আমদানির পণ্য খালাসের জটিলতা কাটেনি এখনো

শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে কার্গো ভিলেজে ১৮ অক্টোবর আগুন লেগেছিল, ৩৭ ঘণ্টার চেষ্টায় তা নেভানো হয়ফাইল ছবি: প্রথম আলো

অগ্নিকাণ্ডের পর সপ্তাহ গড়ালেও ঢাকা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে পণ্য খালাসের জটিলতা কাটেনি। ব্যবসায়ীরা বলছেন, আমদানি করা পণ্য এখনো রাখা হচ্ছে খোলা স্থানে, আর একটিমাত্র গেট সচল থাকায় পণ্যজট লেগে যাচ্ছে।

১৮ অক্টোবর শনিবার আগুন লাগে দেশের প্রধান বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজ কমপ্লেক্সে। প্রায় ২৭ ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। এক সপ্তাহ পর আজ শনিবারও কার্গো ভিলেজের কার্যক্রম পুরোদমে চলতে দেখা যায়নি।

আমদানি কুরিয়ার সার্ভিস পুরোপুরি বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়ার কথা জানিয়েছেন আমদানিকারক ব্যবসায়ীরা। তাঁরা বলেন, অগ্নিকাণ্ডের পর থেকে কার্গো ভিলেজের ভেতরে পণ্য খালাসের কাজ প্রায় বন্ধ। আমদানিকারক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মালামাল এখন হ্যাঙ্গার গেটের পাশে খোলা আকাশের নিচে রাখা হচ্ছে। এতে পণ্য নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। আবার মেডিকেল ও কেমিক্যাল পণ্য একসঙ্গে, অরক্ষিতভাবে রাখায় পণ্যের গুণগত মানেরও ক্ষতি হওয়ার ঝুঁকি দেখা দিচ্ছে।

হা-মীম গ্রুপের মহাব্যবস্থাপক রুহুল আমিন সিদ্দিকী প্রথম আলোকে বলেন, পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে আমদানি কুরিয়ার সার্ভিস। এতে আমদানিকারকেরা ক্ষতির মুখে পড়েছেন। কার্গো ভিলেজ সচল না হলে পণ্য খালাসের জট আরও বাড়বে।

একাধিক ব্যবসায়ী প্রথম আলোকে বলেন, একটি গেট দিয়ে এখন পণ্য খালাস হচ্ছে। শুল্ক পরিশোধের পর পণ্য দ্রুত খালাস হলেও গাড়ি অভাবে পণ্য বের করে আনা যাচ্ছে না।

আরও পড়ুন
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী আজ শনিবার শাহজালাল বিমানবন্দরে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত কার্গো ভিলেজ পরিদর্শনে যান
ছবি: পিআইডি

ঢাকা কাস্টমস হাউস সূত্র জানায়, জরুরি ও পচনশীল পণ্য দ্রুত খালাসের জন্য তারা ২৪ ঘণ্টা কাজ করছে। তাদের দাবি, মেডিকেল পণ্য বা পচনশীল পণ্যগুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ছাড় করা হচ্ছে।

তবে পণ্যজট এড়াতে অতিরিক্ত গেট চালু করা প্রয়োজন বলে স্বীকার করেছেন ঢাকা কাস্টমস হাউসের কর্মকর্তারা। তাঁরা বলছেন, আগে চারটি গেট দিয়ে খালাসের কাজ চললেও এখন কেবল একটি গেট চালু থাকায় পুরো প্রক্রিয়া ধীরগতিতে চলছে। এতে আমদানি কার্যক্রমে মারাত্মক ব্যাঘাত ঘটছে।

আগুনে মূল ক্ষতি হয় আমদানির কার্গো কমপ্লেক্সে, যেখানে আমদানি করা পণ্য রাখা হয়ে থাকে। শুল্কায়নের পর পণ্য ছাড় হয় সেখান থেকে। পণ্য রপ্তানিকারকদের সমিতি ইএবির সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম দাবি করছেন, কার্গো ভিলেজের আগুনে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ১২ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। তবে ক্ষয়ক্ষতির সরকারি হিসাব এখনো পাওয়া যায়নি।

আরও পড়ুন

এই অগ্নিকাণ্ডের পর বিমানবন্দরের অগ্নিনিরাপত্তা খতিয়ে দেখার দাবি জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। আজ শনিবার বিমানবন্দর পরিদর্শনে গিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, কার্গো ভিলেজে কোনো অব্যবস্থাপনা ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখতে যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, চীন ও তুরস্কের বিশেষজ্ঞদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।

আরও পড়ুন