ঢাকায় ব্যবসা করতে হলে করপোরেশনের বাণিজ্যিক অনুমতি নিতেই হবে: মেয়র শেখ তাপস
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আওতাধীন এলাকায় ব্যবসা করতে হলে বাণিজ্যিক অনুমতি (ট্রেড লাইসেন্স) নিতেই হবে। এ ছাড়া কাউকে ব্যবসা করতে দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস।
রাজস্ব আদায়ের সার্বিক পর্যালোচনা সভা ‘রাজস্ব সম্মেলনে’ ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস এ মন্তব্য করেন। আজ মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান কার্যালয় নগর ভবনের মেয়র হানিফ অডিটরিয়ামে এ সম্মেলন হয়।
ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়র বলেন, ‘আমাদের রাজস্ব মেলাগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ ছাড়া রাজস্ব আদায়ে আমাদের অভিযানগুলো আরও কঠোর করতে হবে। ব্যক্তি বিশেষের প্রতিষ্ঠান, নামকরা মার্কেট বা গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা—যে-ই হোক না, কেউ যদি বাণিজ্যিক অনুমতি (ট্রেড লাইসেন্স) না করে তাদের ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকেন, তাহলে প্রয়োজনে সেসব স্থাপনা-মার্কেট সিলগালা করে দিতে হবে, ক্রোক করতে হবে। এ ধরনের কিছু উদাহরণ সৃষ্টির করা হলে বাকিরাও নড়েচড়ে বসবে। সে জন্য আমাদের আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তাদের আরও কঠোরতা প্রদর্শনের নির্দেশ দিচ্ছি। বাণিজ্যিক অনুমতি ছাড়া আমরা কাউকে ঢাকা শহরে ব্যবসা পরিচালনা করতে দেব না।’
কর–সংশ্লিষ্ট সেবার সঙ্গে জড়িত সবার আচরণগত পরিবর্তনের ওপর গুরুত্বারোপ করে মেয়র শেখ তাপস বলেন, ‘রাজস্ব আদায়ে একটি বড় বিষয় হলো আপনার আচরণ, আপনার ব্যবহার। এ ক্ষেত্রে আপনার দপ্তরে যাঁরা সেবাটা নিতে আসছেন, তাঁদের সঙ্গে ভালো আচরণ করবেন, সুন্দর ব্যবহার করবেন। সেবা নিতে এসে একজন ব্যক্তির যেন আপনার দপ্তরে তিনবার, চারবার আসা না লাগে। সেটা কাম্য নয়। যেদিন এসেছেন সেদিনই তাকে সেবাটা দেবেন।’
দক্ষিণ সিটির মেয়র বলেন, ‘প্রয়োজনে একটু বিলম্ব হলেও সেদিনই সেবাটা দেবেন। তাঁকে কালকে আসেন, পরশু আসেন, ৩ দিন পরে আসেন, ১০ দিন পরে আসেন—এসব বলা যাবে না। এত ওই ব্যক্তি কর দেওয়ার মানসিকতা হারিয়ে ফেলেন। আপনার আচরণগত কারণে বা তাঁকে যথাযথ সেবা দেওয়া থেকে বঞ্চিত করার কারণে একজন আগ্রহী করদাতাও করখেলাপি হয়ে যেতে পারেন। সুতরাং কোনো আগ্রহী করদাতাকে করখেলাপি বানাবেন না।’
এ সময় হয়রানি ছাড়া জনগণকে সেবা দিতে ব্যর্থ হলে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থায় কঠোরতা দেখানো হবে উল্লেখ করে মেয়র তাপস বলেন, ‘আমরা কিন্তু ঝুড়িতে একটাও পচা আম রাখতে চাই না। আপনারা জানেন যে আমরা পচা আম ফেলে দিচ্ছি এবং আরও পচা আম আমরা ফেলতে থাকব। এটা চলমান প্রক্রিয়া। আমার দাদি বলতেন, একটা ঝুড়িতে একটা পচা আম থাকলে বাকি আমগুলোতেও পচন ধরে। আমের ঝুড়ি থেকে প্রথমে আমগুলো নিয়ে নিচে রাখতে হয়। তারপর যেগুলো ভালো সেগুলোকে ঝুড়িতে রাখতে হয়।’
করপোরেশনের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা আরিফুল হক অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন। রাজস্ব সম্মেলনে করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও সচিব আকরামুজ্জামান, আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তাদের মধ্যে (অঞ্চল-১ ও ৭) মুহাম্মদ শফিকুল ইসলাম, (অঞ্চল ২ ও ৬) সোয়ে মেন জো, (অঞ্চল-৩) বাবর আলী মীর, (অঞ্চল ৪ ও ১০) মো. আতাহার মিয়া, (অঞ্চল ৫ ও ৯) মোহাম্মদ সাখাওয়াত হোসেন সরকার, (অঞ্চল-৮) মোহাম্মদ শফিউর রহমান প্রমুখ রাজস্ব আদায় বৃদ্ধিতে বিদ্যমান প্রতিকূলতা ও আগামী দিনের কর্মপরিকল্পনা নিয়ে নিজ নিজ মতামত ব্যক্ত করেন।