পাঠ কার্যক্রমে বই পড়ার সংস্কৃতি বাড়বে

বিশেষ পাঠ কার্যক্রমে তিন শতাধিক শিক্ষার্থী পড়েছে ‘১৫ আগস্ট হত্যাকাণ্ড: প্রবাসে বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যার দুঃসহ দিন’ শিরোনামের বইটি।

জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত বিশেষ পাঠ কার্যক্রমের অনুষ্ঠান শেষে অতিথিদের সঙ্গে বিজয়ী পাঠকেরা। গতকাল দুপুরে রাজধানীর গুলিস্তানে জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রে
ছবি: সংগৃহীত

শিক্ষার্থীরা বই পড়ায় আনন্দ পেলে তাদের মধ্যে অপরাধপ্রবণতা বাড়বে না। মুঠোফোনের আসক্তিও কমবে। তাই বইপড়া আন্দোলন ছড়িয়ে দিতে প্রয়োজন নিয়মিত পাঠ কার্যক্রম। এ জন্য সারা দেশের সব বেসরকারি পাঠাগারকেও এ উদ্যোগে যুক্ত করতে হবে।

জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত বিশেষ পাঠ কার্যক্রমের সনদ ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে আলোচকদের বক্তব্যে উঠে আসে এসব কথা। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র আয়োজিত অনুষ্ঠানে গতকাল বুধবার সকালে সেরা ২০ জন পাঠকের হাতে তুলে দেওয়া হয় সনদ ও পুরস্কার।

স্বাগত বক্তব্য দিতে গিয়ে জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের পরিচালক মিনার মনসুর বলেন, ‘পাঠ কার্যক্রমের ফলে বই পড়ার সংস্কৃতি বাড়বে, অপসংস্কৃতির রাজনীতি নিয়ে সচেতনতা তৈরি হবে এবং সামনে আসবে ভালো প্রকাশনা।’

এবারের বিশেষ পাঠ কার্যক্রমে তিন শতাধিক শিক্ষার্থী পড়েছে ‘১৫ আগস্ট হত্যাকাণ্ড: প্রবাসে বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যার দুঃসহ দিন’ শিরোনামের একটি বই। বইটি প্রকাশ করেছে প্রথমা প্রকাশন। অষ্টম শ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৬০ জনকে প্রাথমিকভাবে নির্বাচনের পর তাদের মধ্য থেকে বিজয়ী ২০ জনকে দেওয়া হয় পুরস্কার। ঢাকা মহানগর ও এর আশপাশের জেলার ২০টি পাঠাগারের মাধ্যমে এই শিক্ষার্থীদের যুক্ত করা হয় পাঠ কার্যক্রমে।

প্রধান অতিথি সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ তাঁর বক্তব্যে জানান, ‘বঙ্গবন্ধু হত্যার ষড়যন্ত্রকারীদের খুঁজতে কমিশন গঠন করা হচ্ছে। বাংলাদেশের ভবিষ্যৎকে বদলে দিতে যে নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছিল, তার সঙ্গে জড়িতদের বিষয়ে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে জানানোর উদ্দেশ্যেও গঠন হচ্ছে এই কমিশন।’

এর আগে বই সম্পর্কে কথা বলেন লেখক সরাফ আহমেদ। ‘১৫ আগস্ট হত্যাকাণ্ড: প্রবাসে বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যার দুঃসহ দিন’ বই নিয়ে তিনি বলেন, ‘পরিবারের সব মানুষকে হারানোর পর বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানার দিন বেলজিয়াম, জার্মানি, ভারত ও ব্রিটেনে কীভাবে কেটেছিল, সেই দুঃসহ স্মৃতির কথা আছে বইয়ে।’

অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্যে সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব গোলাম কুদ্দুছ পাঠ কার্যক্রম সারা দেশে বিস্তৃত করার ওপর গুরুত্ব দিয়ে বলেন, সম্মিলিত প্রচেষ্টার মধ্য দিয়েই মুক্তিযুদ্ধের প্রচেষ্টাকে সামনে আনতে হবে।

বেসরকারি গ্রন্থাগারের প্রতিনিধি হিসেবে বক্তব্য দেন মো. শাহ নেওয়াজ। পাঠক প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন সীমান্ত পাঠাগারের প্রতিনিধি কাশফিয়া বিনতে সোহা। অনুষ্ঠান শেষে বিজয়ী পাঠকেরা উঠে আসেন একসঙ্গে মঞ্চে ছবি তুলতে।

এ সময় লেখকের কাছ থেকে অভিজ্ঞতার কথা শুনতে চায় এই খুদে পাঠকেরা। নির্বাচন পর্যায়ে বই পাঠের পর ৪ মিনিট করে বইটি নিয়ে তাদের অনুভূতি প্রকাশ করতে বলা হয়েছিল। অনুষ্ঠানের শুরুতে পরিবেশিত হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।