ডেঙ্গু মোকাবিলায় উদ্যোগ নিতে সিটি করপোরেশন ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ব্যর্থ হয়েছে: ড্যাব

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করেছে ড্যাব। জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তন, ১৩ জুলাই, ২০২৩
ছবি: তানভীর আহাম্মেদ

বিএনপিপন্থী চিকিৎসকদের সংগঠন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, দেশে ডেঙ্গুতে মৃত্যু ও আক্রান্তের সংখ্যা সরকারি হিসাব থেকে অনেক বেশি।

তাদের অভিযোগ, ডেঙ্গু মোকাবিলায় যে উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন ছিল, সিটি করপোরেশন ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর তা নিতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ড্যাবের মহাসচিব মো. আবদুস সালাম। তিনি বলেন, গত কয়েক দিনে গড়ে ৬০০–এর কাছাকাছি মানুষ ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।

যদিও এ হিসাব ঢাকার ৫৩টি হাসপাতাল ও বিভিন্ন জেলার সিভিল সার্জন অফিস থেকে প্রাপ্ত। এই হাসপাতালগুলো ছাড়াও ছোট-বড় অনেক বেসরকারি ক্লিনিক বা বাসায় থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন আরও অনেক রোগী। যেসব ক্লিনিক বা হাসপাতাল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে তথ্য পাঠায় না, সেই রোগীদের হিসাব ডেঙ্গু পরিসংখ্যানে যুক্ত হয় না।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ২০২০ সালে ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়লে সরকারি হাসপাতালে বিনা মূল্যে পরীক্ষার উদ্যোগ নিয়েছিল সরকার। তবে এবার এ ধরনের কোনো উদ্যোগ নেই।

সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, ডেঙ্গু নতুন কোনো রোগ নয়। এটা প্রতিরোধের জন্য সিটি করপোরেশন ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের যে উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন ছিল, তা নিতে তারা সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে।

ড্যাব বলছে, সরকারি হিসাবে ৫৮ জেলায় ডেঙ্গু ছড়িয়ে গেলেও জেলা-উপজেলা পর্যায়ের শহর ও গ্রামগুলোতে মশকনিধন কার্যক্রম খুব একটা চোখে পড়ছে না।‌ সিটি করপোরেশন এলাকায় মশা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চললেও জনবল ও যন্ত্রপাতির অনেক ঘাটতি রয়েছে। তবে পৌর এলাকার পরিস্থিতি অনেকটাই নাজুক। কয়েকটি ব্যতিক্রম ছাড়া সব ইউনিয়ন পরিষদই মশা নিয়ন্ত্রণের যন্ত্র, ওষুধ ও জনবলশূন্য।

এই সংকটে কী করা উচিত, তা নিয়েও কিছু সুপারিশ করেছে ড্যাব। সংগঠনটির পক্ষ থেকে বলা হয়, ডেঙ্গু মোকাবিলায় সারা বছর নিয়মিত কাজের পাশাপাশি আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীদের ঠিকানা নিয়ে ওই সব এলাকায় এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে বাড়তি গুরুত্ব দেওয়া জরুরি।

অবিলম্বে সব সরকারি হাসপাতালে বিনা মূল্যে ডেঙ্গু পরীক্ষার ব্যবস্থা করারও সুপারিশ করা হয়েছে।

ডেঙ্গু পরিস্থিতি মোকাবিলায় দেশ–বিদেশের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে একটি কমিটি করে তাদের পরামর্শ মোতাবেক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন বলেও মনে করে ড্যাব।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ড্যাবের সভাপতি ডা. হারুন আল রশীদ, কোষাধ্যক্ষ ডা. জহিরুল ইসলাম, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ডা. মেহেদী হাসান, যুগ্ম মহাসচিব ডা. শাহ মুহাম্মদ আমান উল্লাহ, ডা. আদনান হাসান মাসুদ, সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. রেজওয়ানুর রহমান সোহেল, ঢাকা দক্ষিণ ড্যাবের সভাপতি ডা. দিদারুল আলম, মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. মো. সায়েম বাবু, ডা. ইব্রাহিম রহমান, নার্সেস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি বিলকিস জাহান চৌধুরী, অ্যামট্যাবের সভাপতি বিপ্লবুজ্জামান, ফিজিওথেরাপিস্ট মাহাতাব উদ্দিন প্রমুখ।