গরুর খামারের বর্জ্য খালে ফেলায় ৩ লাখ টাকা জরিমানা

রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকার রামচন্দ্রপুর খালের সামনে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলামছবি: সংগৃহীত

সরাসরি খালের পানিতে গরুর খামারের ময়লা-আবর্জনা ফেলায় মেঘডুবি অ্যাগ্রো ডেইরি ফার্ম নামের একটি গরু পালনের খামারের মালিকপক্ষকে তিন লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। আজ বুধবার ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলামের নির্দেশে ওই জরিমানা করা হয়।

ঢাকা উত্তর সিটির ওয়ার্ড পরিদর্শন ও বাসিন্দাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকায় ৩৩ ও ৩৪ নম্বর ওয়ার্ড পরিদর্শনে গিয়েছিলেন মেয়র আতিকুল ইসলাম। এ সময় মেয়র রামচন্দ্রপুর খালের সীমানা চিহ্নিত করে খুঁটি (পিলার) স্থাপন প্রকল্পের কাজ দেখতে যান।

পরিদর্শনে মেয়র দেখেন রামচন্দ্রপুর খালের পাড় ঘেঁষে একাধিক গরুর খামার গড়ে উঠেছে। আর খামারের বর্জ্য সরাসরি খালে অপসারণ করা হচ্ছে। এতে খালের গভীরতা কমে গেছে। অনেক জায়গায় খালের পানির প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

পরিস্থিতি দেখে মেয়র একাধিক খামারে গিয়ে মালিক ও কর্মীদের খালে বর্জ্য না ফেলতে হুঁশিয়ার করেন। একপর্যায়ে তিনি মেঘডুবি নামের খামারে গিয়ে দেখতে পান, খামারে যাবতীয় ময়লা-আবর্জনা নালার মাধ্যমে রামচন্দ্রপুর খালে ফেলে দিচ্ছেন কর্মীরা। ওই খামারে পরিবেশ অধিদপ্তরের কোনো ছাড়পত্রও ছিল না।

এ ছাড়া খালের একেবারে পাড় ঘেঁষে খামারটির গাভি পালনের ঘর। যা সিটি করপোরেশনের চিহ্নিত সীমানার খুঁটি ছাড়িয়ে প্রায় পাঁচ ফুট খালের ভেতরে তৈরি করা হয়েছে। এমন অবস্থা দেখে মেয়র প্রতিষ্ঠানটিকে জরিমানা করার নির্দেশ দেন। পরে ঢাকা উত্তর সিটি অঞ্চল-৫–এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোতাকাব্বীর আহমেদ খামারটিকে তিন লাখ টাকা জরিমানা করেন।

রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকার রামচন্দ্রপুর খালে বর্জ্য ফেলায় এই খামারের মালিকপক্ষকে তিন লাখ টাকা জরিমানা করেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম
ছবি: সংগৃহীত

পরে সাংবাদিকদের মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘খুবই দুঃখজনক যে রামচন্দ্রপুর খালটি গত বছর পরিষ্কার করে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু খালটি আবার গোবর্জ্য ও অন্যান্য বর্জ্য দিয়ে ভরাট হয়ে গেছে। খামারের মালিকদের এ বিষয়ে স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারা সতর্ক করেছেন। কিন্তু তাঁরা শোনেননি। তাই আজকে আমি নিজে আসছি।’

মেয়র আরও বলেন, খামারের মালিকেরা সীমানার খুঁটি ছাড়িয়ে খালের ভেতর স্থাপনা নির্মাণ করছেন। এগুলো আজকে ভেঙে দিতে চেয়েছিলেন। তাঁরা ১৫ দিনের সময় চেয়েছেন। এর পরে সীমানার খুঁটির বাইরে যদি কোনো স্থাপনা থাকে, তাহলে বুলডোজার দিয়ে ভেঙে দেওয়া হবে।

খামারি ও স্থানীয় বাসিন্দাদের হুঁশিয়ার করে তিনি বলেন, খালের মধ্যে কোনো বর্জ্য ফেলা যাবে না। খালের সীমানার খুঁটির ভেতরে কোনো স্থাপনা তৈরি করা যাবে না। আর খামারের মালিকদের আলোচনা করে বর্জ্য শোধনাগার নির্মাণ করতে হবে।

পরিদর্শনে ঢাকা উত্তর সিটির প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কমোডর এস এম শরিফ-উল ইসলাম, প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাহে আলম, ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আসিফ আহমেদ, ৩৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শেখ মোহাম্মদ হোসেন এবং সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর রোকসানা আলম উপস্থিত ছিলেন।