নগরে ভাগাড়ে পোড়ানো হয় ময়লা, আপনার বিপদ যেভাবে বাড়ে
৬ এপ্রিল। সকাল সকাল আমিনবাজারে গিয়ে দেখা গেল, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ময়লার ভাগাড়ের অন্তত ২০টি জায়গায় আগুন জ্বলছে। ধোঁয়া উড়ে যাচ্ছে আকাশে।
এটা নিত্যদিনের চিত্র। আমিনবাজার ল্যান্ডফিলে (ভাগাড়) নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এক আনসার সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বললেন, ‘ময়লার দায়িত্বে যারা আছে, তারাই আগুন ধরাইয়া দেয়। একেক দিন একেক দিকে আগুন লাগায়।’
আমিনবাজারের ভাগাড়ের মতো মাতুয়াইলের ভাগাড়েও একই দিন গিয়ে একই চিত্র দেখা গেছে। এই দুই ভাগাড় ছাড়াও গত দুই দিনে ঢাকার কয়েকটি জায়গা এবং ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে ময়লা পোড়াতে দেখা গেছে।
‘বর্জ্য ব্যবস্থাপনা যদি কার্যকরভাবে করা না যায়, তাহলে ঢাকাবাসীকে বায়ুদূষণের হাত থেকে রক্ষা করা কঠিন হবে। এ ক্ষেত্রে সরকারি সংস্থাগুলোর আরও বেশি দায়িত্বশীল হওয়া উচিত। আমরা খুব শিগগির বর্জ্য পোড়ানোর বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করব।’
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি এবং ভাগাড়ে কাজ করা কর্মীরা বলছেন, ময়লা পোড়ানো হয় পরিমাণ কমাতে। প্লাস্টিকজাতীয় আবর্জনা পুড়ে ছাই হয়ে যায়। ফলে স্তূপ ছোট হয়। অন্যদিকে শহরের ভেতরের আর্বজনা সংগ্রহ করে দূরে নিয়ে ফেলার ঝামেলা এড়াতে পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা তা পুড়িয়ে দেন বলে অভিযোগ রয়েছে। যদিও সিটি করপোরেশনের দাবি, ময়লা পোড়ানো হয় না। ভাগাড়ে মিথেন গ্যাসের কারণে আগুন জ্বলে ওঠে।
ময়লা বা বর্জ্য পোড়ার কারণে ঢাকার দূষিত বায়ু আরও দূষিত হচ্ছে। সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ারের ‘বৈশ্বিক বায়ুমান প্রতিবেদন ২০২৪’ অনুযায়ী বায়ুদূষণে ২০২৪ সালে দেশ হিসেবে দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল বাংলাদেশ। আর নগর হিসেবে বিশ্বের তৃতীয় শীর্ষ অবস্থানে ছিল ঢাকা। ২০২৪ সালের নভেম্বরে প্রকাশিত বিশ্বব্যাংকের ‘ক্লিয়ারিং দ্য এয়ার: অ্যাড্রেসিং বাংলাদেশ’স এয়ার পলিউশন ক্রাইসিস’ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকার বায়ুদূষণে উন্মুক্ত স্থানে বর্জ্য পোড়ানোর অবদান ১১ শতাংশ।
বছরের পর বছর ধরে এভাবে ময়লা পোড়ানো চললেও তা বন্ধে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এবং পরিবেশ অধিদপ্তরের তেমন কোনো উদ্যোগ ছিল না। গত শনিবার মাতুয়াইলের ল্যান্ডফিল পরিদর্শনে গিয়ে পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বর্জ্য না পোড়ানোর নির্দেশনা দেন। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, মাতুয়াইল স্যানিটারি ল্যান্ডফিলসহ কোনো জায়গাতেই কোনোভাবেই ময়লা পোড়ানো যাবে না।
অবশ্য উপদেষ্টার নির্দেশনার পরও পরিস্থিতি আগের মতোই রয়েছে। জানতে চাইলে উপদেষ্টা সোমবার প্রথম আলোকে বলেন, ‘বর্জ্য ব্যবস্থাপনা যদি কার্যকরভাবে করা না যায়, তাহলে ঢাকাবাসীকে বায়ুদূষণের হাত থেকে রক্ষা করা কঠিন হবে। এ ক্ষেত্রে সরকারি সংস্থাগুলোর আরও বেশি দায়িত্বশীল হওয়া উচিত। আমরা খুব শিগগির বর্জ্য পোড়ানোর বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করব।’
সরেজমিন আমিনবাজার ও মাতুয়াইল
রোববার সকাল সাতটা ও সোমবার সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে আমিনবাজারের ভাগাড়ে গিয়ে আগুন জ্বলতে দেখা গেছে। রোববার আমিনবাজার গিয়ে ভাগাড়ের ভেতরে ঢুকতে চাইলে বাধা দেন আনসার সদস্যরা। তাঁরা বলেন, উত্তর সিটি করপোরেশনের অনুমতি ছাড়া ঢোকা যাবে না।
অবশ্য বাইরে থেকেই দেখা যাচ্ছিল, ধোঁয়ার কুণ্ডলী আকাশে উড়ে যাচ্ছে। কিছু কিছু জায়গায় আগুনের দূর থেকেই দৃষ্টিগোচর হচ্ছিল। আরও দেখা যাচ্ছিল যে কিছু লোক আগুনের মধ্যে পলিথিনজাতীয় আবর্জনা ফেলছিলেন, যাতে সেগুলো পুড়ে যায়।
আমিনবাজার ভাগাড়টির আয়তন প্রায় ৫২ একর। বর্তমানে সেখানে জমানো বর্জ্যের স্তূপের উচ্চতা প্রায় ৯০ ফুট
ভাগাড়টিতে ট্রাক প্রবেশের হিসাব রাখছিলেন মাসুম শেখ নামের এক ব্যক্তি। প্রতিদিন কত ট্রাক প্রবেশ করে, কেন আগুন দেওয়া হয়—এসব বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অনুমতি ছাড়া কথা বলা যাবে না।
উত্তর সিটি সূত্র জানায়, আমিনবাজার ভাগাড়টির আয়তন প্রায় ৫২ একর। বর্তমানে সেখানে জমানো বর্জ্যের স্তূপের উচ্চতা প্রায় ৯০ ফুট।
আমিনবাজারের ভাগাড়ের বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের একটি প্রকল্প নিয়ে বহু বছর ধরে আলোচনা হচ্ছে। তবে ২০২৩ সালের অক্টোবরে প্রকল্পটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদে (একনেক) প্রকল্পটি অনুমোদন পায়। প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ২৭২ কোটি টাকা। ২০২৩ সালের নভেম্বরে উত্তর সিটির তৎকালীন মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেছিলেন, ২০২৬ সালের মধ্যে এ প্রকল্প থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হবে।
অবশ্য খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাজ এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে রয়ে গেছে। প্রকল্পের পরিচালক উত্তর সিটির তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী এস এম শফিকুর রহমান সোমবার মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, চুক্তিবদ্ধ চীনা প্রতিষ্ঠান এখন প্রকল্পের ভবন নির্মাণের পাইলিংয়ের কাজ করছে। রাস্তার কাজ শিগগিরই শুরু হবে। প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৭ সালের জুলাই পর্যন্ত বলেও জানান তিনি।
সাভার থেকে আমিনবাজারের দিকে আসার পথে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের পাশে দেখা গেল, কয়েকটি জায়গায় ময়লার স্তূপে আগুন জ্বলছে। যেমন সালেহপুর ব্রিজসংলগ্ন এলাকায় আরিচামুখী লেনের পাশে ও বলিয়ারপুর সেতুর পাশে তিনটি স্থানে ফেলে রাখা হয়েছে নানা ধরনের বর্জ্য। তাতে আগুন জ্বলছিল।
বলিয়ারপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালক নান্নু মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘সারা দিনই ভ্যানে কইরা এলাকার (মহাসড়ক সংলগ্ন আশপাশের এলাকা) ময়লা, আবর্জনা সড়কের পাশে রাখে। তারাই আগুন ধরাইয়া দেয়।’
রাজধানীর ডেমরার মাতুয়াইল এলাকায় গিয়ে রোববার দুপুরে দেখা যায়, পুড়তে থাকা বর্জ্য থেকে সৃষ্ট ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়ছে আশপাশের এলাকায়। তাতে স্থানীয় বাসিন্দাদের শ্বাস নেওয়াই কষ্ট।
ভাগাড়টির পাশেই মৃধা বাড়ি। এই বাসিন্দারা জানান, তাঁরা পবিত্র ঈদুল ফিতরের আগে ধোঁয়া বন্ধের দাবিতে আন্দোলন করেছিলেন, সড়ক অবরোধ করেছিলেন।
আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন মো. আলী (৬০)। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, বিষাক্ত ধোঁয়ার কারণে শ্বাস নেওয়া যায় না। জানালা খুললেই ধোঁয়া ঢোকে। তাই সারা দিন দরজা-জানালা বন্ধ রাখতে হয়। আন্দোলন করলেও ময়লা পোড়ানো বন্ধ হচ্ছে না।
ময়লা পোড়ানোর বিষয়টি অস্বীকার করেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এয়ার কমোডর মো. মাহাবুবুর রহমান তালুকদার এবং উত্তর সিটির প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কমোডর এ বি এম সামসুল আলম।
‘সিটি করপোরেশনের লোকজন ময়লা নিয়া আহে আর আগুন ধরাইয়া দেয়। সকালে রিকশা নিয়ে বাইর হইলে এসব ময়লার আগুন দেহি সবহানে।’
মাহাবুবুর রহমান তালুকদার প্রথম আলোকে বলেন, ‘আগুন আমরা লাগাই না। সূর্যের তাপের কারণে মিথেন গ্যাস থেকে এ আগুনটা লাগে। এবং এটা ছড়িয়ে পড়ে।’ তিনি বলেন, বর্জ্যের স্তূপের ওপর তাঁরা মাটির প্রলেপ দেবেন। খাল খনন থেকে মাটি আনার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। পাশাপাশি পানি ছিটানো হচ্ছে। আগামী সাত-আট দিন পরে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
উত্তর সিটির প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এ বি এম সামসুল আলমের দাবি, বর্জ্য পুড়িয়ে ফেলার জন্য আগুন যাতে কেউ না দেয়, সেটা তাঁরা নিশ্চিত করেছেন।
অবশ্য ভাগাড়ের আশপাশের বাসিন্দারা মানতে নারাজ যে শুধু মিথেন গ্যাসের কারণে আগুন লাগে। মাতুয়াইলের মৃধা বাড়ির বাসিন্দা মো. আলী বলছিলেন, দুর্ঘটনাবশত আগুন লাগলে সেটা কয়েকটা জায়গায় হতে পারে বা কয়েক দিন লাগতে পারে। প্রতিটি দিন কীভাবে আগুন লাগে, তা-ও প্রায় ল্যান্ডফিলজুড়ে।
স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তির দাবি, রাতের বেলা আগুন দেওয়া হয়, যাতে কেউ বুঝতে না পারে।
ঢাকার ভেতরে সকালে রাস্তা ঝাড়ু দেওয়ার পর আবর্জনার স্তূপ তৈরির পর তাতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। এ অভিযোগ সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। পাশাপাশি স্থানীয় দোকানদার, কাঁচাবাজারের পরিচ্ছন্নতাকর্মী, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা বর্জ্য পুড়িয়ে দেন।
রাজধানীর ফার্মগেটের পূর্ব তেজতুরী বাজার, কারওয়ান বাজার, এফডিসি মোড়, মগবাজার, হলিক্রস কলেজ, সেন্ট জন ভিয়ানি হসপিটাল ও ইন্দিরা রোড এলাকার রাস্তার পাশে মঙ্গলবার সকালে উন্মুক্ত স্থানে ময়লা পোড়াতে দেখা যায়। এফডিসি মোড় এলাকায় পুড়তে থাকা ময়লার স্তূপের কাছে যাত্রীর জন্য অপেক্ষারত ছিলেন রিকশাচালক মজনু মিয়া। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘সিটি করপোরেশনের লোকজন ময়লা নিয়া আহে আর আগুন ধরাইয়া দেয়। সকালে রিকশা নিয়ে বাইর হইলে এসব ময়লার আগুন দেহি সবহানে।’
২০২১ সালের মার্চে রাজধানীর উন্মুক্ত স্থানে বর্জ্য পোড়ানো নিয়ে একটি গবেষণা চালায় স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটির পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের অধীন বায়ুদূষণ গবেষণাকেন্দ্র (ক্যাপস)। এতে ঢাকার ২৩টি জায়গায় বেশি ময়লা পোড়ানোর তথ্য উঠে এসেছিল।
ক্যাপসের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আহমেদ কামরুজ্জামান মজুমদার প্রথম আলোকে বলেন, শহরের ভেতরে এখনো ময়লা পোড়ানো চলে। পবিত্র রমজান মাসেও হাতিরঝিল, ধানমন্ডি লেক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা ও হাইকোর্টের আশপাশে ময়লা পোড়াতে তিনি দেখেছেন। ভাগাড়ে ময়লা পোড়ানোর বিষয়ে তিনি বলেন, দুই ভাগাড়ে বর্জ্য ধারণক্ষমতা অনেক আগে শেষ হয়ে গেছে। এরপর থেকে বর্জ্য পোড়ানো শুরু হয়।
ময়লা পোড়ালে কী হয়
বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণ বিধিমালা-২০২২-এর ধারা ১২ অনুযায়ী বর্জ্যে বা তার কোনো অংশ যত্রতত্র খোলা অবস্থায় সংরক্ষণ বা পোড়ানো নিষেধ। বিধিমালায় বলা আছে, রাস্তা, সড়ক, মহাসড়কের পাশে কোনো অবস্থায় বর্জ্য পোড়ানো যাবে না। এটি ভঙ্গ করলে দুই বছরের কারাদণ্ড বা দুই লাখ টাকা অর্থদণ্ডের বিধান রয়েছে।
বায়ুমান গবেষকেরা বলছেন, সড়কে পড়ে থাকা ময়লার বড় অংশ থাকে প্লাস্টিক, যা পোড়ানোর কারণে ডাই-অক্সিন, ফুরান, মার্কারি, পলিক্লোরিনেটেড বাই ফিনাইলের মতো বিষাক্ত উপাদান বাতাসে যুক্ত হয়। বর্জ্য পোড়ানোর কারণে কার্বন ডাই-অক্সাইড, কার্বন মনোক্সাইড, সালফার ডাই-অক্সাইডসহ অন্তত ছয়টি বিষাক্ত গ্যাস তৈরি হয়।
বিষাক্ত এসব গ্যাস বায়ুতে মিশে মানুষের বিভিন্ন শ্বাসতান্ত্রিক রোগ তৈরি করে বলে জানান বাংলাদেশ লাং ফাউন্ডেশনের যুগ্ম সম্পাদক ও বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞ কাজী সাইফুদ্দিন বেননূর। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিষাক্ত গ্যাস শ্বাসতন্ত্রের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। আমরা যে অক্সিজেনটা নিই, সেটা বাধাগ্রস্ত হয়। কার্বন মনোক্সাইড রক্তে প্রবেশ করে হিমোগ্লোবিনে অক্সিজেন পরিবহনে বাধা দিয়ে কিডনি, লিভার ও ব্রেন ক্ষতিগ্রস্ত করে।’ তিনি বলেন, বস্তুকণা ফুসফুসে জমা হয়ে নিমোকোনোওসিস নামের একটা রোগ তৈরি করে। ফলে পুরো ফুসফুস শুকিয়ে যায়। তখন আইএলডি (ইন্টারসটিশিয়াল লাং ডিজিজ) সৃষ্টি হয়।
বিশ্বব্যাংকের ২০২২ সালের ‘ব্রিদিং হেভি: নিউ এভিডেন্স অন এয়ার পলিউশন অ্যান্ড হেলথ ইন বাংলাদেশ’ নামক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৯ সালে দেশে ৭৮ হাজার ১৪৫ থেকে ৮৮ হাজার ২২৯ জন মানুষের মৃত্যুর কারণ বায়ুদূষণ।
টাকা খরচ, দূষণ কমে না
পরিবেশ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, বায়ুদূষণ রোধে সরকার ২০০০ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত দুটি প্রকল্পে অন্তত সাড়ে ছয় কোটি মার্কিন ডলার ব্যয় করেছে, যা বর্তমানে প্রায় ৭২০ কোটি টাকার সমান। এর বাইরে ছোট ছোট কিছু প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে। এ ছাড়া ২ হাজার ৭০০ কোটি টাকা ব্যয়ে আরও একটি প্রকল্প চলমান আছে।
বিপুল ব্যয় হলেও ঢাকা দূষিত শহরের তালিকায় শীর্ষস্থানেই থাকছে, নগরের মানুষ ভুগছেন বায়ুদূষণে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী আরমানুল হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা সব সময় শুনি বাইরের দেশ থেকে দূষিত বায়ু আমাদের দেশে আসে। কিন্তু প্রশ্ন হলো, আমাদের যে দেশীয় বায়ুদূষণের উৎস; যেমন পুরোনো গাড়ি, ইটভাটা, নির্মাণকাজ, কয়লাবিদ্যুৎকেন্দ্র—এসব উৎস বন্ধে সরকার কী পদক্ষেপ নিয়েছে?’