মাইক স্টিকার চামচ নিয়ে বের হয়েছেন অর্ধেক মশকনিধনকর্মী
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ২৯ নম্বর ওয়ার্ড। ওই ওয়ার্ডে মশকনিধনকর্মী রয়েছেন মোট ১৩ জন। তবে অসুস্থতার কারণে দুজন কাজে যাননি।
বাকি যে ১১ জন মশককর্মী কাজে গেছেন, তাঁদের মধ্যে পাঁচজনের কাছেই মশকনিধনের ওষুধ ও সেই ওষুধ ছিটানোর যন্ত্র বা স্প্রে মেশিন ছিল না।
আজ মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকার ঢাকা উত্তর সিটির ২৯ নম্বর ওয়ার্ডে মশকনিধন কার্যক্রম সরেজমিনে গিয়ে এমন চিত্র দেখা গেছে। ওষুধ ও ছিটানোর যন্ত্র ছাড়া কাজে বেরোনো কর্মীদের কারও হাতে মাইক, প্রচারপত্র, স্টিকার ও পানি তোলার চামচ দেখা গেছে।
২৯ নম্বর ওয়ার্ডের মশকনিধন কার্যক্রমের সুপারভাইজার আনোয়ার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, এডিস মশকনিধন কার্যক্রমের পাশাপাশি সচেতনতামূলক প্রচার চালানো হচ্ছে। তাই সব মশকনিধনকর্মী ওষুধ ও যন্ত্র নিয়ে কাজে বের হননি। কেউ কেউ মাইকিং, প্রচারপত্র বিতরণ এবং সচেতনতার কাজ করছেন। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ থেকে এমন নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
সকাল সাড়ে ৯টার দিকে মোহাম্মদপুরের তাজমহল রোড এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, এলাকার ২৩ নম্বর সড়কে একসঙ্গে ৮ জন মশককর্মী ছিলেন। তাঁদের সঙ্গে বিএনসিসির তিনজন সদস্যদেরও প্রচারের কাজ করতে দেখা যায়। কর্মীরা বলেন, সকালে তাঁরা দুটি দলে ভাগ হয়ে কাজ শুরু করেছিলেন। সোয়া ৯টার দিকে তাঁরা একত্র হন।
দুই দলের মধ্যে একটিতে আবদুল হাই, আল আমিন, আবদুর রশিদ ও সাকিব হোসেন ছিলেন। তাঁদের মধ্যে আবদুল হাইয়ের হাতে শুধু হাতমাইক এবং সাকিব হোসেনের হাতে শুধু লার্ভা তোলার চামচ ছিল। বাকি দুজন আল আমিন ও আবদুর রশিদের কাছে ছিল মশার ওষুধ ও ছিটানোর যন্ত্র। চারজনের এই দল তাজমহল রোড এলাকার ২০, ২৩, ৩২ ও ৩৩ নম্বর সড়কে মশকনিধনের কাজ করেছেন বলেও জানান।
একইভাবে আরেকটি দলে থাকা ইকবাল হোসেন, ইব্রাহিম খলিল, সিদ্দিকুর রহমান ও মো. আতিক উল্লাহর মধ্যে মাত্র দুজনের হাতে ওষুধ ও যন্ত্র ছিল। বাকি দুজন মশকনিধনকর্মীরা হাতে শুধু ডেঙ্গু সচেতনতামূলক স্টিকার ও প্রচারপত্র নিয়ে তাঁদের সঙ্গে ঘুরছিলেন।
তাঁরা কোন কোন এলাকায় কাজ করেছেন জানতে চাইলে দলের সদস্যরা প্রথমে দাবি করেন, তাজমহল সড়কের ১১, ১২, ১৫, ১৬ ও ১৭ নম্বর সড়কে ওষুধ ছিটানোর কাজ করেছেন। এত কম সময়ে এতগুলো সড়কে কীভাবে কাজ করা সম্ভব হলো জানতে চাইলে এবং পরবর্তী সময়ে ওই সব এলাকার বাসিন্দাদের কাছে জানতে চাওয়া হবে বললে মশকনিধনকর্মীরা বলেন, তাঁরা ১১, ১২ ও ১৫ নম্বর সড়কে কাজ শেষ করেছেন। বাকি সময়ে ১৬ ও ১৭ নম্বর সড়কে যাবেন।
ওয়ার্ডটির আরেকটি দলে ছিলেন সিরাজুল ইসলাম, রিয়াজ ও সাকিল। ওই দলেও মাত্র দুজন কর্মীর হাতে ওষুধ ও যন্ত্র ছিল। একজন কর্মী স্টিকার ও প্রচারপত্র নিয়ে ঘুরে বেরিয়েছেন। তাঁরা তাজমহল সড়ক এলাকার ২, ৪, ৭, ৮, ১০ ও ১৩ নম্বর সড়কে ওষুধ ছিটানোর কাজ করেছেন বলে জানা যায়।
মশক সুপারভাইজারের দাবি অনুযায়ী ওষুধ ও ছিটানোর যন্ত্র ছাড়াই শুধু প্রচারপত্র বা মাইক নিয়ে কাজে বের হওয়ার নির্দেশনা আছে কি না, এ বিষয়ে ঢাকা উত্তর সিটির স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তাদের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল। ঢাকা উত্তর সিটির উপপ্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কর্নেল গোলাম মোস্তফা সারোয়ার প্রথম আলোকে বলেন, প্রত্যেক মশককর্মীকেই ওষুধ ও ছিটানোর যন্ত্র নিয়ে কাজে যেতে হবে। ওষুধ ও যন্ত্র ছাড়া কাজে যাওয়ার কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি।
লেফটেন্যান্ট কর্নেল গোলাম মোস্তফা সারোয়ার আরও বলেন, নালার ভেতরে কোথাও পানি জমে থাকতে দেখলে সেটি টেনে আনা যায়, এমন কাটা নিয়ে তাঁদের বের হতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।