দীপু সানার মৃত্যু: নিরাপদ ও সুরক্ষিত ফুটপাত নিশ্চিত করা প্রশ্নে রুল

মাথায় ইট পড়ে মারা যাওয়া বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী পরিচালক দীপু সানাছবি: পরিবারের সৌজন্যে

রাজধানীর মৌচাক মার্কেটের কাছে ওপর থেকে মাথায় ইট পড়ে দীপু সানার মৃত্যুর প্রেক্ষাপটে ঢাকা শহরে নাগরিকদের জন্য নিরাপদ ও সুরক্ষিত ফুটপাত নিশ্চিতে ব্যর্থতা প্রশ্নে রুল দিয়েছেন হাইকোর্ট।

এক রিটে প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আতাবুল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ সোমবার এ রুল দেন।

খুলনার মেয়ে দীপু সানা বাংলাদেশ ব্যাংকের সদরঘাট শাখার সহকারী পরিচালক ছিলেন। ১০ জানুয়ারি বিকেলে কর্মস্থল থেকে অফিসের বাসে রওনা দিয়ে সন্ধ্যায় শান্তিনগরে নামেন তিনি। এরপর হেঁটে মগবাজারের গাবতলার বাসায় ফিরছিলেন। সন্ধ্যায় মৌচাক মার্কেট–সংলগ্ন ফখরুদ্দীন পার্টি সেন্টারের সামনে মাথায় ইট পড়ে মারা যান তিনি। এ নিয়ে গণমাধ্যমে আসা প্রতিবেদন যুক্ত করে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোস্তফা মোশাররফ হোসেন গত সপ্তাহে রিটটি করেন।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ ছফওয়ান করিম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায় ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সেলিম আযাদ।

‘নির্মাণাধীন ভবনের ইট পড়ে ব্যাংক কর্মকর্তার মৃত্যু’ শিরোনামে গণমাধ্যমে আসা প্রতিবেদন শুনানিতে তুলে ধরেন আইনজীবী মোহাম্মদ ছফওয়ান করিম। তাঁকে আদালত বলেন, ওই ঘটনায় কোনো মামলা হয়েছে?

তখন ছফওয়ান করিম বলেন, অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে। জীবন ধারণের অধিকার নিয়ে রিটটি করা হয়েছে। সেখানে নির্মাণাধীন কোনো ভবন পাইনি। আশপাশে কোনো নির্মাণাধীন ভবনও নেই। লাখ লাখ মানুষ প্রতিদিন কর্মস্থলে যায়। সংবিধান বেঁচে থাকার অধিকার দিয়েছে। সাধারণ নাগরিকের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে যে ব্যর্থতা, সে আঙ্গিকে রুল চাওয়া হয়েছে। কেউ বলতে পারছে না, কীভাবে ইট এসেছে। তাই তদন্তের জন্য উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করতে নির্দেশনা দেওয়ার আরজি জানান তিনি।

শুনানি নিয়ে একপর্যায়ে আদালত বলেন, এখন না (উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন), অপমৃত্যুর মামলার তদন্ত চলছে। তদন্ত চলুক। প্রার্থনার প্রথম অংশ নিয়ে শুধু রুল দেওয়া হলো।

পরে আইনজীবী মোহাম্মদ ছফওয়ান করিম প্রথম আলোকে বলেন, ইট পড়ে দীপু সানার মৃত্যুর মতো ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা শহরে নাগরিকদের জন্য নিরাপদ ও সুরক্ষিত ফুটপাত নিশ্চিতে বিবাদীদের ব্যর্থতা কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না—সে বিষয়ে রুলে জানতে চাওয়া হয়েছে। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, রাজউক চেয়ারম্যান, ঢাকার জেলা প্রশাসকসহ বিবাদীদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।