আসামিদের গ্রেপ্তার করছে না পুলিশ, অভিযোগ পরিবারের

কড়াইল বস্তিতে আল আমিন সরকারকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় আসামিদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে ক্র্যাব কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন করেন স্বজন ও স্থানীয় ব্যক্তিরা
ছবি: প্রথম আলো

রাজধানীর বনানীর কড়াইল বস্তিতে আল আমিন সরকারকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের পুলিশ গ্রেপ্তার করছে না বলে অভিযোগ করেছে তাঁর পরিবার।

বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ক্র্যাব) কার্যালয়ে আজ রোববার দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে এ অভিযোগ করে পরিবারটি। সংবাদ সম্মেলন শেষে আসামিদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে ক্র্যাব কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন করেন পরিবারের সদস্যরা।

সংবাদ সম্মেলনে আল আমিনের স্ত্রী রিতা আক্তার বলেন, গত বুধবার রাতে কড়াইল বস্তি এলাকায় মসজিদের ভেতরে ঢুকে প্রকাশ্যে আল আমিনকে কুপিয়ে হত্যা করেছেন খুনিরা। তাঁরা প্রথমে আল আমিনের হাত বিচ্ছিন্ন করে ফেলেন। তারপরও ক্ষান্ত হননি। আল আমিনকে বাঁচাতে এলে তাঁর ভাই নাসির সরকারকেও কুপিয়ে গুরুতর আহত করা হয়। তিনি এখন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

রিতা আক্তার বলেন, প্রকাশ্যে এমন খুনের ঘটনা ঘটলেও আসামিদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না। এমন পরিস্থিতিতে খুনিদের ভয়ে আতঙ্কে দিন পার করছেন তাঁরা। আল আমিন রাজনীতি করতেন না। তবে আল আমিনের ভাইয়েরা রাজনীতি করেন। ভাইদের সঙ্গে বিরোধের জেরেই তাঁকে খুন করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে আল আমিনের মা হোসপিয়ারা বেগম, শ্বশুর আবদুস সামাদ, শাশুড়ি জামেনা বেগম, বড় বোন হালিমা আক্তার ও ভগ্নিপতি দোফায়ের আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।

অভিযোগের বিষয়ে বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে আযম মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্য আসামিদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। এখন আল আমিনের পরিবার এমন অভিযোগ করলে বলার কিছু নেই।

পুলিশ জানায়, বুধবার রাতে কড়াইল বস্তিতে আওয়ামী লীগের কমিটি গঠন নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষ হয়। এ সময় আল আমিনকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। তাঁকে বাঁচাতে এগিয়ে এলে হামলায় তিন নারীসহ ছয়জন আহত হন। আর মসজিদের ভেতরে কোপানো হয় আল আমিনের ভাই নাসিরকে।

আল আমিনের ভাই জুয়েল অভিযোগ করেন, ‘ঘটনার দিন সকালে কড়াইলের এরশাদ স্কুল মাঠে চাচাতো ভাই জসিম উদ্দিনের ছেলে নিহাদ সরকারকে মারধর করেন স্থানীয় নুর আলমের ছেলে তুষার। এ ঘটনার প্রতিবাদ করায় নুর আলম আমাকে হুমকি দেন। পরে নুর আলমের নেতৃত্বে মোহাম্মদ আলী, মো. খাজাসহ ২২ জন দুই ভাইয়ের ওপর হামলা করেন।’

পুলিশ জানায়, সম্প্রতি ঢাকা মহানগর উত্তরের ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের ১ নম্বর ইউনিট আওয়ামী লীগের কমিটি গঠন হয়। এতে পদ পাওয়া না পাওয়া নিয়ে দুই পক্ষের বিরোধ চলে আসছিল। এর জের ধরে ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মফিজুর রহমান ও ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি কাদের খানের সমর্থকেরা সংঘর্ষে জড়ান। নিহত আল আমিন ওয়ার্ড কাউন্সিলর মফিজুর রহমানের সমর্থক ছিলেন।

স্থানীয় ব্যক্তিরা বলছেন, আওয়ামী লীগের কমিটিকে কেন্দ্র করে হামলার ঘটনা ঘটলেও এর পেছনে রয়েছে এলাকার নিয়ন্ত্রণ। আল আমিন ও তাঁর ভাই কাউন্সিলর মফিজুর রহমানের অনুসারী। আর হামলাকারীরা আজাদ নামের আরেকজনের অনুসারী। আজাদ কাদের খানের সমর্থক। গত কাউন্সিলর নির্বাচনে আজাদ মফিজুর রহমানের কাছে হেরে যান।