নিলামে বিক্রি হবে দোকান ও অফিসের জায়গা

তলা ও আয়তনভেদে প্রতি বর্গফুট জায়গার ভিত্তিমূল্য হবে ৫ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকা।

রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) উত্তরা অ্যাপার্টমেন্ট প্রকল্পের বাণিজ্যিক ভবনের জায়গা (স্পেস) নিলামে বিক্রি করা হবে। তলা ও আয়তনভেদে প্রতি বর্গফুট জায়গার ভিত্তিমূল্য (সর্বনিম্ন মূল্য) হবে ৫ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকা। সম্প্রতি সংস্থাটির এক সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

অ্যাপার্টমেন্ট প্রকল্পটি উত্তরা তৃতীয় পর্বের ১৮ নম্বর সেক্টরে অবস্থিত। সেক্টরটির ‘এ’ ব্লকে ৬ হাজার ৬৩৬টি আবাসিক ফ্ল্যাট তৈরি করেছে রাজউক। এরই মধ্যে এসব ফ্ল্যাটের মধ্যে অন্তত সাড়ে ৫ হাজার ফ্ল্যাট বিক্রি করেছে সংস্থাটি। বর্তমানে এসব ফ্ল্যাটে অন্তত দুই হাজার পরিবার বসবাস করছে বলে জানা গেছে।

মূলত আবাসিক ফ্ল্যাটগুলোতে বসবাস করা মানুষের বাণিজ্যিক চাহিদা মেটাতেই প্রকল্প এলাকায় বাণিজ্যিক ভবনটি নির্মাণ করা হয়েছে। ‘কমার্শিয়াল কমপ্লেক্স’ নামের এই ভবনটিতে মোট দুটি অংশ আছে। প্রথম অংশের উচ্চতা ৬০ ফুট। এতে ৪৮ ফুট উচ্চতার দুটি ‘কমিউনিটি হল’ আছে। প্রতিটি হলের আয়তন ২৭ হাজার ৭৭২ বর্গফুট। দ্বিতীয় অংশের (টাওয়ার) উচ্চতা ১০ তলা। টাওয়ার অংশের নিচতলায় দুটি সুপারশপের জন্য যথাক্রমে ১০ হাজার ২৪৮ ও ১০ হাজার ২১৩ বর্গফুট জায়গা রাখা হয়েছে। দ্বিতীয় তলায় বিভিন্ন আয়তনের ২৮টি দোকান ও তৃতীয় তলা থেকে ১০ তলা পর্যন্ত বিভিন্ন আয়তনের ৮০টি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ব্যবসা-বাণিজ্য করার সুযোগ রাখা হয়েছে।

* অ্যাপার্টমেন্ট প্রকল্পটি উত্তরা তৃতীয় পর্বের ১৮ নম্বর সেক্টরে অবস্থিত। * ‘কমার্শিয়াল কমপ্লেক্স’ নামের এই ভবনে দুটি অংশ আছে।

রাজউকের সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, বাণিজ্যিক ভবনটির জায়গাগুলোতে ‘এ’, ‘বি’ ও ‘সি’—এই তিন শ্রেণিতে বিভক্ত করা হয়েছে। ‘এ’ শ্রেণির প্রতিটি জায়গার আয়তন হবে ৩০১ বর্গফুটের বেশি। এগুলোর ভিত্তিমূল্য ধরা হয়েছে ২০ হাজার টাকা (প্রতি বর্গফুট)। ‘বি’ শ্রেণির জায়গার আয়তন হবে ২০১ থেকে ৩০০ বর্গফুট; এর ভিত্তিমূল্য ধরা হয়েছে ১৮ হাজার টাকা প্রতি বর্গফুট। ‘সি’ শ্রেণির বাণিজ্যিক জায়গার আয়তন হবে ১০০ থেকে ২০০ বর্গফুট, বিক্রির জন্য ভিত্তিমূল্য ধরা হয়েছে ১৬ হাজার টাকা প্রতি বর্গফুট। এ ছাড়া রেস্তোরাঁ করতে ছাদের জায়গা প্রতি বর্গফুট ৫ হাজার টাকা ভিত্তিমূল্যে বিক্রি করতে চায় রাজউক।

নাম না প্রকাশের শর্তে রাজউকের সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানান, মূলত নিলামের মাধ্যমে বিভিন্ন জনকে এই ভবনের জায়গা বরাদ্দ দেওয়া হবে। বরাদ্দের আগে গণমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বিভিন্নজনের কাছে আবেদন আহ্বান করা হবে। আবেদনকারীদের মধ্যে যিনি সর্বোচ্চ দাম হাঁকবেন, তাঁকেই জায়গা বরাদ্দ দেওয়া হবে।

সাধারণত আবাসিক ফ্ল্যাট নির্দিষ্ট একটি দামে বরাদ্দ দেয় রাজউক, এখানে সর্বোচ্চ দাম হাঁকার সুযোগ নেই। বাণিজ্যিক ভবনের ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম কেন—জানতে চাইলে ওই কর্মকর্তা বলেন, এটি রাজউকের রীতি। আগেও একইভাবে জায়গা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

জানতে চাইলে রাজউকের চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান মিঞা প্রথম আলোকে বলেন, অ্যাপার্টমেন্ট প্রকল্পে (৬৬৩৬টি ফ্ল্যাটে) যাঁরা থাকবেন, তাঁদের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করার জন্যই বাণিজ্যিক ভবনটি নির্মাণ করা হয়েছে। ভবনটিকে সুপারশপ, স্বাস্থ্যকেন্দ্রসহ নানা সুযোগ-সুবিধা থাকবে। ইতিমধ্যেই ভবনটির নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে যাঁরা বরাদ্দ পাবেন, তাঁদের নিজ উদ্যোগে ‘ইন্টেরিয়র ডিজাইন’ করে নিতে হবে। আগামী মাসেই এ–সংক্রান্ত নিলাম আহ্বান করা হবে।