পদযাত্রায় মাইক কেড়ে পুলিশের বাধার অভিযোগ প্রতিবন্ধীদের, শাহবাগে অবস্থান

পুলিশের অবস্থানের মধ্যেই জাদুঘরের সামনে ১১ দফা দাবি আদায়ে কর্মসূচি পালন করছেন প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা
ছবি: সাজিদ হোসেন

জাতীয় সংসদ অভিমুখে পদযাত্রা কর্মসূচিতে পুলিশের বাধার মুখে পড়েছেন বলে জানিয়েছেন প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা। তাঁদের অভিযোগ, কর্মসূচির জন্য আনা মাইক পুলিশ কেড়ে নিয়েছে। বাধা দেওয়া হয়েছে পদযাত্রায়। তাই তাঁরা জাদুঘরের সামনে অবস্থান নিয়েছেন। এ সময় সেখানে অনেক পুলিশ দেখা গেছে।

রাজধানীর শাহবাগে আজ বৃহস্পতিবার দুপুর পৌনে ১২টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ১১ দফা দাবি আদায়ে ‘সংক্ষুব্ধ প্রতিবন্ধী নাগরিক সমাজ’–এর ব্যানারে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের কর্মসূচি চলছে। আন্দোলনকারীরা বলছেন, তাঁদের সামনে-পেছনে সতর্ক অবস্থান নিয়েছেন বিপুলসংখ্যক পুলিশ সদস্য।

প্রতিবন্ধীদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে প্রতিবন্ধী ব্যক্তির মাসিক ভাতা পাঁচ হাজার টাকা করা, প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীর ভাতা দুই হাজার টাকা করা, সরকারি চাকরিতে বিশেষ নীতিমালা।

ইশারাভাষায় দেওয়া বক্তব্যে জাতীয় বধির সংস্থার সাধারণ সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস খান বলেন, ‘আমরা প্রতিবন্ধীরা সরকারের বিরুদ্ধে নই, আমাদের আন্দোলন সরকারের বিরুদ্ধেও নয়।’

রুহুল কুদ্দুস খান আরও বলেন, ‘আমরা আমাদের অধিকার চাই, সরকারের সহযোগিতা চাই। আমাদের ১১ দফা দাবি কোনো একক ব্যক্তির নয়, দেশের সব প্রতিবন্ধী ব্যক্তির। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চলবে।’

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) রমনা জোনের অতিরিক্ত উপকমিশনার হারুন অর রশীদ বলেন, কোনো কর্মসূচির কারণে জনদুর্ভোগ ও বিশৃঙ্খলা যেন না হয়, সেটি নিশ্চিত করতেই পুলিশ শাহবাগে অবস্থান করছে।

৪ জুন প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচি ছিল। তবে পুলিশের বাধায় ওই কর্মসূচি পণ্ড হয়ে যায়। এর প্রতিবাদে ৯ জুন শাহবাগে ডাকা সংহতি সমাবেশে ১৪ জুনের মধ্যে ১১ দফা দাবি পূরণ করা না হলে পরদিন থেকে কঠোর আন্দোলনে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দেন সংক্ষুব্ধ প্রতিবন্ধী নাগরিক সমাজের নেতারা।

সেই ঘোষণা অনুযায়ী, আজ সকাল নয়টা থেকে শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে জড়ো হন আন্দোলনরত প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা। শাহবাগ থেকে জাতীয় সংসদ অভিমুখে পদযাত্রা কর্মসূচি করার কথা ছিল তাঁদের।

প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের ১১ দফা দাবির মধ্যে আরও রয়েছে, হাজার কোটি টাকার প্রতিবন্ধী উদ্যোক্তা তহবিল গঠন, প্রতিবন্ধী ব্যক্তি উন্নয়ন অধিদপ্তরকে কার্যকর করা, ইশারাভাষা ইনস্টিটিউট গঠন ও সব সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানে দোভাষী নিশ্চিত করা, শিক্ষা ও চাকরির নিয়োগে শ্রুতলেখক নীতিমালা প্রণয়ন, প্রতিবন্ধীদের প্রবেশগম্য অবকাঠামো ও গণপরিবহনে প্রবেশগম্যতা নিশ্চিতে অর্থ বরাদ্দ করা, রাজনৈতিক দলে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা, মন্ত্রণালয়ভিত্তিক সংবেদনশীল বাজেট করা।