পরিবারের সঙ্গে পুলিশের আলোচনা চলছে

সুমন শেখের স্ত্রী জান্নাত আক্তারের আহাজারি
ফাইল ছবি

রাজধানীর হাতিরঝিল থানা হেফাজতে মারা যাওয়া সুমন শেখের (২৫) লাশ ময়নাতদন্তের পর এখনো শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের মর্গে রয়েছে। পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তরের বিষয়ে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে হাতিরঝিল থানায় ‘আলোচনায়’ বসেছেন সুমনের বাবা ও ভাই। আজ সোমবার বেলা দেড়টায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত আলোচনা চলছিল।

হাতিরঝিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুর রশিদ প্রথম আলোকে বলেন, সুমন শেখের লাশের ময়নাতদন্ত শেষ হয়েছে। পরিবারের লোকজনকে লাশ নিয়ে যেতে ফোন করা হলেও তাঁরা লাশ নিয়ে যাননি।

নিহত সুমন শেখের শ্যালক মোশারফ সাইফুল মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, পরিবারের সবাই মিলে বসে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। সুমনের ছোট একটা ছেলে আছে, ওর ভবিষ্যৎ কী হবে—এসবও ভাবতে হচ্ছে।

এর আগে গত শনিবার দুপুরে থানাহাজত থেকে সুমনের লাশ উদ্ধার করা হয়। পুলিশ বলছে, সুমন আত্মহত্যা করেছেন। ওই দিন রাতেই তাঁর ময়নাতদন্ত শেষ হয়। এরপর পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তরের কথা থাকলেও তা হয়নি।

লাশ নিতে গতকাল রোববার সকালে হাসপাতালের মর্গে গিয়েছিলেন সুমনের স্ত্রী জান্নাত আক্তার। গতকাল দুপুরে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা লাশ বুঝে পেতে মর্গে গিয়েছিলাম। কিন্তু লাশ আমাদের বুঝিয়ে দেওয়া হয়নি। হাতিরঝিল থানা-পুলিশের এক এসআই বলেন, গ্রামের বাড়ি নবাবগঞ্জ নেওয়া হলে লাশ দেওয়া হবে। আর যদি বর্তমান বাসস্থান রামপুরায় নেওয়া হয়, তাহলে লাশ দেওয়া হবে না।’ এরপর সেখান থেকে ফিরে আসেন সুমনের স্ত্রী ও স্বজনেরা।

এদিকে থানা হেফাজতে স্বামীর মৃত্যুর ঘটনায় মামলা করতে গতকাল আদালতে গিয়েছিলেন জান্নাত আক্তার। তবে যে আইনজীবীর সঙ্গে আগে কথা হয়েছে তাঁকে না পেয়ে মামলা করতে পারেননি তিনি।

আরও পড়ুন

পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার আজিমুল হক প্রথম আলোকে বলেছিলেন, একটি চুরির মামলায় গ্রেপ্তার তিন আসামির দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে সুমনকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই অফিস থেকে ৫৩ লাখ টাকা চুরির মামলা হয়েছিল।

সুমনের পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, সুমন রামপুরায় একটি কোম্পানির পানিবিশুদ্ধকরণ যন্ত্র বিপণন অফিসে কাজ করতেন। গত শুক্রবার রাতে পুলিশ তাঁকে মারতে মারতে থানায় নিয়ে যায়।

পরিবারের অভিযোগ, সুমনকে ধরার পর পুলিশ পাঁচ লাখ টাকা দাবি করে। টাকা না দেওয়ায় পুলিশ তাঁকে পিটিয়ে মেরে ফেলেছে।

সুমন শেখ পশ্চিম রামপুরার ঝিলকানন এলাকায় পরিবার নিয়ে ভাড়া বাসায় থাকতেন। তাঁর গ্রামের বাড়ি ঢাকার নবাবগঞ্জের দাড়িকান্দি এলাকায়। সুমনের বাবার নাম পেয়ার আলী।

সুমনের মৃত্যুর ঘটনায় বিক্ষুব্ধ স্বজন ও এলাকাবাসী শনিবার হাতিরঝিল থানার সামনে বিক্ষোভ করেন।

আরও পড়ুন