ঢাবিতে ‘সেকেন্ড টাইম’ চেয়ে আন্দোলনকারী দুই কলেজশিক্ষার্থী গ্রেপ্তার

আলভী মাহমুদ ও মোহাম্মদ সানি
ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষার বিধান (সেকেন্ড টাইম) পুনর্বহালের দাবিতে আন্দোলনকারী দুই কলেজশিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

গত বছরের অক্টোবরে ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে ছাত্রলীগের দুই নেতার করা মামলায় এ দুই কলেজশিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠায় শাহবাগ থানা-পুলিশ। আলোচনার নাম করে থানায় ডেকে নিয়ে আলভী মাহমুদ ও মোহাম্মদ সানি নামের এ দুই শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে অভিযোগ বামপন্থী ছাত্রসংগঠনগুলোর।

২৩ জানুয়ারি ঢাবিতে ‘সেকেন্ড টাইমের’ দাবিতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচির ডাক দিয়েছিলেন একদল শিক্ষার্থী। সেখানে পুলিশ হামলা চালায় বলে অভিযোগ করেন শিক্ষার্থীরা। আলভী ও সানি আন্দোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন। হামলার প্রতিবাদে আজ রোববার বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করেছিলেন তাঁরা। কিন্তু এর আগেই গতকাল শনিবার দুপুরে থানায় ডেকে নিয়ে তাঁদের আটক করে পুলিশ। পরে পুরোনো একটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাঁদের কারাগারে পাঠানো হয়। আলভী ঢাকার নটর ডেম কলেজ আর সানি মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ছাত্র। তাঁরা দুজনই বামপন্থী ছাত্রসংগঠন গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের কর্মী।

শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূর মোহাম্মদ প্রথম আলোকে বলেন, গত বছরের অক্টোবরে প্রথমে রাজু ভাস্কর্যে ও পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে এক মারামারির ঘটনা ঘটেছিল। ওই ঘটনায় হওয়া মামলায় আলভী ও সানি নামের দুজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

গত বছরের ৭ অক্টোবর বিকেলে ‘আবরার ফাহাদ স্মৃতি সংসদ’-এর ব্যানারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে বুয়েট ছাত্র আবরার হত্যার তিন বছর পূর্তি উপলক্ষে স্মরণসভার আয়োজন করে ছাত্র অধিকার পরিষদ। সেখানে ছাত্রলীগ হামলা করে তাদের ধাওয়া দিয়ে ক্যাম্পাস থেকে বের করে দেয়। হামলায় পরিষদের অন্তত ১৫ নেতা-কর্মী আহত হন। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গেলে সেখানে গিয়েও তাঁদের পেটায় ছাত্রলীগ। বিকেলে হাসপাতাল থেকে পরিষদের বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মীকে আটক করে শাহবাগ থানার পুলিশ। সেই রাতে ছাত্রলীগের দুই নেতা বাদী হয়ে ছাত্র অধিকারের নেতা-কর্মীদের নামে মামলা করেন।

আরও পড়ুন

এদিকে গ্রেপ্তার আলভী ও সানির মুক্তি দাবি করেছে বামপন্থী ছাত্রসংগঠন গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিল। এক বিবৃতিতে সংগঠনের সভাপতি ছায়েদুল হক ও সাধারণ সম্পাদক ফাহিম আহমেদ চৌধুরী বলেছেন, সারা দেশে রাষ্ট্রীয় ফ্যাসিবাদের চূড়ান্ত প্রকাশ হলো এ ধরনের ঘটনা। আন্দোলন বানচাল করতে শিক্ষার্থীদের কোনো কারণ ছাড়াই গ্রেপ্তারের ঘটনা সব আইন ও নাগরিক অধিকারের পরিপন্থী। অবিলম্বে আটক দুই শিক্ষার্থীকে মুক্তি না দেওয়া হলে শিক্ষার্থীদের গণতান্ত্রিক আন্দোলন ও মতপ্রকাশের অধিকার রক্ষায় দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।

আরও পড়ুন