স্কুল বন্ধ না খোলা, বিভ্রান্তিতে অসুবিধায় পড়ল বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষার্থীরা    

স্কুলে আসা শিক্ষার্থীরা ছুটি শেষে বাড়ি ফিরছে। জিলা স্কুল, পাবনা, ২১ জানুয়ারিফাইল ছবি: প্রথম আলো

রাজধানীর উত্তরার একটি বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র মারুফ (ছদ্মনাম)। আজ মঙ্গলবার বিদ্যালয় খোলা থাকবে কি না, তা নিয়ে গতকাল সোমবার রাত পর্যন্ত কোনো কিছু জানায়নি কর্তৃপক্ষ। আর না জানানোয় সকালে বিদ্যালয়ে যাওয়ার প্রস্তুতিও নেয় ছেলেটি। সকাল সাড়ে সাতটার দিকে যখন বাসা থেকে বের হবে, তখন বিদ্যালয়ের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে বার্তা আসে, বিদ্যালয় আজ বন্ধ থাকবে।

মারুফের বাবা আজ প্রথম আলোকে বলেন, ‘পবিত্র রমজানে স্কুল খোলা না বন্ধ থাকবে, তা নিয়ে আজ সকাল পর্যন্তও কিছু জানতাম না। আমার ছেলেটি প্রস্তুতি নিল। সকালে শুনলাম স্কুল হবে না।’

আরও পড়ুন

রাজধানীর আরও বিভিন্ন বিদ্যালয় আজ খোলা না বন্ধ, তা নিয়ে বিভ্রান্তি দেখা দিয়েছে। কোনো কোনো বিদ্যালয়ে অভিভাবকেরা সন্তানকে নিয়ে গিয়ে দেখেছেন ফটক বন্ধ। তবে কিছু বিদ্যালয় গতকাল রাতেই জানিয়ে দিয়েছিল আজ বন্ধ থাকার কথা। কিন্তু বিভিন্ন বিদ্যালয় তা জানায়নি। বিশেষ করে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর ক্ষেত্রে এ ঘটনা বেশি ঘটেছে। এ নিয়ে প্রথম আলো কার্যালয়ে ফোন করে অনেক অভিভাবক ক্ষোভও জানিয়েছেন।

রাজধানীর কাঁটাবনের শহীদ বুদ্ধিজীবী ড. আমিন উদ্দিন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, অন্যান্য দিনের তুলনায় শিক্ষার্থী এসেছে অনেক কম। প্রধান শিক্ষক রীনা পারভীন জানান, তাঁরা বিদ্যালয় বন্ধের সরকারি নির্দেশনার অপেক্ষায় ছিলেন। নির্দেশনা না পেয়ে বিদ্যালয় খোলা রেখেছেন। শিক্ষার্থীদের অনেকেই এ বিষয়ে বিভ্রান্তির কারণে স্কুলে আসেনি। ফোন করে জানানোর পর কেউ কেউ এসেছে।

পবিত্র রমজানে বিদ্যালয় খোলা রাখার সিদ্ধান্ত স্থগিত করে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ গতকাল স্থগিত হয়নি। হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদনটি আজ আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির জন্য নির্ধারণ করা হয়। এ অবস্থায় গতকাল ঢাকার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শুধু আজকের জন্য ছুটি ঘোষণা করা হয়। তবে এ ঘোষণা ভালোমতো সব স্থানে পৌঁছায়নি। তাতেই হয়েছে এই বিভ্রান্তি।

আরও পড়ুন

গত ৮ ফেব্রুয়ারি এক আদেশে ১১ থেকে ২৫ মার্চ পর্যন্ত মোট ১৫ দিন সরকারি, বেসরকারি মাধ্যমিক ও নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শ্রেণি কার্যক্রম চালু রাখার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছিল শিক্ষা বিভাগ। আর রমজানের প্রথম ১০ দিন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠদান কার্যক্রম চালু রাখার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলেছিল প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।

এ বিষয়ে একটি রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ গত রোববার ওই সিদ্ধান্ত স্থগিত করে রুলসহ আদেশ দেন। হাইকোর্টের এ আদেশ স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগে আবেদন করে, যা গতকাল চেম্বার আদালতে শুনানির জন্য ওঠে। আবেদনটি আজ আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে। আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম গতকাল এ আদেশ দেন।

আরও পড়ুন