পুলিশের লাঠিপেটায় শাহবাগ থেকে সরল অবরোধকারীরা, যান চলাচল শুরু

শাহবাগ মোড় অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন একদল চাকরিপ্রত্যাশী
ছবি: সাজিদ হোসেন

সরকারিসহ সব ধরনের চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ বছর করা, অবসরের বয়সসীমা বাড়ানোসহ চার দফা দাবিতে আজ শনিবার সাড়ে ৬ ঘণ্টা রাজধানীর শাহবাগ মোড় অবরোধ করে রেখেছিলেন একদল চাকরিপ্রত্যাশী। এর ফলে ওই মোড় দিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। এর প্রভাব পড়ে শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়কে। তৈরি হয় তীব্র যানজটের। পরে রাত সাড়ে আটটার দিকে পুলিশ লাঠিপেটা করে তাদের সরিয়ে দিলে যান চলাচল শুরু হয়।

চাকরিপ্রত্যাশীদের অন্য দুটি দাবি হলো চাকরির আবেদন ফি সর্বোচ্চ ২০০ টাকা করা এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতিবিজড়িত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদে বঙ্গবন্ধুর নামে বঙ্গবন্ধু ল কমপ্লেক্স (বঙ্গবন্ধু চেয়ার এবং একটি ম্যুরাল) স্থাপন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আজ দুপুরে শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে জড়ো হন চাকরিপ্রত্যাশীরা। এরপর চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ প্রত্যাশী শিক্ষার্থী সমন্বয় পরিষদের ব্যানারে তাঁরা মিছিল বের করেন। মিছিলটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের সামনের সড়ক ঘুরে শাহবাগ মোড়ে যায়। বেলা দুইটার দিকে তাঁরা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। অবরোধের কারণে শাহবাগ মোড় দিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে তীব্র যানজট তৈরি হয়। অবরোধকে কেন্দ্র করে শাহবাগ এলাকায় মোতায়েন করা বিপুলসংখ্যক পুলিশ। পরে রাত সাড়ে আটটার দিকে পুলিশ লাঠিপেটা করে তাদের সরিয়ে দিলে যান চলাচল শুরু হয়।

এই কর্মসূচির নেতৃত্বে ছিলেন সমন্বয় পরিষদের আহ্বায়ক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদ শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শরিফুল হাসান।

মোড় থেকে অবরোধকারীদের সরাতে পুলিশের অবস্থান
ছবি: সংগৃহীত

বিক্ষোভে সমন্বয় পরিষদের নেতা মোহাম্মদ রাসেল, সানোয়ারুল হক, খোকন মিয়া প্রমুখ শাহবাগ মোড় অবরোধ করে চলা বিক্ষোভে বক্তব্য দেন। তাঁদের ভাষ্য, বিশ্বের ১৬২টি দেশে চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ থেকে ৫৯ বছর পর্যন্ত; অর্থাৎ বয়স নয়, যোগ্যতাই একজন প্রার্থীর একমাত্র মাপকাঠি৷ বাংলাদেশ এ ক্ষেত্রে পাকিস্তানকে অনুসরণ করে বয়সসীমা ৩০ বছর করে রেখেছে। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে হলে চাকরির বয়স ৩০ বছরে সীমাবদ্ধ রাখা যাবে না৷

বয়স বাড়ানোর বিষয়টি ২০১৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে ছিল বলে বক্তারা উল্লেখ করেন। এ বিষয়ে তাঁরা ভাষ্য, যাঁরা নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়ন কমিটিতে ছিলেন, তাঁরা প্রধানমন্ত্রীকে বিষয়টি অবগত করতে পারেননি৷ কিন্তু তরুণসমাজ দমে যায়নি।

নাম না প্রকাশ করার শর্তে ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা জোনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা শনিবার রাতে প্রথম আলোকে বলেন, ‘ছয় ঘণ্টা ধরে রাস্তা অবরোধ করে রেখেছিল। এতে নগরের বিভিন্ন স্থানে যানজট বেড়ে যায়। এমন পরিস্থিতিতে সড়ক অবরোধকারীদের সরে যেতে বললেও তাঁরা রাজি ছিল না। পরে বাঁশি বাজিয়ে চলে যেতে বলা হয়। একপর্যায়ে অবরোধকারীরা রাস্তা ছেড়ে চলে গেছে।’