ওসির নামে ভুয়া আইডি খুলে মেসেঞ্জারে কথা বলতেন ‘ফেসবুক মাস্টার’

আনোয়ার হোসেন
ছবি: সংগৃহীত

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অন্যের নামে ভুয়া আইডি খুলে প্রতারণার অভিযোগে আনোয়ার হোসেন নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গাইবান্ধা জেলার সদর থানার ইসলাম প্রিন্টিং প্রেস নামের একটি প্রতিষ্ঠান থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। এলাকায় আনোয়ার ফেসবুক মাস্টার হিসেবে পরিচিত।

রাজধানীর মিন্টো রোডে ঢাকা মহানগর পুলিশের গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম) লিটন কুমার সাহা এসব তথ্য জানান।

পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, আনোয়ার দীর্ঘদিন ধরে মোহাম্মদ মহসীন নামে একটি ভুয়া ফেসবুক আইডি চালিয়ে আসছিলেন। তিনি আইডিতে তেজগাঁও থানার ওসি মোহাম্মদ মহসীনের আইডির হুবহু একই ছবি দিয়ে রেখেছেন। এরপর তিনি ওসি মহসীন সেজে মেসেঞ্জারে মেয়েদের সঙ্গে আপত্তিকর কথা বলতেন। নানা অজুহাতে অনেকের কাছে টাকাও দাবি করতেন।

এ নিয়ে ওসি মহসীন ২০২৩ সালের ৫ সেপ্টেম্বর মিরপুর মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। পরে গত ২২ জানুয়ারি বাদী হয়ে তেজগাঁও থানায় সাইবার নিরাপত্তা আইনে মামলাও করেন।

লিটন কুমার আরও বলেন, আনোয়ার হোসেনের কাছে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি, চিত্রনায়ক ও মডেলের নামে ভুয়া ফেসবুক আইডি রয়েছে। এ আইডিগুলো থেকে তিনি ওই ব্যক্তি সেজে বিভিন্ন পোস্ট ও ছবি আপলোড করতেন। মেসেঞ্জারে বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে চ্যাট করতেন। তাঁর মূল টার্গেট হচ্ছেন নারীরা। এই তালিকায় রয়েছেন শিক্ষার্থী, গৃহিণী, প্রবাসী ও মডেল।

তেজগাঁও থানার ওসি মোহাম্মদ মহসীন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আনোয়ারের কোনো প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নেই। পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়া আনোয়ার চাকরি করেন ইসলাম প্রিন্টিং প্রেস নামের একটি প্রতিষ্ঠানে। চাকরির ফাঁকে ফাঁকেই তিনি ইউটিউব দেখে দেখে ফেসবুকের বিভিন্ন কলাকৌশল শেখেন। এভাবে শিখে শিখেই তিনি বিভিন্ন মানুষের ফেসবুকের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করে দেন। খোলাবাড়ি গ্রাম ও দাশ বেকারি মোড় এলাকায় তিনি ‘ফেসবুক মাস্টার’ নামেই পরিচিত। আইডি, পাসওয়ার্ড হারিয়ে গেলে তা উদ্ধার করা, পেজ ভেরিফিকেশন, রিপোর্ট কিংবা স্ট্রাইক খাওয়া পেজ রিকোভারসহ ফেসবুকের যেকোনো সমস্যার সহজ সমাধান হয়ে ওঠেন আনোয়ার। যেসব আইডি তিনি উদ্ধার করে দিতেন, সেগুলোর আইডি, পাসওয়ার্ড তিনি রেখে দিতেন এবং নিজেই ব্যবহার করতেন।’