নৌবাহিনীর কর্মকর্তাকে মারধরের মামলায় জামিন পেলেন ইরফান

ইরফান সেলিম
ফাইল ছবি

নৌবাহিনীর কর্মকর্তা ওয়াসিফ আহমেদ খানকে মারধরের মামলায় সংসদ সদস্য হাজি সেলিমের ছেলে ইরফান সেলিম জামিন পেয়েছেন।

আজ বৃহস্পতিবার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের অ্যাডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (এসিএমএম) মুহাম্মদ আসাদুজ্জামান নূর এ আদেশ দেন।

মামলায় ইরফানসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে গতকাল বুধবার একই আদালত অভিযোগ গঠন করেন। এদিন ইরফান আদালতে হাজির ছিলেন না। এ কারণে আদালত গতকাল তাঁর জামিন বাতিল করেন। তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আদেশ দেন।

গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আদেশের পর ইরফান আজ আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। আদালত সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, ইরফান আজ আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন জানান। তাঁর আইনজীবী প্রাণনাথ রায় লিখিতভাবে আদালতকে বলেন, ইরফান জামিনে ছিলেন। তবে গতকাল তিনি অসুস্থ ছিলেন। এ কারণে তিনি গতকাল আদালতে হাজির হতে পারেননি। তিনি আগে কখনো জামিনের অপব্যবহার করেননি। উভয় পক্ষের শুনানি নিয়ে ইরফানের জামিন মঞ্জুর করেন আদালত।

মামলাটিতে আগামী ৬ মার্চ সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখ ধার্য রয়েছে।

মামলার অপর চার আসামি হলেন ইরফানের দেহরক্ষী জাহিদুল মোল্লা, গাড়িচালক মিজানুর রহমান, মদিনা গ্রুপের কর্মকর্তা এ বি সিদ্দিক দীপু ও কাজী রিপন।
নৌবাহিনীর কর্মকর্তা ওয়াসিফকে মারধরের মামলা তদন্ত করে ২০২১ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি ইরফানসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ।

২০২০ সালের ২৫ অক্টোবর রাতে ওয়াসিফ তাঁর স্ত্রীকে নিয়ে মোটরসাইকেলে করে যাচ্ছিলেন। রাজধানীর ধানমন্ডির ল্যাবএইড হাসপাতালের সামনে এলে পেছন থেকে তাঁর মোটরসাইকেলকে ধাক্কা দেয় সংসদ সদস্যের স্টিকারযুক্ত একটি গাড়ি। এ সময় ওয়াসিফ নিজের পরিচয় দিলেও গাড়ি থেকে নেমে একজন গালিগালাজ করে হত্যার হুমকি দিয়ে চলে যান। এরপর গাড়িটি কলাবাগান বাসস্ট্যান্ড সিগন্যালে এসে থামলে ওয়াসিফ মোটরসাইকেল নিয়ে সেখানে গিয়ে গাড়ির জানালায় নক করেন। তখন গাড়ি থেকে কয়েকজন নেমে ওয়াসিফকে মারধর করে রক্তাক্ত করেন। এতে ওয়াসিফের একটি দাঁত পড়ে যায়।

গাড়িটিতে হাজি সেলিমের ছেলে ইরফান ও তাঁর লোকজন ছিলেন। ঘটনার পরদিন সকালে তাঁদের বিরুদ্ধে ধানমন্ডি থানায় মামলা করেন ওয়াসিফ। সেদিন পুরান ঢাকার বড় কাটরায় ইরফানের বাবা সরকারদলীয় সংসদ সদস্য হাজি সেলিমের বাড়িতে দিনভর অভিযান চালায় র‍্যাব। অভিযানে অস্ত্র, ইয়াবা, ওয়াকিটকি ও অন্যান্য সরঞ্জাম জব্দ করা হয়।

অভিযানকালে র‍্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত মাদক রাখার দায়ে ইরফানকে এক বছরের কারাদণ্ড এবং অবৈধ ওয়াকিটকি রাখায় ছয় মাসের কারাদণ্ড দেন। আর দেহরক্ষী জাহিদকে ওয়াকিটকি বহন করার দায়ে ছয় মাসের সাজা দেওয়া হয়।

এ ঘটনায় একই বছরের ২৭ অক্টোবর রাতে ইরফান ও জাহিদের বিরুদ্ধে চকবাজার থানায় অস্ত্র ও মাদক নিয়ন্ত্রণ আইনে দুটি করে আলাদা মামলা করা হয়। ইরফানের বিরুদ্ধে এই দুই মামলায় আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেয় পুলিশ। আদালত তা গ্রহণ করায় তিনি মামলা থেকে অব্যাহতি পান।

আরও পড়ুন