নবযাত্রা প্রকল্পের শিখন কর্মশালা: অন্তর্ভুক্তিমূলক বাজারব্যবস্থা উন্নয়নে দারিদ্র্য কমে

নবযাত্রা প্রকল্পের কার্যক্রম নিয়ে এক শিখন কর্মশালায় বক্তারা
ছবি: সংগৃহীত

অতি দরিদ্র থেকে উত্তরণের জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক বাজারব্যবস্থা উন্নয়ন দরকার। এর পাশাপাশি দুর্যোগ ঝুঁকি প্রশমন, পানি-পয়নিষ্কাশন-স্বাস্থ্যবিধি (ওয়াশ) কার্যক্রমের প্রসারের ভূমিকা আছে। নবযাত্রা প্রকল্পের কার্যক্রমের ওপর গবেষণায় এ ফল পাওয়া গেছে। গতকাল সোমবার রাজধানীর একটি হোটেলে নবযাত্রা প্রকল্পের কার্যক্রম নিয়ে এক শিখন কর্মশালায় এ তথ্য দেওয়া হয়।

বাংলাদেশের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় এবং আন্তর্জাতিক বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ যৌথভাবে ইউএসএআইডির অর্থায়নে খুলনা ও সাতক্ষীরা জেলায় নবযাত্রা প্রকল্প পরিচালনা করছে।

কর্মশালায় বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের খুলনা ও সাতক্ষীরা জেলায় ২০১৫-২২ সাল পর্যন্ত বাস্তবায়িত নবযাত্রা প্রকল্পের আওতায় সমন্বিত উপায়ে অতিদরিদ্র থেকে উত্তরণের অভিজ্ঞতা ও অর্জিত নানা শিক্ষা তুলে ধরা হয়। দেখা গেছে, সমন্বিত কার্যক্রমে অংশগ্রহণকারীদের পুনরায় অতিদরিদ্র হওয়ার ঝুঁকি কমেছে ২০ শতাংশ হারে।

অন্যদিকে তাঁদের আয় কমে যাওয়ার সম্ভাবনাও কমেছে ১৯ শতাংশ হারে। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. কামরুল হাসান বলেন, উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষ নানা সমস্যায় জর্জরিত। নবযাত্রা প্রকল্পের আজকের এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এই সমস্যা জর্জরিত উপকূলীয় সমস্যাগ্রস্ত মানুষের সহায়তায় নতুন মাত্রা যোগ করবে।

তিনি বলেন, নবযাত্রা প্রকল্প বাংলাদেশের অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সহায়ক। আন্তুর্জাতিক স্থানীয় অংশীদারদের সঙ্গে নিয়েই দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় দারিদ্র্য বিমোচনে ও জলবায়ু ঝুঁকি মোকাবিলায় কাজ করে যাবে।

কর্মশালায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ইউএসএআইডি বাংলাদেশের কান্ট্রি লিড এলেন ডি. গুজম্যান  বলেন, ইউএসএআইডি বাংলাদেশে হতদরিদ্র মানুষের জেন্ডার-অন্তর্ভুক্তিমূলক ও সমতাভিত্তিক খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিতের মাধ্যমে অর্থনৈতিক ও জীবিকার উন্নয়নে বিনিয়োগ করছে। হতদরিদ্র মানুষকে অন্তর্ভুক্ত ও অংশগ্রহণমূলক বাজারব্যবস্থা এবং বেসরকারি নানা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সংযুক্ত করে দিতে পারলে তাদের উন্নয়ন টেকসই হবে। সরকারি ও বেসরকারি বহুমুখী কার্যক্রমের মাধ্যমে অতিদরিদ্র মানুষের উন্নয়ন সম্ভব।

ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশের ন্যাশনাল ডিরেক্টর সুরেশ বার্টলেট বলেন, নবযাত্রা প্রকল্পের আওতাধীন ভিএসএলএয়ের অনেক নারী সদস্য আছেন, যাঁরা কখনো বাড়ির বাইরে যাননি বা অনেকের খুব অল্প বয়সে বিয়ে হয়েছে। তাঁরা আজ পরিবারের জন্য সঞ্চয় করছে। তাঁরা তাঁদের সন্তানদের লেখাপড়া করাচ্ছেন। এটিই পরিবর্তন। ওয়ার্ল্ড ভিশন এই পরিবর্তনই দেখতে চায়।

অনুষ্ঠানে ক্রোনিক অ্যাডভাইসরি নেটওয়ার্কের সহকারী পরিচালক বিদ্যা দিবাকর এবং নবযাত্রা প্রকল্পের যোগাযোগ বিভাগের ম্যানেজার মেহজাবিন রুপা গবেষণার ফলাফল উপস্থাপন করেন।

শিখন কর্মশালার আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের পলিসি সাপোর্ট উইংয়ের পরিচালক ইমাম আবু সাঈদ, ব্র্যাক ব্যাংকের এসএমই শাখার  প্রধান পরিচালক, সৈয়দ আবদুল মোমেন, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ও উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের রিসার্চ ফেলো রোহিনি কামাল প্রমুখ।