মিরপুরে অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তার ‘আত্মহত্যা’

রাজধানীর মিরপুরের ডিওএইচএস এলাকায় মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান নামের একজন অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আত্মহত্যা করেছেন। পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, গতকাল রোববার নিজ বাসায় ফ্যানের সঙ্গে ঝুঁলে তিনি আত্মহত্যা করেন। হাবিবুর রহমানের এক ছেলে জানিয়েছেন, একটি প্রতারক চক্রের ফাঁদে পড়ে গত তিন বছরে ৮ কোটি টাকার সম্পদ হারিয়েছেন তাঁর বাবা। চক্রের সদস্যরা আরও টাকা দাবি করেছিলেন। সেই টাকা দিতে না পেরে তিনি আত্মহত্যা করেন।

পুলিশ বলছে, হাবিবুর রহমানের আত্মহত্যার ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে। তদন্ত করে তাঁর আত্মহত্যার কারণ বের করার চেষ্টা চলছে।

পারিবারিক একটি সূত্র জানায়, ২০১৪ সালে হাবিবুর রহমান অবসরে যান। তাঁর দুই ছেলে বিদেশে পড়াশোনা করেন। মিরপুর ডিওএইচএস এলাকায় তাঁর একটি বাড়ি রয়েছে। সেখানে স্ত্রীকে নিয়ে থাকতেন।

বাবার আত্মহত্যার খবর পেয়ে হাবিবুর রহমানের ছোট ছেলে সৈয়দ মোহাম্মত নাজমুল হাবিব ফেসবুকে লিখেছেন, তাঁর বাবা প্রতারক চক্রের ফাঁদে পড়ে প্রায় ৮ কোটি টাকার সম্পদ বিক্রি করে দিয়েছেন। এই চক্রের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরাও জড়িত বলে তিনি দাবি করেন।

পরে কানাডাপ্রবাসী নাজমুল হাবিবের সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রথম আলো। তিনি আজ প্রথম আলোকে বলেন, ২০২১ সালে এই প্রতারক চক্রের খপ্পরে পড়েন তাঁর বাবা। পরে তিনি সম্পদ বিক্রি করে প্রায় ৮ কোটি টাকা প্রতারক চক্রের হাতে তুলে দেন।

নাজমুল হাবিব বলেন, ‘আমি বিষয়টি জানার পর থেকেই পুলিশের কাছে অভিযোগ করতে বলেছিলাম। কিন্তু বাবা বলেছিলেন পুলিশকে জানালে তিনি আত্মহত্যা করবেন। আর মা ও বড় ভাই মানসম্মানের ভয়ে বিষয়টি কাউকে জানাননি।’

হাবিবুর রহমান ডায়রিতে অনেক কিছু লিখে গেছেন জানিয়ে নাজমুল হাবিব বলেন, ‘আমি চাই আমার বাবার আত্মহত্যার পেছনে জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হোক।’

হাবিবুর রহমানকে আজ বনানীর সামরিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। মিরপুর ডিওএইচএসের বাসায় গিয়ে হাবিবুরের বড় ছেলে নাঈম রহমানের সঙ্গে কথা হয়। ছোট ভাইয়ের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

এ বিষয়ে পল্লবী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অপূর্ব হাসান প্রথম আলোকে বলেন, হাবিবুর রহমানের আত্মহত্যার ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।