সালাম মুর্শেদীর বিরুদ্ধে বাড়ি দখলে রাখার অভিযোগ নিয়ে রিটের ওপর রায় পেছাল

হাইকোর্টফাইল ছবি

সংসদ সদস্য আবদুস সালাম মুর্শেদীর বিরুদ্ধে গুলশান–২ নম্বরে অবস্থিত বাড়িটি দখলে রাখার অভিযোগ নিয়ে করা রিটের ওপর রায় ঘোষণা পিছিয়েছে। রিট আবেদনকারীর পক্ষে সময়ের আরজির পরিপ্রেক্ষিতে রোববার বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী ইবাদত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ বিষয়টি দুই দিনের জন্য মুলতবি করেন।

এ–সংক্রান্ত রুলের ওপর শুনানি নিয়ে ৩ মার্চ হাইকোর্ট রায়ের জন্য ১০ মার্চ দিন ধার্য করেন। এর ধারাবাহিকতায় রোববার বিষয়টি কার্যতালিকায় ওঠে। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সাইফুদ্দিন খালেদ। সালাম মুর্শেদীর পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মোহাম্মদ সাঈদ আহমেদ।

পরে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সাইফুদ্দিন খালেদ প্রথম আলোকে বলেন, রিট আবেদনকারীর পক্ষ থেকে দুই দিন সময় চাওয়া হয়। আদালত দুই দিনের (রোব ও সোমবার) জন্য বিষয়টি মুলতবি রেখেছেন। মঙ্গলবার বিষয়টি রায়ের জন্য কার্যতালিকায় আসবে।  

আবদুস সালাম মুর্শেদী সংসদ সদস্য, ব্যবসায়ী ও সাবেক ফুটবলার। রাজধানীর গুলশান-২-এ অবস্থিত পরিত্যক্ত সম্পত্তির ‘খ’ তালিকাভুক্ত বাড়িটি দখলে রাখার অভিযোগ তুলে অনুসন্ধানের নির্দেশনা চেয়ে ২০২২ সালের ৩০ অক্টোবর রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দ সায়েদুল হক (বর্তমানে সংসদ সদস্য)। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২০২২ সালের ১ নভেম্বর হাইকোর্ট রুল দিয়ে বাড়ি-সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় নথিপত্র হলফনামা আকারে দাখিল করতে নির্দেশ দেন। রুলে বাড়িটি বেআইনিভাবে দখলে রাখার অভিযোগে আবদুস সালাম মুর্শেদীর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নিতে নিষ্ক্রিয়তা কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়।

এরপর রাজউক নথি দাখিল করে। পরে বাড়ি নিয়ে অভিযোগ অনুসন্ধান করে প্রতিবেদন দিতে দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) নির্দেশ দেওয়া হয়। গত ১৭ জানুয়ারি হাইকোর্ট এক আদেশে প্রশ্ন ওঠা ওই ভূমি বা প্লটের চেইন অব টাইটেল (মালিকানা হস্তান্তরের পরম্পরা), দখল-সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় নথি ও কাগজপত্র যুক্ত করে পক্ষগুলোকে হলফনামা (অ্যাফিডেভিট ইন অপজিশন) দাখিল করতে নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে অনুসন্ধান প্রতিবেদনসহ প্রয়োজনীয় নথি ও কাগজপত্র যুক্ত করে দুদককে ৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে হলফনামা দাখিল করতে নির্দেশ দেওয়া হয়।

গত ৮ ফেব্রুয়ারি শুনানিতে দুদকের আইনজীবী আদালতকে জানান, আদালতের নির্দেশের পর বাড়িটি নিয়ে দুদক অনুসন্ধান করে। অনুসন্ধানে বাড়িটির বিষয়ে জাল–জালিয়াতি ও প্রতারণার অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হয়। মৌখিক ও দালিলিক সাক্ষীর ভিত্তিতে দুর্নীতি দমন কমিশন সর্বসম্মতিতে সিদ্ধান্ত নিয়ে যাঁদের বিরুদ্ধে প্রাথমিকভাবে অভিযোগ পেয়েছে, তাঁদের বিরুদ্ধে গত ৫ ফেব্রুয়ারি মামলা করেছে। তদন্ত শুরু হয়েছে।

আগের ধারাবাহিকতায় ১৪ ফেব্রুয়ারি ওই বাড়িটির (ভূমি বা প্লটের মালিকানা হস্তান্তর) পরম্পরার তথ্য আদালতে তুলে ধরেন দুদকের আইনজীবী। গত ২৯ ফেব্রুয়ারি বিষয়টি শুনানির জন্য ওঠে। সেদিন পক্ষগুলোর সময়ের আরজির পরিপ্রেক্ষিতে আদালত এ-সংক্রান্ত রুল শুনানির জন্য ৩ মার্চ দিন নির্ধারণ করেন। সেদিন রুলের ওপর শুনানি হয়।