নাইকো দুর্নীতি মামলা: এফবিআই ও কানাডার রয়্যাল মাউন্টেড পুলিশের তিনজনকে সাক্ষ্য দেওয়ার অনুমতি
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে করা নাইকো দুর্নীতি মামলায় যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থার (এফবিআই) এক কর্মকর্তা ও কানাডার রয়্যাল মাউন্টেড পুলিশের দুই কর্মকর্তাকে সাক্ষ্য দেওয়ার অনুমতি দিয়েছেন আদালত।
ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৯-এর বিচারক শেখ হাফিজুর রহমান আজ রোববার এ আদেশ দেন।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী খুরশিদ আলম খান প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ১২ সেপ্টেম্বর নাইকো দুর্নীতি মামলায় এফবিআইয়ের এক কর্মকর্তা ও কানাডার রয়্যাল মাউন্টেড পুলিশের দুই কর্মকর্তাকে সাক্ষ্য দেওয়ার অনুমতি চেয়ে আদালতের কাছে আবেদন করে দুদক। আদালত সেই আবেদন আজ মঞ্জুর করেছেন। ফলে এ মামলায় তিন বিদেশি নাগরিক আদালতে সাক্ষ্য দেবেন।
আগামী ১৯ অক্টোবর মামলার পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য করেছেন আদালত।
এর আগে ১২ সেপ্টেম্বর নাইকো দুর্নীতি মামলার বাদী দুদকের সাবেক সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ মাহবুবুল আলমের জবানবন্দি রেকর্ড শেষ হয়।
খালেদা জিয়ার আইনজীবী সৈয়দ জয়নুল আবেদীন মেজবাহ প্রথম আলোকে বলেন, নাইকো দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে তিন বিদেশি নাগরিককে সাক্ষ্য দেওয়ার অনুমতি দিয়েছেন আদালত। এ মামলায় বাদীকে জেরা চলছে।
কানাডার কোম্পানি নাইকোর সঙ্গে অস্বচ্ছ চুক্তির মাধ্যমে রাষ্ট্রের বিপুল আর্থিক ক্ষতিসাধন ও দুর্নীতির অভিযোগে ২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর খালেদা জিয়াসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলাটি করে দুদক। দুদকের তৎকালীন সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ মাহবুবুল আলম বাদী হয়ে রাজধানীর তেজগাঁও থানায় মামলা করেন। ২০০৮ সালের ৫ মে এ মামলায় খালেদা জিয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় দুদক।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, ক্ষমতার অপব্যবহার করে তিনটি গ্যাসক্ষেত্র পরিত্যক্ত দেখিয়ে নাইকোর হাতে তুলে দেওয়ার মাধ্যমে আসামিরা রাষ্ট্রের প্রায় ১৩ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকার ক্ষতি করেছেন।
নাইকো দুর্নীতি মামলায় গত ১৯ মার্চ অভিযোগ গঠন করেন আদালত। খালেদা জিয়া এরই মধ্যে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত হয়েছেন। ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় তাঁর পাঁচ বছরের কারাদণ্ড হয়। একই বছরের ২৯ অক্টোবর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় তাঁকে সাত বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। দুই মামলায় দণ্ডিত হয়ে তিনি ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে প্রায় দুই বছর কারাগারে ছিলেন।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার দণ্ড স্থগিত করে দুটি শর্তে সরকারের নির্বাহী আদেশে তাঁকে মুক্তি দেওয়া হয় ২০২০ সালের ২৫ মার্চ। তখন করোনা মহামারির মধ্যে তাঁর পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তাঁকে ছয় মাসের জন্য মুক্তি দেওয়া হয়। এর পর থেকে পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ছয় মাস অন্তর তাঁর মুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হচ্ছে।