক সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেনসহ অন্তত ১১ জন আহত হয়েছেন। তাঁদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

আজ বুধবার বেলা দেড়টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে পরমাণু শক্তি কমিশনের সামনে এই হামলার ঘটনা ঘটে। হামলায় জড়িত ব্যক্তিরা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী বলে অভিযোগ করেছেন আক্রান্তরা। তবে ছাত্রলীগ হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

আখতার হোসেন ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নেতৃত্বাধীন গণ অধিকার পরিষদের ছাত্রসংগঠন ছাত্র অধিকার পরিষদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি ছিলেন। ২০২১ সালের ১৭ মার্চ থেকে চলতি বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এই পদে ছিলেন তিনি। পরে চলতি বছরের জানুয়ারিতে তিনি ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি হয়েছিলেন। লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতির অভিযোগ তুলে গত ২৬ জুলাই ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সহসভাপতির পদ ছাড়েন আখতার হোসেন।

আজ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ক্যাম্পাসের ডাকসু ভবনের সামনে সংবাদ সম্মেলন করে গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তি নামে নতুন ছাত্রসংগঠনের ঘোষণা দেন আখতার হোসেনসহ অন্যরা। নবীন এই সংগঠনের কেন্দ্রীয় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার কমিটিও ঘোষণা করা হয় সেখানে। ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হকের একসময়ের সহযোগীদের উদ্যোগে গঠিত এই সংগঠন নতুন ধারার ছাত্ররাজনীতির প্রতিশ্রুতি দেয়। সংবাদ সম্মেলনের পর ডাকসু ভবনের সামনে থেকে রাজু ভাস্কর্য পর্যন্ত পদযাত্রা করেন নেতা-কর্মীরা৷ পরে সেখানে একটি সমাবেশও করা হয়। সমাবেশ শেষে ক্যাম্পাস থেকে ফেরার পথে পরমাণু শক্তি কমিশনের সামনে ছাত্রশক্তির নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা হয়৷

এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ছাত্রশক্তির পক্ষ থেকে বলা হয়, উদ্বোধন কর্মসূচি ও পদযাত্রা থেকে ফেরার পথে পরমাণু শক্তি কমিশনের সামনে কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক আখতার হোসেন, যুগ্ম আহ্বায়ক লুৎফর রহমান, যুগ্ম সদস্যসচিব নুসরাত তাবাসসুম, যুগ্ম সদস্যসচিব আসাদুল্লাহ আল গালিব, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক ফয়সাল হাসান, নুসাইবা তাসনিম, যুগ্ম সদস্যসচিব আবদুল হান্নান মাসউদ, সদস্য নিশিতা জামান, আবদুল্লাহ আল মাহমুদ, সুমনা শারমিন ও সাদিয়া ইয়াসমিনের ওপর ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতের অনুসারী হিসেবে পরিচিত কিছু নেতা-কর্মী একযোগে হামলা চালান। হামলায় আহত আখতার হোসেনসহ গুরুতর আহতদের ঢাকা মেডিকেলের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়েছে।

এই হামলাকে ‘বর্বরোচিত’ উল্লেখ করে এর নিন্দা জানানো হয় বিজ্ঞপ্তিতে। হামলার সঙ্গে জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় এনে যথাযথ শাস্তি নিশ্চিত করার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতি আহ্বানও জানানো হয় এতে।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১০-১২ জন আহত হয়ে হাসপাতালে এসেছেন। তবে আখতার ছাড়া অন্যদের আঘাত গুরুতর নয়। তাঁর ঠোঁট ও মুখ থেকে রক্তক্ষরণ হয়েছে।

গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তির নেতা–কর্মীদের ওপর হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ছাত্রলীগের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘ছাত্রলীগের কেউ এর সঙ্গে জড়িত থাকলে আমরা সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেব।’