আর্ট বাংলা ফাউন্ডেশনের যাত্রা শুরু

আর্ট বাংলা ফাউন্ডেশনের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে অতিথি ও সম্মাননা পাওয়া গুণীজনেরা। (বাঁ থেকে) নিসার হোসেন, রূপালী চৌধুরী, আসাদুজ্জামান নূর, মনিরুল ইসলাম, আবুল খায়ের, হাশেম খান, কে এম খালেদ, রফিকুন নবী ও মোহাম্মদ ইউনুস। আর্ট বাংলা ফাউন্ডেশন গ্যালারি, লালমাটিয়া, ঢাকা, ১৭ সেপ্টেম্বর
ছবি: প্রথম আলো

নতুন আর্ট গ্যালারির যাত্রা উপলক্ষে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল দেশবরেণ্য শিল্পী ও শিল্পসংশ্লিষ্ট গুণীজনদের। দেশসেরা চিত্রশিল্পীদের সঙ্গে তরুণ শিল্পীদের আঁকা চিত্রকর্ম নিয়ে আয়োজন করা হয়েছে প্রদর্শনী। আর সম্মাননা জানানো হয়েছে শিল্পের দিকপাল ব্যক্তিদের। এভাবেই রাজধানীর লালমাটিয়ায় আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করেছে আর্ট বাংলা ফাউন্ডেশন।

শনিবার বিকেলে লালমাটিয়ার আর্ট বাংলা ফাউন্ডেশন গ্যালারিতে শুরু হয়েছে যৌথ শিল্পকর্ম প্রদর্শনী ‘প্রতিবিম্ব পরম্পরা’। খ্যাতিমান ও প্রতিশ্রুতিশীল ৪৮ শিল্পীর ৫২টি শিল্পকর্ম রয়েছে এখানে। ফাউন্ডেশনের যাত্রাকাল স্মরণীয় করে রাখতে শিল্পকলায় বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে সম্মাননা জানানো হয় শিল্পী সমরজিৎ রায়চৌধুরী, মুস্তাফা মনোয়ার, হাশেম খান, রফিকুন নবী, মনিরুল ইসলাম ও শিল্পকলার পৃষ্ঠপোষক হিসেবে বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আবুল খায়েরকে।

সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান নূরের সভাপতিত্বে গ্যালারির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী (লাকী), বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রূপালী চৌধুরী এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ডিন নিসার হোসেন। আলোচক ছিলেন শিল্পসমালোচক মইনুদ্দীন খালেদ।

মাঈনুদ্দীন খালেদ বলেন, ‘বাংলাদেশের শিল্পকে পুরোপুরি উপলব্ধি করার মতো কোনো বই নেই আমাদের। শিল্পাচার্য জয়নুল কেন বিশ্বমানের শিল্পী, তা তুলে ধরতে অন্তত ১০টি বই হওয়া উচিত। আশা করি, এই ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে এসব কাজের দুয়ার খুলবে। এসব কাজে রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ দরকার।’

অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য দেন আর্ট বাংলা ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক হারুন অর রশীদ, শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান শিল্পী মোহাম্মদ ইউনুস।

২০১৬ সালে কার্জক্রম শুরু করে আর্ট বাংলা ফাউন্ডেশন। ২০২০ সালে নীলফামারীতে আয়োজিত তাদের একটি কর্মশালার তথ্যচিত্র বড় পর্দায় দেখানো হয়।

সভাপতির বক্তব্যে আসাদুজ্জামান নূর বলেন, ‘শিক্ষা ও সংস্কৃতির সমন্বয় ছাড়া আমরা অগ্রসর হতে পারব না। শিগগির বই পড়া, ছবি আঁকা, গান করার জন্য নম্বর যোগ করার ব্যবস্থা করতে হবে।’

কে এম খালেদ শিল্পীদের পরামর্শ ও সহযোগিতায় শিল্পের অগ্রগতিতে সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণের প্রতিশ্রুতি দেন।

প্রদর্শনীতে রয়েছে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন, আনোয়ারুল হক, কামরুল হাসান, সফিউদ্দীন আহমেদ, এস এম সুলতান, মোহাম্মদ কিবরিয়া, রশিদ চৌধুরী, আবদুর রাজ্জাক, মুর্তজা বশীর, কাইয়ুম চৌধুরী, কাজী আব্দুল বাসেত, সমরজিৎ রায়চৌধুরী, মুস্তাফা মনোয়ার, হাশেম খান, রফিকুন নবী, মনিরুল ইসলাম, মাহমুদুল হক, আবুল বার্‌ক্‌ আলভী, আব্দুল মান্নান, কালিদাস কর্মকার, আবদুস শাকুর শাহ, বীরেন সোম, স্বপন চৌধুরী, শহীদ কবির, কাজী গিয়াসউদ্দিন, মনসুর উল করিম, চন্দ্র শেখর দে, শাহাবুদ্দিন আহমেদ, অলকেশ ঘোষ, খাজা কাইয়ুম, নাজলী লায়লা মনসুর, ফরিদা জামান, নাইমা হক, নাসিম আহমেদ, খুরশীদ আলম, আলমগীর হক ও কামাল কবিরদের ছবি ও হামিদুজ্জামান খানের মার্বেলে তৈরি ভাস্কর্য।

লালমাটিয়ার এ ব্লকের ১০ নম্বর সড়কের ৭/৯ বাড়িতে ১ অক্টোবর পর্যন্ত চলবে এই প্রদর্শনী। প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত প্রদর্শনী ঘুরে দেখা যাবে।