ঢাবি শিক্ষক সমিতিতে ১৪ পদে জিতল আ.লীগ, সহসভাপতি বিএনপির

নির্বাচন শেষে ফল ঘোষণা করেন শিক্ষক সমিতির নির্বাচন পরিচালক
ছবি: প্রথম আলো

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির ২০২৩ সালের কার্যকর পরিষদ নির্বাচনে ১৫টি পদের মধ্যে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ ১৪টিতে জিতেছেন আওয়ামী লীগপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন নীল দলের প্রার্থীরা। সভাপতি হয়েছেন মো. নিজামুল হক ভূইয়া, সাধারণ সম্পাদক জিনাত হুদা। শুধু সহসভাপতি পদে ৪৭ ভোটের ব্যবধানে নীল দলের প্রার্থীকে হারিয়ে জিতেছেন বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দলের আহ্বায়ক মো. লুৎফর রহমান।

আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে বেলা আড়াইটা পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাব ভবনে শিক্ষক সমিতির নির্বাচন হয়। ভোট গণনা শেষে বিকেল পাঁচটার দিকে ফল ঘোষণা করেন সমিতির নির্বাচন পরিচালক ও ফার্মাসি অনুষদের ডিন সীতেশ চন্দ্র বাছার।

নীল দলের প্যানেল থেকে ৮১৯ ভোট পেয়ে সমিতির সভাপতি পদে জিতেছেন পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক মো. নিজামুল হক ভূঁইয়া। তিনি সমিতির সর্বশেষ কমিটিতে ছিলেন সাধারণ সম্পাদক। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী সাদা দলের প্রার্থী পদার্থবিজ্ঞানের অধ্যাপক ও সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম পেয়েছেন ৩৮৪ ভোট। এ পদে নীল দলের ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী আ ক ম জামাল উদ্দীন পেয়েছেন ১৩২ ভোট।

সাধারণ সম্পাদক পদে ৭১২ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন নীল দলের নেত্রী ও সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক জিনাত হুদা। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী সাদা দলের প্রার্থী ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান খান পেয়েছেন ৫৮১ ভোট।

সহসভাপতি পদে ৬৭৯ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন সাদা দলের আহ্বায়ক ও পরিসংখ্যান বিভাগের অধ্যাপক মো. লুৎফর রহমান। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী নীল দলের প্রার্থী রোবোটিকস অ্যান্ড মেকাট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক লাফিফা জামাল পেয়েছেন ৬৩২ ভোট। অর্থাৎ লুৎফর ৪৭ ভোট বেশি পেয়ে জিতেছেন।

সমিতির যুগ্ম সম্পাদক পদে নীল দলের প্যানেল থেকে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক আবু খালেদ মো. খাদেমুল হক ৮৪৫ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী সাদা দলের প্রার্থী দেবাশীষ পাল পেয়েছেন ৩৬৬ ভোট।

কোষাধ্যক্ষ পদে নীল দলের প্যানেল থেকে ৮২৮ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক মো. মাসুদুর রহমান। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী সাদা দলের প্রার্থী ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউটের (আইবিএ) অধ্যাপক মো. মহিউদ্দিন পেয়েছেন ৪৬১ ভোট।

এ ছাড়া সমিতির ১০টি সদস্য পদেই জিতেছেন আওয়ামীপন্থী নীল দলের প্রার্থীরা। বিজয়ী প্রার্থীরা হলেন অপরাধবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মো. জিয়াউর রহমান (৮৮২ ভোট), টেলিভিশন, ফিল্ম অ্যান্ড ফটোগ্রাফি বিভাগের অধ্যাপক আবু জাফর মো. শফিউল আলম ভূঁইয়া (৮৪০ ভোট), ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক মো. আমজাদ আলী (৮২৮ ভোট), গণিত বিভাগের অধ্যাপক চন্দ্রনাথ পোদ্দার (৮০৩ ভোট), প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক শারমিন মূসা (৮০১ ভোট), রসায়ন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. কামরুল হাসান (৭৬৯ ভোট), জিন প্রকৌশল ও জীবপ্রযুক্তি বিভাগের অধ্যাপক শরীফ আখতারুজ্জামান (৭৬৩ ভোট), ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের অধ্যাপক কে এম সাইফুল ইসলাম খান (৭২৮ ভোট), ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের অধ্যাপক মো. মাকসুদুর রহমান (৭২৭ ভোট) এবং ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী আক্কাছ (৭০৮ ভোট)।

গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, প্রতিবছর শিক্ষক সমিতির ১৫টি পদে নির্বাচন হয়। আওয়ামী লীগ ক্ষমতাসীন হওয়ার পর গত এক যুগে সমিতিতে নীল দলের অবস্থান ক্রমাগত নিরঙ্কুশ হয়েছে। সর্বশেষ নির্বাচনেও ১৫ পদের ১৪টিতে জিতেছিল আওয়ামীপন্থী নীল দল। বরাবরের মতো এবারও সমিতির নির্বাচনে নীল ও সাদা দলের বাইরে অন্য কোনো প্যানেল ছিল না।