আমানের আত্মসমর্পণ ঘিরে বিএনপির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া

পুলিশ ধাওয়া দিয়ে বিএনপির নেতা-কর্মীদের ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালত প্রাঙ্গণ থেকে বের করে দেয়
ছবি: প্রথম আলো

ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালত প্রাঙ্গণে বিএনপির নেতা আমানউল্লাহ আমানের কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে পুলিশের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। আজ রোববার বেলা ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমানউল্লাহ দুপুর ১২টা ২০ মিনিটের দিকে আত্মসমর্পণ করার জন্য আদালত চত্বরে আসেন। পরে তিনি ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১-এ আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১-এর বিচারক আবুল কাসেম বেলা সোয়া একটার দিকে তাঁর জামিন আবেদন নাকচ করে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালত প্রাঙ্গণে জড়ো হওয়ার চেষ্টা করলে বিএনপির নেতা-কর্মীদের বাধা দেয় পুলিশ
ছবি: প্রথম আলো

এর আগে আমানউল্লাহর আত্মসমর্পণকে ঘিরে সকাল থেকে বিএনপির নেতা-কর্মীরা আদালত প্রাঙ্গণে জড়ো হতে শুরু করেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বেলা ১১টার দিকে পুলিশের পক্ষ থেকে বিএনপির নেতা-কর্মীদের আদালত প্রাঙ্গণ থেকে বের হয়ে যাওয়ার অনুরোধ করা হয়। তবে বিএনপির নেতা-কর্মীরা তাতে কর্ণপাত করেননি। একপর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতা-কর্মীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পুলিশ লাঠিপেটা করে বিএনপির নেতা-কর্মীদের আদালত চত্বর থেকে বের করে দেয়।

এ ব্যাপারে কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবু সাঈদ চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, বেলা ১১টার আগে বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা সাদা পোশাক পরে আদালত প্রাঙ্গণে জড়ো হন। তাঁদের আদালত থেকে বের হয়ে যেতে বললেও তাঁরা তা করেননি। উল্টো তাঁরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোড়েন। একপর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে তাঁদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।

আরও পড়ুন

সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় আমানউল্লাহকে ১৩ বছর ও তাঁর স্ত্রী সাবেরাকে বিচারিক আদালতের দেওয়া রায়ে ৩ বছরের কারাদণ্ড বহাল রেখে গত ৩০ মে রায় দেন হাইকোর্ট। এ রায়ের অনুলিপি বিচারিক আদালত গ্রহণের ১৫ দিনের মধ্যে আমানউল্লাহ ও সাবেরাকে সংশ্লিষ্ট আদালতে আত্মসমর্পণ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়। গত ৭ আগস্ট পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়।


নির্দেশনা অনুসারে, ৩ সেপ্টেম্বর সংশ্লিষ্ট আদালতে আত্মসমর্পণ করেন সাবেরা। ঢাকার বিশেষ জজ-১ আদালত তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে ৪ সেপ্টেম্বর লিভ টু আপিল করে সাবেরা জামিন চান।

গত মঙ্গলবার সাবেরার জামিন মঞ্জুর করেন আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম।

সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে আমান দম্পতির বিরুদ্ধে ২০০৭ সালের ৬ মার্চ রাজধানীর কাফরুল থানায় মামলা করে দুদক। একই বছরের ২১ জুন সংসদ ভবনে স্থাপিত বিশেষ জজ আদালতের রায়ে আমানকে ১৩ বছরের (পৃথক ধারায় ১০ ও ৩ বছর) ও সাবেরাকে ৩ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এ রায়ের বিরুদ্ধে তাঁরা হাইকোর্টে আপিল করেন। ২০১০ সালে ১৬ আগস্ট হাইকোর্ট আপিল মঞ্জুর করে তাঁদের খালাস দেন।

আরও পড়ুন

এ রায়ের বিরুদ্ধে দুদক আপিল বিভাগে আবেদন করে। এর শুনানি শেষে ২০১৪ সালের ২৫ মে আপিল বিভাগ খালাসের রায় বাতিল করে হাইকোর্ট আপিল পুনঃশুনানি করতে নির্দেশ দেন। পুনঃশুনানি শেষে আমান দম্পতির আপিল খারিজ করে বিচারিক আদালতের দেওয়া দণ্ড বহাল রেখে গত ৩০ মে ওই রায় দেন হাইকোর্ট।