বিয়ের পিঁড়িতে বসা হলো না সানজিদার

সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সানজিদা আক্তার
ছবি: সংগৃহীত

কানাডাপ্রবাসী এক পাত্রের সঙ্গে বিয়ে ঠিক হয় সানজিদা আক্তারের। পবিত্র ঈদুল ফিতরের পর পাত্রের দেশে আসার কথা। কিন্তু সানজিদার আর বিয়ের পিঁড়িতে বসা হবে না। গত শুক্রবার রাতে রাজধানীর লালবাগে কাভার্ড ভ্যানের চাপায় প্রাণ হারিয়েছেন তিনি।

সানজিদা আক্তার নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএর শিক্ষার্থী ছিলেন। তাঁর গ্রামের বাড়ি নোয়াখালীতে। পরিবারের সঙ্গে থাকতেন কামরাঙ্গীরচরে। সানজিদার দুই ভাই। এক ভাই ব্যবসা করেন, অন্য ভাই প্রবাসী।

পুলিশ সূত্র জানায়, শুক্রবার রাতে সানজিদা ধানমন্ডি থেকে রাইড শেয়ারিংয়ের মোটরসাইকেলে করে বাসায় যাচ্ছিলেন। রাত পৌনে ১০টার দিকে লালবাগ থানার কাছে বেড়িবাঁধ এলাকায় সেটিকে পেছন থেকে একটি কাভার্ড ভ্যান ধাক্কা দেয়। এতে সানজিদা মোটরসাইকেল থেকে ছিটকে পড়েন। এ সময় কাভার্ড ভ্যানের চাপায় তিনি ঘটনাস্থলেই মারা যান। পরে তাঁর মরদেহ উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

রাজধানীর লালবাগ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আক্তার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, সানজিদার মৃত্যুর ঘটনায় কাভার্ড ভ্যানের চালক শামীম (২৫) ও মোটরসাইকেলের চালক মেহেদী হাসানকে (৩০) গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

সানজিদার স্বজনেরা বলেন, সানজিদাদের পরিবার থাকত রাজধানীর কাঁঠালবাগানে। করোনা–পরবর্তী সময়ে আর্থিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁরা চলে যান কামরাঙ্গীরচরে। সেখানকার ভাড়া বাসায় বাবা–মায়ের সঙ্গে থাকতেন তিনি। গত শুক্রবার কলাবাগানে এক পরিচিতজনের বাসায় ইফতার শেষে তিনি বাসায় ফিরছিলেন।

পুলিশ জানায়, রাত ১০টার দিকে সানজিদার মুঠোফোনে কল করেন তাঁর অসুস্থ মা লাকি আক্তার। তখন পুলিশের পক্ষ থেকে থানায় যোগাযোগ করতে বলা হয়। পরে থানায় আসেন সানজিদার স্বজনেরা।

সানজিদার মামা জয়নাল আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, সানজিদার মা লাকি আক্তার ক্যানসারে আক্রান্ত। বাবা আবু তাহেরও অসুস্থ। সানজিদাই তার মা–বাবাকে দেখাশোনা করে। আকস্মিক এ মৃত্যুর সংবাদ সানজিদার মাকে জানানো হয়নি। ময়নাতদন্ত শেষে সানজিদার মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।