জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে দুই শিক্ষকের ওপর ছাত্রদলের হামলার প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রদলের হামলার প্রতিবাদে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে, ১৩ জুলাই ২০২৫ছবি: প্রথম আলো

দুই শিক্ষক ও কয়েকজন শিক্ষার্থীর ওপর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের হামলার প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করেছেন। বিক্ষোভ–পরবর্তী সমাবেশে তাঁরা তিন দফা দাবি তুলে ধরেন।

আজ রোববার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন ঘেরাও করে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন বিভাগের প্রায় ৫০০ শিক্ষার্থী। পরে সেখানেই তাঁরা সমাবেশ করেন।

মিছিলটি ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণকালে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন স্লোগান দেন। এসব স্লোগানের মধ্যে—‘এক দুই তিন চার, অছাত্ররা ক্যাম্পাস ছাড়’; ‘যেই হাত শিক্ষক মারে, সেই হাত ভেঙে দাও’; ‘শিক্ষা ও সন্ত্রাস, একসঙ্গে চলবে না’; ‘অছাত্রদের ঠিকানা, এই ক্যাম্পাসে হবে না’; ‘ছাত্রদল শিক্ষক মারে, প্রশাসন কী করে?’—অন্যতম।

ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগের সব ব্যাচের শিক্ষার্থীরা ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করেছেন জানিয়ে সমাবেশে বলা হয়, আজকের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যদি হামলার সুষ্ঠু প্রতিকার না করে তাহলে আগামীকাল থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন চলবে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রশাসন ব্যবস্থা না নিলে অন্যান্য বিভাগের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাত্ম হয়ে শহীদ সাজিদ একাডেমিক ভবন বন্ধ করে দেবেন তাঁরা।

সমাবেশ থেকে শিক্ষার্থীরা তিন দফা দাবি তুলে ধরেন। সেগুলো হলো ১৩ জুলাইয়ের মধ্যে তদন্ত সম্পন্ন করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। হামলায় জড়িত বর্তমান শিক্ষার্থীদের বহিষ্কার ও বিচার নিশ্চিত করতে হবে। প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ক্যাম্পাসে প্রবেশ নিষিদ্ধ করতে হবে এবং ঘটনায় জড়িত প্রাক্তনদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে হবে।

গত বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) বিকেল সাড়ে চারটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সাজিদ একাডেমিক ভবনের নিচে ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী রফিক বিন সাদেক রেসাদকে মারধর করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের কয়েকজন নেতা–কর্মী। তাঁরা রফিকের বিরুদ্ধে ছাত্রলীগ সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ তোলেন।

প্রত্যক্ষদর্শীদের তথ্যমতে, এ সময় রফিককে রক্ষায় এগিয়ে গেলে ছাত্রকল্যাণ পরিচালক এ কে এম রিফাত হাসান ও সহকারী প্রক্টর শফিকুল ইসলামও হামলার শিকার হন। ওই সময় ছাত্রদলের নেতা–কর্মীরা বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ (বাগছাস) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক মো. ফয়সাল মুরাদ, মুখ্য সংগঠক ফেরদৌস হাসান ও যুগ্ম আহ্বায়ক মো. ফারুকের ওপরও হামলা করেন বলে অভিযোগ রয়েছে।