বীর মুক্তিযোদ্ধা পঙ্কজ ভট্টাচার্যকে গার্ড অব অনার

বীর মুক্তিযোদ্ধা ও প্রবীণ রাজনীতিক পঙ্কজ ভট্টাচার্যকে আজ শহীদ মিনারে গার্ড অব অনার দেওয়া হয়
ছবি: প্রথম আলো

সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের আগে সদ্য প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা ও প্রবীণ রাজনীতিক পঙ্কজ ভট্টাচার্যকে রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে গার্ড অব অনার দেওয়া হয়। আজ মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে তাঁকে গার্ড অব অনার দেন ঢাকা জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হেদায়েতুল ইসলাম।

বিকেল চারটার পরপর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পাদদেশে এই গার্ড অব অনার দেওয়া হয়। এরপর ঐক্য ন্যাপের প্রয়াত সভাপতি পঙ্কজ ভট্টাচার্যের প্রতি সর্বস্তরের মানুষ শ্রদ্ধা নিবেদন শুরু হয়।

৮৪ বছর বয়সে পঙ্কজ ভট্টাচার্য গত রোববার রাতে মারা যান। সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত পঙ্কজ ভট্টাচার্যের মরদেহ শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে রাখা হবে। এরপর পোস্তগোলা মহাশ্মশানে তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে।

পঙ্কজ ভট্টাচার্য ১৯৩৯ সালের ৬ আগস্ট চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার নোয়াপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। চট্টগ্রাম ও ঢাকায় তাঁর শিক্ষাজীবন কেটেছে। ছাত্র আন্দোলনে সম্পৃক্ততার কারণে ১৯৫৯ সালে তিনি চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুল থেকে বহিষ্কৃত হন। পঙ্কজ ভট্টাচার্য গত শতকের ষাটের দশকের ছাত্র আন্দোলন থেকে শুরু করে মুক্তিযুদ্ধ ও পরবর্তী বাংলাদেশের সব আন্দোলন-সংগ্রামের প্রত্যক্ষদর্শী, একজন নেতৃস্থানীয় কর্মী ও সংগঠক।

১৯৬৩ সালে পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়ন কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি ও পরে কার্যকরী সভাপতি নির্বাচিত হন পঙ্কজ ভট্টাচার্য। তিনি ১৯৬৭ সালে ‘স্বাধীন বাংলা ষড়যন্ত্র’ মামলায় অভিযুক্ত হয়ে কারারুদ্ধ হন।

বীর মুক্তিযোদ্ধা ও প্রবীণ রাজনীতিক পঙ্কজ ভট্টাচার্যকে শহীদ মিনারে শেষ শ্রদ্ধা জানান রাজনৈতিক সহযোদ্ধারা
ছবি: প্রথম আলো

পঙ্কজ ভট্টাচার্য মুক্তিযুদ্ধে ন্যাপ-ছাত্র ইউনিয়ন-কমিউনিস্ট পার্টি গেরিলা বাহিনীর সংগঠক ছিলেন। স্বাধীনতার পর দীর্ঘদিন বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন তিনি। ১৯৯৩ সালে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে গণফোরাম গঠনের সময় তিনি ছিলেন দলটির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য।

পরে সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন নামে দেশের প্রগতিশীল-গণতান্ত্রিক মানুষের একটি প্ল্যাটফর্ম গড়ে তোলেন। ২০১৩ সালে তিনি ঐক্য ন্যাপ নামে রাজনৈতিক দল প্রতিষ্ঠা করেন। অল্প বয়সে কৃতী ফুটবলার ছিলেন পঙ্কজ ভট্টাচার্য। লেখালেখি ও সংস্কৃতিচর্চায় বরাবর তাঁর আগ্রহ ছিল।