তথ্য জানালে ১৫ মিনিটের মধ্যে মশার লার্ভা ধ্বংস করে দেবে ঢাকা দক্ষিণ সিটি
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস আশ্বাস দিয়েছেন, ডেঙ্গু জ্বরের বাহক এডিস মশার প্রজননস্থল সম্পর্কে তথ্য দিলে ১৫ মিনিটের মধ্যে করপোরেশনের কর্মীরা সেখানে যাবেন। মেয়র বলেছেন, করপোরেশনের মশককর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে মশার প্রজননস্থল নির্মূল করবেন।
আজ বুধবার দুপুরে রাজধানীর ওয়ারী এলাকার ফকির চান কমিউনিটি সেন্টারে ‘৪১ নম্বর ওয়ার্ডের উন্নয়ন উৎসব’–এ অংশ নিয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শেখ ফজলে নূর তাপস এই ঘোষণা দেন।
এ প্রসঙ্গে ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়র আরও বলেন, ‘আমার যে অঙ্গীকার, প্রতিশ্রুতি আমি নির্দ্বিধায় বলতে পারি, যদি আপনারা তথ্য দেন, স্টপ ওয়াচে ১৫ মিনিট সময় নেবেন, ইনশা আল্লাহ আমার মশককর্মী সেই জায়গায় উপস্থিত হয়ে যাবে। ডেঙ্গু রোগ প্রতিরোধে এডিস মশার প্রজননস্থল নির্মূল করবে। আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে আমি সেই প্রতিশ্রুতি দিতে পারি। এর কোনো ব্যত্যয় হবে না।’
দক্ষিণ সিটি জানিয়েছে, ডেঙ্গু রোগ প্রতিরোধ ও এডিস মশার প্রজননস্থল নিয়ন্ত্রণে করপোরেশনের প্রধান কার্যালয় নগর ভবনে যে কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণকক্ষ স্থাপন করা হয়েছে, তার ফোন নম্বর হলো ০১৭০৯৯০০৮৮৮। বাসিন্দাদের এই নম্বরে কল করে তথ্য জানাতে বলেছে সংস্থাটি।
এডিস মশার প্রজননস্থল নির্মূলে জনগণের সহযোগিতা কামনা করে মেয়র শেখ তাপস বলেন, ‘ডেঙ্গু এখন সারা বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে। আমরা প্রতিদিনের পরিসংখ্যান নিয়ে দেখেছি যে সারা বাংলাদেশে এখন দৈনিক প্রায় তিন হাজার রোগী হয়। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় গত সাত দিনে গড়ে পঞ্চাশের বেশি রোগী পাওয়া যায়নি। গতকাল আমরা রোগী পেয়েছি ৫২ জন। এর আগের দিন আমরা পেয়েছি ৫৪ জন। তার আগের দিন সে সংখ্যা ছিল ৪৮ জন। আমরা কাজ করে চলেছি বলেই ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম হয়েছি। কিন্তু তা পূর্ণরূপে নির্মূল করার জন্য আপনাদের সহযোগিতা আশা করছি। আপনাদের সামগ্রিক ও ঐক্যবদ্ধ সহযোগিতা ছাড়া আমরা পূর্ণরূপে এডিস মশা নির্মূল করতে পারব না।’
ঢাকা দক্ষিণ সিটির আওতাধীন এলাকায় এ বছরের জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত সাড়ে আট হাজার ডেঙ্গু রোগী পাওয়া গেছে এবং প্রতিটি রোগীর ঠিকানা নিয়ে সেখানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানান মেয়র শেখ তাপস। তিনি বলেন, ‘একজন রোগীও বলতে পারবেন না যে তাঁর ঠিকানা পাওয়া সত্ত্বেও আমরা কোনো কার্যক্রম বা উদ্যোগ গ্রহণ করিনি।’
অনুষ্ঠানে করপোরেশনের সংগীত শিক্ষা কেন্দ্রের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা এ সময় উন্নয়নবিষয়ক বিশেষ জারিগানসহ বিভিন্ন ধরনের উন্নয়নমূলক গান পরিবেশন করেন।
৪১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সারোয়ার হাসান এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। তিনি অনুষ্ঠানে সভাপতিত্বও করেন। করপোরেশনের অঞ্চল ৫–এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাখাওয়াত হোসেন সরকার অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন। অন্যদের মধ্যে করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফী ও সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবির বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে করপোরেশনের সচিব আকরামুজ্জামান, প্রধান প্রকৌশলী আশিকুর রহমান, কাউন্সিলরদের মধ্যে ১০ নম্বর ওয়ার্ডের মারুফ আহমেদ, ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডের রোকন উদ্দিন আহমেদ, ৪৩ নম্বর ওয়ার্ডের আরিফ হোসেন, ৪৪ নম্বর ওয়ার্ডের মিজানুর রহমান, ৪৫ নম্বর ওয়ার্ডের মো. শামসুজ্জোহা, ৫০ নম্বর ওয়ার্ডের মাসুদ মোল্লা, ৫২ নম্বর ওয়ার্ডের রুহুল আমিন, ৬৯ নম্বর ওয়ার্ডের সালাহউদ্দিন আহম্মেদ এবং সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর শাহিনুর বেগম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।