সফিউদ্দীন শিল্পালয়ে ‘মানুষ ও প্রকৃতির কাব্য’ চিত্র প্রদর্শনী শুরু

আলফা বেগমের চিত্র প্রদর্শনী ‘মানুষ ও প্রকৃতির কাব্য’ ঘুরে দেখছেন অতিথিরা। ঢাকা, ০৪ নভেম্বর
ছবি: প্রথম আলো

আলফা বেগমের প্রথম একক চিত্র প্রদর্শনী ‘মানুষ ও প্রকৃতির কাব্য’ শুরু হয়েছে। রাজধানীর ধানমন্ডির সফিউদ্দীন শিল্পালয়ে আজ শনিবার সন্ধ্যায় উদ্বোধন হয় প্রদর্শনীর।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে সমাজকর্মী, নারীনেত্রী এবং পরিবেশ রক্ষা আন্দোলনকারী খুশী কবিরের কথায় উঠে আসে ষাটের দশকে তাঁদের সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলার (তৎকালীন আর্ট কলেজ) স্মৃতিকথা। তিনি বলেন, আলফা বেগমের কাজ দেখলেই বোঝা যায় কাজের ধরন ও ব্যাপকতা কতখানি বিস্তৃত। তিনি প্রতিদিনের স্বাভাবিক দৃশ্যগুলোও অসাধারণভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন তাঁর শিল্প মাধ্যমে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও মানবাধিকারকর্মী সুলতানা কামাল বলেন, আলফা বেগম বিভিন্ন মাধ্যমে নানা উপজীব্য নিয়ে কাজ করে বৈচিত্র্যময় করে তুলেছেন এ প্রদর্শনী। ছবিগুলোর শিরোনাম দেখলে বোঝা যায় শিল্পী শুধু মানুষ নয়, আশপাশে থাকা প্রকৃতি ও জীবজগৎ নিয়েও যে ভাবেন, তা উঠে এসেছে ছবিতে।

শিল্পীর আঁকা ‘কেইজ’ নামের একটা ছবি নিয়ে বর্ণনা করে সুলতানা কামাল বলেন, ‘মানুষ ও প্রকৃতির কাব্য’ প্রদর্শনীটি দর্শকদের নিজের মনের আনন্দের জন্যই দেখা উচিত।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন চিত্রশিল্পী অধ্যাপক আবুল বার্‌ক্‌ আলভী। তিনি বলেন, আলফা বেগমের ছবিতে তাঁর নিজস্বতার ছাপ আছে। শিল্পী যখন শিক্ষার্থী ছিলেন, তখন ছিল আন্দোলনের সময়। ছাত্রজীবন থেকেই আলফা খুব ভালো ছবি আঁকতেন। চট্টগ্রামে চলে যাওয়ায় কিছুটা ব্যাঘাত ঘটেছে শিল্পচর্চায়। তবে তিনি সব সময়ই বিভিন্ন শিল্পীর সঙ্গে মিলে কাজ করেছেন।

শিল্পী সাইদা কামালের কথায় উঠে আসে শিল্পী আলফা বেগমের সঙ্গে তাঁর শৈশবের স্মৃতি। তিনি বলেন, ‘আমরা একসঙ্গে স্কুল, কলেজে পড়েছি, এত বছরেও বন্ধুত্ব ম্লান হয়নি। বন্ধু হিসেবে জানি, জীবনের কত রকম ঘাত–প্রতিঘাতের মধ্য দিয়ে গিয়েও আলফা কখনো শিল্প থেকে সরে যায়নি। তার নিষ্ঠাই তাকে শিল্পের সঙ্গে জড়িয়ে রেখেছে।’

১৯৭২ সালে চারুকলা অনুষদ থেকে পড়ালেখা শেষ করেন শিল্পী আলফা বেগম। এত দীর্ঘ সময় পর প্রথম একক প্রদর্শনী করার কারণ হিসেবে শিল্পী বলেন, মাঝে দীর্ঘ বিরতি ছিল আঁকায়। ১৯৯৫ সাল থেকে আবার নিয়মিত আঁকছেন। পরিবার, স্বজনেরা উৎসাহ দিলেন বলেই সাহস পেয়েছেন একক প্রদর্শনী করার।

প্রদর্শনীতে স্থান পেয়েছে তেলরং, জলরং, উডকাট ও ছাপচিত্রে আলফা বেগমের আঁকা ৪৭টি ছবি।

‘মানুষ ও প্রকৃতির কাব্য’ প্রদর্শনী চলবে ১০ নভেম্বর পর্যন্ত। প্রতিদিন বেলা ১১টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত প্রদর্শনী উন্মুক্ত থাকবে দর্শকদের জন্য।