গির্জা ও স্কুলের সামনে ময়লার ভাগাড় নির্মাণ বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন

মানববন্ধনে অংশ নেন খ্রিষ্টধর্মের অনুসারী, স্কুলের শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকেরাছবি: আয়োজকদের সৌজন্যে

রাজধানীর নয়ানগরে খ্রিষ্টানদের উপাসনালয় ও বিদ্যালয়ের সামনে (বিপরীত পাশে) অস্থায়ী ময়লার ভাগাড়ের নির্মাণকাজ বন্ধের দাবিতে প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ মঙ্গলবার নয়ানগরের ডি. মাজেনড গির্জা ও সেন্ট ইউজিন স্কুলের সামনে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।

প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধনে অংশ নেন খ্রিষ্টধর্মের অনুসারী, স্কুলের শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকেরা। তাঁদের দাবি, একটি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও স্কুলের সামনে ময়লার ভাগাড় নির্মাণ করা কোনোভাবেই উচিত নয়।

ময়লার ভাগাড় হলে দুর্গন্ধে গির্জায় প্রার্থনার জন্য আসা ভক্ত ও বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হবে। তাই তাঁরা দ্রুত ওই জায়গায় ময়লার ভাগাড় নির্মাণের কাজ বন্ধের দাবি জানিয়েছেন।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন ওই গির্জা ও স্কুলের ঠিক বিপরীত পাশে একটি সেকেন্ডারি ট্রান্সফার স্টেশন (এসটিএস) নির্মাণের কাজ করছে। অস্থায়ী ওই ময়লার ভাগাড়ে গৃহস্থালি থেকে ভ্যান সার্ভিসের মাধ্যমে সংগ্রহ করা বর্জ্য ল্যান্ডফিলে নেওয়ার আগে জমা করা হয়। আগে ওই এলাকায় এসটিএস ছিল নতুনবাজার বাসস্ট্যান্ডসংলগ্ন এলাকায়।

কর্মসূচিতে বাংলাদেশ খ্রিষ্টান অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নির্মল রোজারিও ময়লার ভাগাড় নির্মাণের তীব্র নিন্দা জানান। তিনি বলেন, একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং ধর্মীয় উপাসনালয়ের আশপাশে এ রকম ময়লা–আবর্জনা থাকলে খ্রিষ্টানদের আরাধনা ও শিক্ষার্থীদের শিক্ষায় ব্যাঘাত ঘটাবে। তিনি আরও বলেন, ‘কোমলমতি শিশুশিক্ষার্থীদের জন্য একটি সুন্দর পরিচ্ছন্ন পরিবেশ দেওয়া আমাদের জাতীয় ও নৈতিক দায়িত্ব। তাই এই ময়লার ডাস্টবিন বা ডিপো স্থাপন বন্ধ করার জন্য কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছি।’

স্কুলের সামনে ময়লার ভাগাড় নির্মাণ বন্ধে প্ল্যাকার্ড হাতে খুদে শিক্ষার্থীরা
ছবি: আয়োজকদের সৌজন্যে

নয়ানগর খ্রিষ্টান কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়নের সভাপতি রিচার্ড রিপন সরদার বলেন, বিশ্বের কোনো দেশেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও উপাসনালয়ের পাশে ময়লার ডিপো করা হয় না। যেখানে শত শত খ্রিষ্টভক্ত প্রার্থনায় মিলিত হন, সেখানে পরিবেশ হওয়া উচিত পরিচ্ছন্ন ও শান্তিপূর্ণ।

আদিবাসী যুব ফোরামের সহসভাপতি টনি চিরান বলেন, গির্জা ও স্কুলের পাশে ময়লার ডিপো স্থাপন হতাশাজনক। ধর্মীয় ও শিক্ষার পরিবেশ রক্ষায় এ স্থাপনা অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।

চার্চের পুরোহিত ফাদার সুবাস কস্তা ওএমআই ময়লার ভাগাড় স্থানান্তরে ঢাকা উত্তর সিটি কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন এবং দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান।

মানববন্ধনে অন্যদের মধ্যে চার্চের পুরোহিত ফাদার জনি ফিনি ওএমআই, সেন্ট ইউজিন স্কুলের প্রধান শিক্ষক ফাদার পিন্টু কস্তা ওএমআই, ঢাকা ক্রেডিট ইউনিয়ন স্কুলের প্রধান শিক্ষক রতন পিটার গমেজ, ঢাকাস্থ ত্রিপুরা সমবায় সমিতির সভাপতি ক্লেমেন্ট ত্রিপুরা, কারিতাস বাংলাদেশের প্রতিনিধি মার্টিন রোনাল্ড প্রামানিক, বারিধারা সোসাইটির প্রতিনিধি সাইফুর রহমান, আদিবাসী জাতীয়তাবাদী দলের সদস্যসচিব শিশির দিও প্রমুখ বক্তব্য দেন।